যেখানে কথা ফুরায়, সেখানে গানে বলে ওঠেন রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (২৫ বৈশাখ ১২৬৮—২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল

শ্রাবণের ঝরঝরে বৃষ্টির দিনে, হঠাৎ যদি কেউ ‘গীতবিতান’ খুলে বসে, বিস্ময়ে দেখবে তার মনের গভীরে যা কিছু চলমান, যা কিছু না বলা, যা কিছু শুধুই অনুভব—সবই কোনো না কোনোভাবে স্থান পেয়েছে সেই পাতাগুলোর মধ্যে। যেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আগেই জানতেন আমাদের অনুভবগুলো ঠিক কোন দিকে যাবে, কোন কথাগুলো রয়ে যাবে মুখে না বলা।

‘গীতবিতান’ কেবল একটি গানের সংকলন নয়, এ যেন এক নীরব আত্মার আলাপ, এক নিঃশব্দ কান্নার অনুবাদ। কখনো প্রেম, কখনো বিরহ, কখনো আত্মদর্শনের আহ্বান—এই সবকিছু মিলেই ‘গীতবিতান’। বৃষ্টির শব্দের সঙ্গে মিলে যায় সেদিনকার কোনো এক গান ‘আমার এ পথ চাওয়াতেই আনন্দ…’ কিংবা ‘আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে…’ যেন সব গান তোমার বর্তমান অনুভবকে প্রতিধ্বনিত করে।

আরও পড়ুন

কখনো মনে হয়, গানের ভাষায় কবি তোমার মনের গোপন দরজাগুলো খুলে দিচ্ছেন ধীরে ধীরে। তুমি যা বলতে পারো না, তা তিনি বলে গেছেন শতাব্দী আগেই। গানের প্রতিটি পঙ্‌ক্তি, প্রতিটি সুর—একেকটি মোমবাতি হয়ে আলো ছড়ায় মনোজগতের অন্ধকার কোনায়।

রবীন্দ্রনাথের লেখা, সুর, গীতবিতান—সবই যেন প্রতিটি প্রাণে জেগে থাকা এক অমর আলো। তিনি নেই, এই সত্য যতটা শূন্যতা, তাঁর গান ততটাই পূর্ণতা।
মরণের পরে যেন, তোমার স্মরণে থাকি।
আজও যেন ‘গীতবিতান’–এর পাতায় তিনি ঠিক সেভাবেই রয়ে গেছেন।