লাল শাপলার অপরূপ সৌন্দর্যের চেচুয়া বিল

চেচুয়া বিলটি এখন শাপলা বিল নামেই পরিচিতছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে চেচুয়া বিলটি এখন শাপলা বিল নামেই পরিচিত।

লাল শাপলার অপরূপ সৌন্দর্যে সেজেছে ত্রিশালের প্রায় ৫০ একরের চেচুয়া বিল। সৌন্দর্যের টানে দর্শনার্থীরাও ছুটে যাচ্ছেন। ছবি তুলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন। এভাবেই বিলটির কথা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের নানা প্রান্তে।

চারদিকে ফুটেছে লাল শাপলা, পাখির কলরব। বিলের এপাশ থেকে ওপাশ শুধু চোখজুড়ানো লাল শাপলার সমারোহ। এ যেন রক্তিম নান্দনিকতার মনোলোভা রূপ। সকালে উদিত সূর্যের আভায় ফুটন্ত লাল শাপলা ও পড়ন্ত বিকেলে সূর্যাস্তের দৃশ্য মুহূর্তে যে কারও মন কাড়ে।

আরও পড়ুন

দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ। যত দূর চোখ যায়, সবুজের মধ্যে লালচে আভা হাতছানি দেয়। বিলটিতে কালচে পানিতে সবুজ পাতার ওপর মাথা উঁচু করে শোভা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং বিখ্যাত লাল শাপলা বিলের নাম ‘সাতলা’, অবস্থিত বরিশালের উজিরপুরে। তারপর বিখ্যাত সিলেটের ডিবির হাওরের লাল শাপলা। গুণে-মানে-আকারে এগুলোর মতো না হলেও চেচুয়া বিলের সৌন্দর্য প্রতিদিনই মুগ্ধ করছে ঘুরতে আসা মানুষদের।

লাল শাপলার বিলটিতে মাঝেমধ্যে দেখা যায় সাদা আর বেগুনি শাপলা। এরই সঙ্গে ভাসমান কচু ফুলের সাদা আভা বিলটির রূপ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। বিলে সাঁতরে শাপলা ফুল তুলতে দেখা যায় কিশোরদের। সূর্যের আলোয় সারা দিন ঝলঝল করে বিলটি। শাপলার সমারোহের এই বিল যেন নতুন সম্ভাবনার দ্বার।

বিলের শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে হরেক রকম নৌকা
ছবি: সংগৃহীত

বিলের শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রয়েছে হরেক রকম নৌকা। নৌকা ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকা। দরদাম সাপেক্ষে কমানোও যায়। ভোর থেকেই শুরু হয় পর্যটকদের আনাগোনা। পর্যটকদের কারণে চাঙা হয়ে উঠেছে স্থানীয় অর্থনীতি। বিলের কল্যাণে অনেক মাঝি পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। শাপলা বিলের পাশেই গড়ে উঠেছে হরেক রকম দোকান। বিলের মাঝখানে আছে বাঁশের ওয়াচ টাওয়ার। যেখান থেকে শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। বিলের মধ্যে বিশ্রামের জন্য বানানো হয়েছে ঘর।

চেচুয়া বিল যাওয়ার উপায়
ময়মনসিংহ শহর থেকে বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে করে ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে ৫ নম্বর রামপুর ইউনিয়নের ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে চেচুয়া বিল। ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বালিপাড়া রোডে অটোরিকশা করে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়া দিয়ে রামপুরা ঠাকুরবাড়ি মোড়। সেখান থেকে ভ্যানগাড়ি কিংবা হেঁটে দুইভাবে যাওয়া যায়। ভ্যানে যেতে সময় লাগবে পাঁচ মিনিটের মতো। হাতের বাঁ পাশে সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন শাপলা বিলের। মোটরবাইকে ময়মনসিংহ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব।

সাধারণ সম্পাদক, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা