কক্সবাজারের কালাপাহাড়—পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা
কক্সবাজার নাম শুনলেই মনে ভেসে ওঠে সমুদ্রতীরের দীর্ঘ বালুকাবেলা, নীল তরঙ্গ আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের পদচারণ। কিন্তু সমুদ্রের সৌন্দর্যের বাইরেও কক্সবাজারে আছে এমন অনেক অজানা স্থান, যেগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয় কেড়ে নিতে সক্ষম। এমনই একটি জায়গা হলো কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কালাপাহাড় ও আশপাশের এলাকা।
একসময় জায়গাটি অনেকটাই নির্জন ও অবহেলিত ছিল। স্থানীয়রাই বেশি জানতেন, বাইরের মানুষজনের কাছে ছিল একেবারেই অচেনা। গত কয়েক বছরে এখানকার চিত্র বদলে গেছে। আজকাল এই গ্রামীণ অঞ্চলটি ঘুরে গেলে চোখে পড়ে সুপারিবাগান, পানের বরজ, নানান জাতের ফলদ গাছ, ধানক্ষেত ও সবুজ বনানী। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে কৃষিজ সম্পদের সমন্বয় জায়গাটিকে দিয়েছে অন্য রকম বৈচিত্র্য।
এখন শুধু আশপাশের মানুষ নয়, দূরদূরান্ত থেকেও দর্শনার্থীরা এখানে ছুটে আসছেন। পাহাড়, বন আর কৃষিজমির মিশেলে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য ভ্রমণপিপাসুদের টানছে। অনেকেই ছবি তুলছেন, কেউ সময় কাটাচ্ছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।
সরকার চাইলে কালাপাহাড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকাকে একটি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এতে স্থানীয় অর্থনীতি সচল হবে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি কৃষিজ উৎপাদন ও ইকো-ট্যুরিজমের সমন্বয়ে কক্সবাজারে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা সম্ভব।
প্রাথমিকভাবে এখানে যাতায়াতের রাস্তা উন্নত করা গেলে পর্যটকদের ভিড় আরও বাড়বে। নিরাপত্তাব্যবস্থা ও পর্যটনসুবিধা নিশ্চিত করা গেলে এটি কক্সবাজারের নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগবে না।
সমুদ্রকেন্দ্রিক কক্সবাজারের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি এ ধরনের অজানা স্পটগুলো পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও গ্রামীণ জীবনের ছোঁয়া মিলিয়ে কালাপাহাড় এখন এক সম্ভাবনাময় নাম। প্রয়োজন শুধু যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার।
সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার বন্ধুসভা