বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসা-৩

দেশে ফিরে ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমদ ও সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু, ১০ জানুয়ারি ১৯৭২
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ কমেট–ভারতীয় রাজহংস

বঙ্গবন্ধু অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের সঙ্গে কথা বলেন। কীভাবে তিনি দেশে ফিরবেন তা নিয়েও কথা হয়। তাঁরা ঢাকা থেকে লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর জন্য একটি বিমান পাঠানোর কথা বলেন। পরে দেখা যায়, ঢাকা থেকে বিমান পাঠাতে প্রায় দুই দিন লাগবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকে দেশে আসার সময় দিল্লিতে যাত্রাবিরতির অনুরোধ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে আনার জন্য বিশেষ বিমান পাঠানোর কথা জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্য রাষ্ট্রপতির বিশেষ বিমান ‘রাজহংস’ প্রস্তুত করেন। এদিকে অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী জর্জ হিথের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক হয়। এ সময় হিথ বঙ্গবন্ধুর জন্য ব্রিটিশ রাজকীয় কমেট বিমানের ব্যবস্থা করেন। তাই বঙ্গবন্ধু শেষ পর্যন্ত ৯ জানুয়ারি ব্রিটিশ সময় সকাল ৮টা ৪৮ মিনিটে ব্রিটিশ কমেট বিমানে দেশের পথে রওনা হন।

সাইপ্রাসে আড়াই ঘণ্টা

সাইপ্রাসে একটি ব্রিটিশ বিমান ঘাঁটি রয়েছে। জ্বালানি তেলের জন্য বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানকে সেখানে যাত্রাবিরতি করতে হয়। কমেটের যাত্রীরা জানতেন সাইপ্রাসে যাত্রাবিরতি হবে। কিন্তু সেখানে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবেন, সেটি কারও জানা ছিল না। সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট আর্চবিশপ ম্যাকারিওস তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান। বার্তায় তিনি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সরকারের সাফল্য কামনা করেন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তির জন্য অভিনন্দনও জানান। সেখানে প্রায় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট যাত্রাবিরতি শেষে দিল্লির উদ্দেশে আবার আকাশে ওড়ে বিমান।

দিল্লিতে বঙ্গবন্ধু

লন্ডনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু গভীর আবেগে বলেছিলেন, ‘আমি আর একমুহূর্ত এখানে থাকতে চাই না। আমি আমার জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই।’ ৯ জানুয়ারি ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে পৌনে ৯টায় দেশের উদ্দেশে রওনা হন। সেদিন ভারতের দুই কূটনীতিক—ভেদ মারওয়া ও শশাঙ্ক ব্যানার্জি ছিলেন তাঁর সফরসঙ্গী।

১০ জানুয়ারি। পালাম বিমানবন্দর। নয়াদিল্লির স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিট। বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ব্রিটিশ কমেট অবতরণ করে বিমানবন্দরে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাঁকে স্বাগত জানান। ভারতীয় সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সম্মানে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। লাখ লাখ জনতা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে এক অভূতপূর্ব সংবর্ধনা দেয়।

ভারতের ইতিহাসে কোনো বাঙালি নেতাকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে কয়েক লাখ সাধারণ মানুষের সংবর্ধনা প্রদান এক বিরল ঘটনা। বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনের দূরত্ব ১২ মাইল। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য রাস্তার দুই পাশে মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা ফুল দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বরণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জন্য দিল্লিতে এক সমাবেশ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু ভারতের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ভারতের রাজধানীতে যাত্রাবিরতি ছিল তাঁর জন্য এক পরম মুহূর্ত। কারণ, ভারতের জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সবচেয়ে বড় বন্ধু। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সম্পকে৴ বলেন, ‘তিনি কেবল মানুষের নন, মানবতার নেতা।’

দিল্লির ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার মানুষের কাছ থেকে যখন আমাকে ছিনিয়ে নেওয়া হলো, তাঁরা কাঁদছিলেন। আমি যখন কারাগারে, তাঁরা তখন চালিয়েছিল সংগ্রাম। আর আমি যখন ফিরছি, তখন তাঁরা বিজয়ী। কেননা, তাঁর এই জয়যাত্রা ছিল অন্ধকার থেকে আলোয়, বন্দিত্ব থেকে স্বাধীনতায়, নিরাশা থেকে আশায়।’

এ বিজয় সেদিনই পূর্ণতা পাবে

১৬ ডিসেম্বর। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রায় ৯৩ হাজার সদসে৵র নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ। পৃথিবীর বুকে জন্ম হলো বাংলাদেশ নামের একটি নতুন রাষ্ট্র। জন্ম হলো একটি লাল–সবুজের পতাকা। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির বিজয় দিবস। সেদিন থেকে কালের সাক্ষী হলো রেসকোর্স ময়দান। তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের মুহূর্তে তিনি বলেছিলেন, ‘এ বিজয় সেদিনই পূর্ণতা পাবে, যেদিন আমাদের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্ত স্বদেশে ফিরে আসবেন।’ ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ছিল সেই পূর্ণতার দিন।

এরপর শেষ হলো দীর্ঘ প্রতীক্ষার। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানটি দেখা যায় ঢাকার আকাশে। উদ্বেলিত হয়ে ওঠে জনসমুদ্র। সারা দেশে আনন্দের জোয়ার। জনতায় পূর্ণ ঢাকার রাজপথ। কেউ গেছেন বিমানবন্দরে, কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। কেউ ভাষণ শুনতে গেছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

উৎসবের আমেজ। গোটা বাঙালি জাতি রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিল কখন তাদের প্রিয় নেতা, স্বাধীন বাংলার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখবেন। পুরো দেশের মানুষ তাকিয়ে ছিল বিমানবন্দরের দিকে। আর বিমানবন্দর থেকে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত রাস্তায় নেমেছিল মানুষের ঢল।

হাজার বছরের ইতিহাসের এক দারুণ দুপুর

ভোরের রক্তিম সূর্য তখন মাথার ওপরে। বাংলাদেশে সে এক দারুণ দুপুর। হঠাৎ বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি দেখা যায় বাংলার আকাশে। সঙ্গে সঙ্গে জনতার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। মুহূর্মুহু করতালিতে মুখর চারদিক। আনন্দ ধ্বনিতে প্রকম্পিত তেজগাঁও এলাকা। রানওয়েতে অবতরণের আগে কয়েকবার আকাশে ঘোরে বিমানটি। বিপুল জনতা আনন্দ–উল্লাসে চিৎকার করতে থাকে। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এমন একটি দুপুর কি আর কোনো দিন এসেছিল। বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি স্পর্শ করল তেজগাঁও বিমানবন্দরের মাটি। তখন ১টা ৫১ মিনিটের দুপুর। খুলে যায় বিমানের দরজা। সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসেন ইতিহাসের মহানায়ক। রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু পদার্পণ করেন বাংলার মাটিতে। সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনি করে সম্মান জানানো হয় রাষ্ট্রপতিকে।

বঙ্গবন্ধুকে প্রথমে ফুলের মালা পরিয়ে দেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দীন আহমদ। সঙ্গে সঙ্গে জনতা সব বাধা উপেক্ষা করে ছুটে যায় বঙ্গবন্ধুর দিকে। হাত তুলে বঙ্গবন্ধু সবাইকে ভালোবাসা জানান। জনতা ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন। তেজগাঁও বিমানবন্দরে নেমে আসে জনতার ঢল। সেদিন এই জনতা কোনো নিয়মের মধ্যে থাকেনি। বঙ্গবন্ধুকে দেখার যে দুর্বার আবেগ তাতে কেউ বাধা দিতে পারেনি।

সেদিন বিদেশি কূটনীতিক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান মণি সিংহ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির বেগম মতিয়া চৌধুরী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন, বাংলাদেশ জাতীয় কংগ্রেস, ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের নেতারাসহ অসংখ্য মানুষ ফুল নিয়ে গিয়েছিলেন। সবাই ফুল ছুড়তে থাকেন। এ যেন বঙ্গবন্ধুর জন্য এক অনন্য পুষ্পবৃষ্টি।

এমন অবস্থায় কোনো রকমে বঙ্গবন্ধুকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য ও কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা করেন। এই ভিড়ের মধ্যে ন্যাপের নেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বঙ্গবন্ধুকে ফুলের মালা পরিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধুকে ডায়াসে নেওয়া হয়। ঠিক সেই সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর পিতার দেখা হয়। তিনি আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন পুত্রের জন্য।

রেসকোর্স ময়দানের পথে বঙ্গবন্ধু

কর্নেল এম এ জি ওসমানী বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মঞ্চে যান। বঙ্গবন্ধু সবাইকে অভিবাদন জানান। বিমানবন্দরের চারদিকে জনতার আনন্দ–উল্লাস। হাঁটার সুযোগ নেই। দাঁড়ানোর জায়গা নেই। এমন অবস্থায় কর্নেল ওসমানী, ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদসহ কয়েকজন বঙ্গবন্ধুকে একটি সুসজ্জিত খোলা গাড়িতে তোলেন। বেলা তখন আড়াইটা। চারদিকে পুষ্পবৃষ্টি। সুদৃশ্য তোরণ। বাংলাদেশের পতাকা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দিয়ে সজ্জিত রাজপথের দুই পাশ। রাস্তায় যেন তিলধারণের ঠাঁই নেই। সামনে-পেছনে নারী-পুরুষের ঢল। বাড়ির ছাদেও দাঁড়িয়ে আছে জনতা। এই জনসমুদ্রকে অভিবাদন জানিয়ে খুব ধীরে চলতে থাকে গাড়ি। তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান। এতটুকু পথ যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টারও বেশি। আকাশে তখন মিত্রবাহিনীর হেলিকপ্টার। সারা পথ অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর মিছিল।

বঙ্গবন্ধুর গাড়িটি রেসকোর্স ময়দানে আসে বিকেল পাঁচটার দিকে।

রেসকোর্স ময়দান

বঙ্গবন্ধুর গাড়িটি রেসকোর্স ময়দানে আসে। আর সঙ্গে সঙ্গে আবারও চারদিক করতালি ও জয়বাংলা স্লোগানে মুখর হয়। কানায়-কানায় পূর্ণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সেদিন ওই উদ্যানের কোনো সীমানা ছিল না। সত্যিকার অর্থে ১০ জানুয়ারি পেয়েছিল বিজয়ের পূর্ণতা। এখানে এসেই বঙ্গবন্ধু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ৯ মাস ধরে গণহত্যার কথা শুনে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের সাধ আজ পূর্ণ হয়েছে। আমার বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’

রবার্ট পেইন তাঁর ম্যাসাকার বইয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ জানুয়ারির জনসভার বিবরণ দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘গণহত্যার অবসান হয়েছিল, দখলদারের পরাজয় ঘটেছিল, শুরু হয়েছিল নতুন জীবন, উজ্জীবিত হচ্ছিল নতুন আশা। সেই রৌদ্রালোকিত দিনে দূরের এক শহরে রেসকোর্স ময়দানে মঞ্চে দাঁড়ানো এক ঋজু ব্যক্তি, দুনিয়ার নিপীড়িতজনের জন্য বয়ে এনেছিলেন আশা।’

বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে। কিন্তু তাঁর সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। ১২ জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। নতুন রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী।

টাইম ম্যাগাজিন ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারির সংখ্যায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে জানায়, গত অর্ধশতাব্দীতে মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জওহরলাল নেহরু প্রমুখ উপমহাদেশের ইতিহাসে ব্যাপক প্রভাব–সঞ্চারী নেতা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন; তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হলো আরেকটি নাম—শেখ মুজিবুর রহমান।

ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমি বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাব।’ কথা রেখে গেছেন জাতির পিতা। হিংস্র পাকিস্তানিরা যার গায়ে আঁচড় দিতে পারেনি, আর স্বাধীন দেশে ‘বাঙালি’ নামের কিছু বিশ্বাসঘাতকের হাতে তাঁকে জীবন দিতে হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শুধু একাই না পরিবারসহ ঘাতকের বুলেটে রক্ত দিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর কথা রেখে গেলেন।

জীবন্ত কিংবদন্তি

জীবন্ত কিংবদন্তি হয়ে বঙ্গবন্ধু থাকবেন চিরকাল। তিনি জাতির পিতা। বাঙালির মুক্তির দিশারি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। শহীদ হয়েও আছেন অমর হয়ে। অনন্তকাল ধরে থাকবেন সবার হৃদয়ে। শুধু তাদের হৃদয়ে নয়—যারা ভালোবাসতে পারেনি বাংলাদেশকে, যাদের হৃদয়ে এখনো ভাসে পাকিস্তানের পতাকা।

যত দিন সূর্য উঠবে, লোনা জলে সিক্ত হবে সাগর, রাতের আকাশে ফুটবে তারা, থাকবে মেঘের খেলা, বৃষ্টিতে নাচবে জল-তরঙ্গ, তত দিন তিনি থাকবেন কবির কবিতায়, শিল্পীর ক্যানভাসে, গায়কের কণ্ঠে, লেখকের লেখনীতে, স্থপতির ভাস্কর্যে, ভাটিয়ালির সুরে, আর ইতিহাসের পাতায়।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বনেতা। বিশ্বমানব। তাঁর জীবনে ঐশ্বর্য, বিলাসবহুল জীবন বলে কিছু ছিল না। সারা জীবন তাঁর কেটেছে সংগ্রামে সংগ্রামে। সংগ্রামই বঙ্গবন্ধুর ঐশ্বয৴।

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু যখন বলেন, ‘তোমাদের যা কিছু আছে তা–ই নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো।’ সত্যি সত্যি এ দেশের মানুষ তাঁর এক ডাকে যার যা ছিল, তা–ই নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঙালির হৃদয়ে চিরকাল কিংবদন্তি হয়েই থাকবেন তিনি।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন