অপুকে দেখেই আবীর পড়িমরি করে উঠে গিয়ে শক্ত করে তাকে জড়িয়ে ধরল। কিন্তু অপু বেশ নিরুত্তাপ। সে টুম্পাকে একমনে দেখছে। কিন্তু সে টুম্পাকে যতই দেখছে, ততই সে নিজের ভেতরে আবীরের জন্য শ্মশান সাজাচ্ছে! শালারে পুড়িয়ে ছাইভস্ম করা উচিত। বিশ্বাসঘাতক একটা—এমন অন্তর্দাহে মুহূর্তেই পুড়ছে সে।
—আবীর, তুই বন্ধু নামের এক ঐতিহাসিক কলঙ্ক। তুই শালা একটা জাত মিথ্যুক।
—কেন, বন্ধু? ওহ বুঝছি। আমাদের বিয়েতে তোকে দাওয়াত করিনি বলে! আরে পাগল, দাওয়াত করলেই কি তুই প্যারিস থেকে আসতে পারতি? আর হুট করেই সবকিছু হয়ে গেল। সরি, দোস্ত।
—তোর বিয়ার দাওয়াত খাওয়ার লাইগা তো আমি প্রতিদিন বালু দিয়ে দাঁত মাজি। তুই সেই দিন কেন বলেছিলি যে টুম্পা আরেকজনের সঙ্গে প্রেম করে। সেই প্রেমিকটা যে তুই ছিলি আমাকে বলতে পারতি।
—হা হা হা। আই হ্যাভ গটেন দ্যাট পয়েন্ট নাউ। সেদিন এতটুকু মিথ্যা না বললে কি আর আজ আমাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখতি, বন্ধু? আমাদের জুটিটা দারুণ মানিয়েছে না, দোস্ত?
—হুম। বেশ মানিয়েছে। তবে আমার সঙ্গে তুই কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করেছিস। তুই আসলেই একটা মীরজাফর।
—থ্যাংকস, বন্ধু। জানো তো, এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ অ্যান্ড ওয়ার। যুদ্ধে জয়ী হওয়াটাই বড় কথা।
একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে টুম্পা অপুকে বলল, ‘অপু ভাইয়া, থ্যাংকস আ লট ফর ইউর গ্রেট কন্ট্রিবিউশন। ওই দিন তাকে আপনার সঙ্গে নিয়ে না গেলে হয়তো আবীরের সঙ্গে আমার দেখাই হতো না। থ্যাংকস ফর এভরিথিং অ্যাগেইন।’
কথাটা বলতে বলতে আবীরের বাঁ হাতটা দুই হাতে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরল টুম্পা। তিনজনের সামনে রাখা কফির মগ থেকে ওপরের দিকে ধোঁয়া উড়ছে। অপুর কফির মগের ধোঁয়ায় সামনে বসা আবীর আর টুম্পাকে কিছুটা ঝাপসা দেখাচ্ছে।