টেক শো
তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি বদলে দেবে স্মার্ট বাংলাদেশের চিত্র
বন্ধুসভার বন্ধুদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাতে প্রথম আলো বন্ধুসভা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ধারাবাহিক টেক শো। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মোবাইলের সৌজন্যে প্রতি সপ্তাহের বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা পর্যন্ত এই টেক শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ২৩তম পর্ব।
প্রতিটি দেশেই কৃষি, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ মৌলিক কিছু জায়গা থাকে। সেই জায়গাগুলোকে যদি কোনোভাবে প্রযুক্তিতে ট্রান্সফর্ম করা যায়, সে ক্ষেত্রে এই খাতে পুরো দেশই উন্নত হবে। মৌলিক খাতগুলোতে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীত হওয়াটা খুবই সহজ হবে। এখন কৃষিপ্রযুক্তি নিয়ে কথা হয়, মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে কথা হয়। অনেকে ভালো করছে। আমরা বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবন দেখি; বিভিন্ন আইওটি ডিভাইসের মাধ্যমে একটা গবাদিপশুর শারীরিক শক্তি থেকে শুরু করে সার্বিক অবস্থা জানতে পারছি। মূল কথা হলো—মৌলিক বিষয়গুলো প্রযুক্তিতে উন্নীত করতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশের পুরো সুফল ভোগ করা সম্ভব।
প্রথম আলো বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল টেক শোর ২৩তম পর্বে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন টেকঅগ্নাইজ সলিউশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান খান। আলোচনার বিষয় ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: রুল অব ইয়ুথ ইন ডিজিটাল ইনোভেশন’। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মুঠোফোনের সৌজন্যে ৮ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটায় এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ সম্রাট।
মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘ডিজিটাল প্রায় সব বিষয়েই মূল অবদান রাখছে তরুণেরা। প্রযুক্তির অধিকাংশ খাতেই তরুণেরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। বর্তমান প্রজন্ম খুব বেশি সাবধানী। যখনই তারা কোনো সমস্যায় পড়ছে, চেষ্টা করছে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে এটার সমাধান করা যায়। প্রতিদিন এত বেশি পরিমাণ প্রযুক্তির উদ্ভাবন হয় যে আজ আপনি যেটা করছেন, আগামীকাল সকালে সেটা পুরোনো হয়ে যাচ্ছে।’
প্রযুক্তি খাতে বাঙালিদের আরও ভালো করার সুযোগ ছিল বলে মনে করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান। এই প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ বলেন, ‘সমস্যা হলো আমরা সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষ কাজে লাগাতে পারি না। এর অন্যতম কারণ শিক্ষার পদ্ধতি ও পরিবেশ। কিছু ক্ষেত্রে পারিবারিক দিক থেকেও একটা সমস্যা থাকে। যেমন এখনো অনেক পরিবার থেকে বলা হয়, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে; কখনো বলা হয় না সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের যে বিশাল একটা দুনিয়া আছে, তা অনেক পরিবারই জানে না।’
‘আমি একটা লোককে জানি, যিনি মালয়েশিয়ায় বাচ্চাদের এসটিইএম মডেল শেখাচ্ছেন, স্মিম মডেলের পরিচয় করাচ্ছেন। ওই দেশে মা–বাবারা আগ্রহী হয়ে এই শিক্ষাগুলো বাচ্চাদের দিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে আপনি যখন ছোটবেলা থেকে শিখবেন; কিংবা গেমস খেলতে খেলতে একটু প্রোগ্রামিং শিখলেন, রোবোটিকস শিখলেন; তখন কিন্তু আপনার মানসিকতা আবিষ্কারের ভাবনায় বেড়ে উঠবে।’
‘একটা বাচ্চা যদি কোনো রোবট বানিয়ে দেখায় এবং আপনারা হাততালি দিয়ে উৎসাহ দেন, তাহলে কিন্তু সে আরও দশটা রোবট বানাতে উৎসাহ পাবে। এখন বাচ্চাটাকে ওই জিনিসটা বানানোর জন্য পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে,’ যোগ করেন মোস্তাফিজুর রহমান খান।
মোস্তাফিজুর রহমান খান আরও বলেন, ‘দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে যদি দেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ডেটা স্ট্রাকচার শেখেন, অ্যালগরিদম শেখেন, ম্যাথমেটিকস শেখেন। তারপর যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আসেন, বিভিন্ন পণ্যের নাম শুনতে হয়, অসংখ্য প্রোগ্রামিং ল্যাংঙ্গুয়েজের নাম শুনতে হয়। এর মধ্যে কিছু নাম আপনি হয়তো আগে শোনেননি। এ বিষয়গুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন যদি কোনোভাবে পরিচিত করানো যায়; কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এটা চেষ্টা করছে এখন। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন এগুলো বানাবেন, শেখাবেন, তখন এই খাতে কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত হবেন।’