আপনি কি সুখী মানুষ? মিলিয়ে নিন
যার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো, সে সবচেয়ে সুখী ব্যক্তি। দশকের পর দশক ধরে সুখ ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, মানুষ চাইলেই নিজের জীবনে আরও বেশি সুখ খুঁজে নিতে পারে। দুঃখকষ্টের কোনো জাদুকরী ওষুধ নেই। তবে কিছু মানসিক, আবেগময় ও শারীরিক অভ্যাস আমাদের জীবনে সুখের সম্ভাবনা বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
সুখী মানুষেরা যেসব কাজ করে না
• ব্যর্থতা বা অপ্রিয় ঘটনার মধ্যে আটকে থাকে না: বারবার নেতিবাচক চিন্তা করলে তা মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্কে ইতিবাচক ভাবনার জায়গা কমে আসে।
• অতিরিক্ত চাপ নেয় না: কোনো কিছু যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী না হয়, তবু সুখী মানুষেরা অতিরিক্ত চাপ নেয় না। তারা গভীর শ্বাস নেয়, পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং সামনে এগিয়ে যায়। কারণ, অতিরিক্ত চাপ বা দুশ্চিন্তা মস্তিষ্ককে সমাধান খুঁজতে বাধা দেয়।
• অন্যের সাফল্যে হিংসা বা ক্ষোভ পোষণ করে না: যদি ফেসবুক স্ক্রল করতে গিয়ে নিজের জীবনে হতাশ লাগে, তবে ফেসবুক ব্যবহার করা বন্ধ রাখতে পারেন। যদি বন্ধ করতে না পারেন, তাহলে কম অ্যাকটিভ থাকুন এবং অযথা অন্যদের সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না।
• দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না: সম্পর্ক, কাজ বা জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই আগে গভীরভাবে ভাবা জরুরি। তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল বিশ্বাস ও নেতিবাচক ধ্যানধারণা বেড়ে যায়। তাই সুখী মানুষেরা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকে।
• ছোট সমস্যাকে বড় করে দেখে না: সুখী মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এটি। ছোটখাটো ঝামেলাকে বড় করে তুললে কাজ আরও কঠিন হয়ে যায়, মনের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই স্বাভাবিকভাবে দেখতে হবে।
• পারফেক্ট জীবনের পেছনে সময় নষ্ট করে না: কারও জীবনই শতভাগ পারফেক্ট নয়। তাই সুখী মানুষেরা এটি ভেবে সময় নষ্ট করে না। যেসব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, সেগুলো নিয়ে না ভাবলেও চলে। আর যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলো নিয়ে কাজ করা যায়।
• শুধু নিজের সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকে না: যারা শুধু নিজের সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকে, তারা স্বার্থপর হয়। সুখী মানুষেরা স্বার্থপর হয় না। তাই তারা শুধু নিজের সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকে না, বরং অন্যদের সঙ্গে ইতিবাচক মেলামেশায় সময় কাটায়। বাইরের কাজে মনোযোগ দিলে নিজের ভেতরের জটিলতা কমে যায় এবং দৈনন্দিন জীবনে সুখ খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।
সুখী মানুষেরা যেসব কাজ অবশ্যই করে
• জীবনে যা ভালো হচ্ছে, সেটাতেই মনোযোগ দেয়: ইতিবাচক চিন্তা মনে প্রশান্তি আনে। এই মানুষেরা সবকিছুর মধ্যে ভালো দিক খোঁজে।
• প্রতিদিন মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দেয়: মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে বিশ্রাম দেয়। নিয়মিত মেডিটেশন করে। মেডিটেশন নেতিবাচক চিন্তা কমায়।
• বর্তমানের প্রতি সচেতন থাকে: সুখী মানুষেরা অতীত নিয়ে পড়ে থাকে না, তারা বর্তমানকে উপভোগ করে। কারণ, অতীত ছেড়ে দিতে না পারলে ভবিষ্যতের পথও তৈরি হয় না।
• নেতিবাচক চিন্তা করে না: অনেক বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অবাস্তব নেতিবাচক ভাবনা ছেড়ে দিলে মানসিক সুস্থতা বাড়ে।
• শক্তিশালী সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে: প্রায় সব গবেষণাই বলছে, সুখী হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সুস্থ সামাজিক সম্পর্ক।
• কাছের মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক: সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে একে অপরকে বুঝতে পারা, ক্ষমা করা এবং পাশে থাকা জরুরি। সুখী মানুষেরা এটা বজায় রাখে।
• সহায়তা চায় এবং নিজে অন্যদের সহায়তা করে: কারও সঙ্গে কষ্টের কথা শেয়ার করলে তা অর্ধেক কমে যায়, আবার সুখের বিষয় শেয়ার করলে তা দ্বিগুণ হয়। তাই সুখী মানুষেরা দরকারে সাহায্য চাইতে লজ্জা পায় না এবং অন্যকে সাহায্য দিতে মুহূর্তেই এগিয়ে আসে।
সূত্র: সাইকোলজি টুডে