তাঁবু নম্বর ২৮

শেষের রাতে কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা করল বারবিকিউ করবে, এতেই হয়ে গেল আমাদের বারবিকিউছবি: লেখকের সৌজন্যে

কনকনে শীত উপেক্ষা করে, শত জল্পনা-কল্পনা শেষে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা জার্নির পর কুমিল্লা থেকে আমরা পৌঁছালাম গাজীপুরের মৌচাক মাঠে, জাতীয় বন্ধু সমাবেশ ২০২৫–এ।

মৌচাক মাঠে গিয়ে পা দেওয়ার পর থেকে দীর্ঘ জার্নির কষ্ট উধাও হয়ে গেল। মনে হলো নিজের পরিবারের কাছে ফিরেছি। এই নিয়ে আমার দ্বিতীয়বার বন্ধু সমাবেশে উপস্থিত হওয়া। ২০২০ সালের সমাবেশে যাঁরা ছিল, তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে মনে হলো আমাদের পুনর্মিলনী, আর যাঁরা এবার ছিল না তাঁদেরও মিস করেছি।

কুমিল্লা বন্ধুসভার তাঁবু নম্বর ছিল ২৮। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ২০২০–এ কুমিল্লা বন্ধুসভার তাঁবু একই জায়গায় ছিল, তখন নাম্বারিং করা ছিল না। প্রথম দিন রাতে খাওয়ার দীর্ঘ লাইন থেকে শুরু হয় আমাদের আনন্দ উৎসব, যা শেষ হয় শনিবার সকালের খাওয়ার দীর্ঘ লাইন দিয়ে।

যশোর বন্ধুসভার তাঁবুর সামনে।

এই দীর্ঘ সময় আমাদের অতিবাহিত হয় গান, নাচ, আড্ডা, হইহুল্লোড় দিয়ে। দুই বছর পরপর বন্ধু সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও এবার বন্ধু সমাবেশ হয়েছে দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে। এ জন্য আমাদের মধ্যেও বিশেষ উদ্দীপনা কাজ করেছে। বন্ধুসভার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার জিনিস হচ্ছে আমরা সবাই বন্ধু, এখানে বয়সের কোনো ভেদাভেদ নেই। এখানে ৬০ বছর বয়সের বন্ধু যেমন ছিল, তেমনি ২০ বছর বয়সের বন্ধুও ছিল।

আমরা কুমিল্লা থেকে মারুফ ভাইয়ার অর্থায়নে বিখ্যাত রসমালাই নিয়ে যাই। সব বন্ধুসভার বন্ধুদের নিয়ে খাওয়া হয়। প্রতিটা বন্ধুসভা তাদের নিজস্ব এলাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো নিয়ে আসে। আমরাও ঘুরে ঘুরে সবগুলো তাঁবুতে গিয়ে সবার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর স্বাদ নিয়েছি। বিশেষ করে যশোরের গুড়ের কথা বলতেই হয়।

আরও পড়ুন
বন্ধুসভার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার জিনিস হচ্ছে আমরা সবাই বন্ধু।

শেষের রাতে কয়েকজন মিলে পরিকল্পনা করল বারবিকিউ করবে, এতেই হয়ে গেল আমাদের বারবিকিউ। এর বিশেষত্ব হলো কলাপাতার মধ্যে খাওয়া, অসাধারণ ছিল।

বন্ধু সমাবেশ বন্ধুদের উজ্জীবিত করে। তিন দিনের আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে বন্ধুরা নতুন উদ্যমে কাজ করার শক্তি পাবে, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাবে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ’ স্লোগানকে বুকে ধারণ করে সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্বের অঙ্গীকার নিয়ে দেশের অগ্রগতির সাক্ষী হবে।
বন্ধুসভার জয় হোক।

সহসভাপতি, কুমিল্লা বন্ধুসভা