কাজের সময় সহকর্মী এসে গল্প করে, ‘না’ বলব কীভাবে
আমাদের সবার কর্মস্থলেই এমন এক-দুজন সহকর্মী থাকেন, যিনি সব সময় আপনার ডেস্কে এসে গল্প করতে পছন্দ করেন। প্রত্যেক দিন নতুন নতুন গল্প কিংবা অন্য সহকর্মীদের নিয়ে গসিপ করা। আমরাও কাজ কিছুক্ষণ বন্ধ করে সহকর্মীর গল্প শোনার চেষ্টা করি। তবে কখনো কখনো কাজের চাপ বেশি থাকা সত্ত্বেও গল্প শুনতে হয়। সহকর্মীকে ‘না’ করা যায় না। মনে হয় যদি সম্পর্ক খারাপ হয়!
আমরা কেন এমন করি? কারণ, আমরা মানুষ। আমরা চাই, সবাই আমাদের পছন্দ করুক। আমরা চাই জনপ্রিয় হতে, সম্মান পেতে এবং সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুসুলভ হতে। আমরা চাই না যে কেউ আমাদের অসামাজিক বা অমনোযোগী ভাবুক। একেবারেই চাই না অন্য কারও গসিপের বিষয় হতে। তাই ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও সহকর্মীর সঙ্গে আড্ডায় যুক্ত হতে হয়।
মনোযোগ ঠিক করুন
আমরা প্রায়ই সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে বাড়াবাড়ি করি। একটু ভেবে দেখুন, যাঁদের জন্য বা যাঁদের সঙ্গে আপনি কাজ করছেন, কাজ ছেড়ে দিলেও তাঁদের মধ্যে যাঁদের সঙ্গে আপনি বন্ধুত্ব রাখতে চাইবেন, তাঁরাই আপনার আসল বন্ধু। অন্য সবাই ‘বন্ধুসুলভ’ শ্রেণির। যখন কেউ ‘বন্ধুসুলভ’ হয়, তখনো আমাদের ভদ্র, সামাজিক ও পেশাদার হতে হবে। তবে সত্যিকারের বন্ধুত্বের মতো আবেগী যোগসূত্র বা সম্পর্ক থাকা যাবে না। তাই বন্ধুসুলভ সেই সহকর্মীকে হাসিমুখে বলুন, ‘আজ অনেক কাজ, অন্য সময় গল্প করব।’
অবশ্যই ভদ্র হতে হবে এবং কৌশলীভাবে বিষয়টি বলতে হবে। তাহলেই আবেগ বাদ দিয়ে কেবল কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পর্কের দিকে মনোযোগ দেওয়া সম্ভব।
সহকর্মীকে ‘না’ বলার কৌশল
কিছু উপায় মেনে চললে বিষয়টি আরও সহজ হয়ে যায়। যখন দেখবেন কোনো সহকর্মী আপনার ডেস্কে গল্প করতে আসতেছে, তখন উঠে দাঁড়ান এবং বাইরে বেরিয়ে যান। তারপরও সে গসিপ করতে চাইলে ঘড়ি বা ফোনের দিকে তাকাতে পারেন। মূল বিষয় হলো পরিষ্কার দেহভঙ্গি ব্যবহার করে বোঝানো যে আপনি সময় দিতে পারছেন না। প্রয়োজনে সহজে বলে দিতে পারেন, ‘কাজ নিয়ে কথা বলি, অন্যথায় আমি আজ অনেক ব্যস্ত।’
কোনো নাটকীয়তা নয়। অফিস গসিপে একেবারেই জড়ানো যাবে না। একই সঙ্গে কোনো বন্ধুসুলভ সহকর্মীর কাছ থেকে ততটাই প্রত্যাশা করা উচিত, যতটা আমরা নিজে দিতে পারি। কর্মক্ষেত্রের সম্পর্ক থেকে আবেগ দূরে রাখলে মুক্তমনে আসল দায়িত্বে মনোযোগ দিতে পারব।
স্পষ্ট এবং সরাসরি যোগাযোগ কৌশল ব্যবহার করতে হবে। সম্পর্কের মধ্যে আপনার ভূমিকা চিহ্নিত করুন, যাতে কর্মক্ষেত্রের যেকোনো সম্পর্ক থেকে আপনার প্রয়োজন ও চাহিদা মেটাতে পারেন।
সূত্র: সাইকোলজি টুডে