টেক শো
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি দুনিয়ায় বাংলাদেশ—তরুণদের সুযোগ কতটা
বন্ধুসভার বন্ধুদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাতে প্রথম আলো বন্ধুসভা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ধারাবাহিক টেক শো। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মোবাইলের সৌজন্যে প্রতি সপ্তাহের বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা পর্যন্ত এই টেক শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ২২তম পর্ব।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির পরিবর্তন হচ্ছে। অনেক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ব্যবহার বেড়েছে। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশে সাইবার সিকিউরিটি, ব্লক চেইন, ডেটা অ্যানালিটিকস ও এআই খাতে ব্যাপক একটা বিপ্লব হবে।
তবে বাংলাদেশে এখনো ক্রেতা বা ব্যবহারকারী পর্যায়ে বেশির ভাগ এআই প্রযুক্তি প্রয়োগ হচ্ছে। এআই বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতকে এখানে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন ব্র্যাকনেট লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী ইমন।
ইউসুফ আলী ইমন বলেন, ‘আমাদের অনেকগুলো আরএনডি সেন্টার, হাইটেক পার্ক বা যে জায়গাগুলো এখনো সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করা হচ্ছে না, সেসব ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি স্থানীয় বা বৈশ্বিক ফান্ডিংয়ে যে সংস্থাগুলো আছে, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবগুলোকে যদি উন্নত করা যায়, আরএনডি করা যায়, ফান্ডিং করা যায়, তাহলে অবশ্যই এই জায়গাগুলোতে আমরা ভালো করতে পারব।’
প্রথম আলো বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল টেক শোর ২২তম পর্বে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন ব্র্যাকনেট লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী ইমন। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ফিউচার অব টেক ইন বাংলাদেশ: অপুরচুনিটি ফর ইয়্যুথ’। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মুঠোফোনের সৌজন্যে ১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটায় এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের সহসভাপতি রুবাইয়াত সাইমুম চৌধুরী।
ইউসুফ আলী ইমন বলেন, ‘দেশের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্প ইন্ডাস্ট্রির একটা সমন্বয় থাকে। এর সঙ্গে ফান্ডিং থেকে শুরু করে আরএনডি বা বিভিন্ন বড় বড় প্রকল্প জড়িত। বাংলাদেশেও এটা দ্রুতই করা দরকার। তাহলে ভবিষ্যতে এ খাতে বাংলাদেশে প্রচুর দক্ষ জনবল তৈরি হবে।’
তরুণদের উদ্দেশে ইউসুফ আলী ইমন বলেন, ‘প্রথমত, সিদ্ধান্ত নিতে পারি না যে আমরা আসলে কোন খাতে কাজ করব। এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিটি পণ্য বা সমস্যার সমাধানে ধীরে ধীরে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেউ যদি সাইবার সিকিউরিটিসে ক্যারিয়ার গড়তে চায়, সবার আগে নেটওয়ার্কিং জানতে হবে। এ খাতে নেটওয়ার্কিংটা জানাটা বেসিক। এটা জানলে পরবর্তী ধাপগুলো সহজ হবে। আগামী ৫-১০ বছরে দেশে সাইবার সিকিউরিটি, ব্লক চেইন, ডেটা অ্যানালিটিকস এবং এআই বড় মার্কেট তৈরি করবে।’
বাংলাদেশের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন খাতে কীভাবে কাজ করে
কিছু কোম্পানি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করছে। তারা দেশ ও দেশের বাইরে সমানতালে কাজ করছে। আউটসোর্সিং নিয়েও কাজ করছে। এর বাইরে কিছু কোম্পানি নেটওয়ার্ক ইনফ্রানিয়র নিয়ে কাজ করে। কিছু করে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে। তাই তরুণদের আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাঁরা আসলে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টে যাবে, সাইবার সিকিউরিটিতে ফোকাস করবে, নাকি নেটওয়ার্কিংয়ে ফোকাস করবে। এ সিদ্ধান্ত নিতে পারলে অনুরূপ ফিল্ডে সে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারবে। বৈশ্বিকভাবে দক্ষ জনবলে পরিণত হবে।
চাকরি না করে উদ্যোক্তা হতে চান? প্রযুক্তি কেমন সুবিধা দেবে?
অনেক সুবিধা রয়েছে। তার আগে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। প্রথমত, সরকারি বা বেসরকারি খাতের এখানে একটা সমন্বয় আছে। উদ্যোক্তাদের ফান্ডিং একটা বড় বিষয়। যাঁরা উদ্যোক্তা হতে চান, তাঁদের এ জায়গা নিয়ে আগে জানাশোনা করতে হবে।
ইউসুফ আলী ইমন বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে চাইলে আগে যেকোনো একটা সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে, তারপর এটার একটা সমাধান বের করতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ বা মেন্টরের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। আপনি যে সমস্যাটা নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন, সেটা কি সাসটেইনেবল? এসব জানতে হবে। তাই আমি বলব, উদ্যোক্তাদের জন্য দারুণ সুযোগ রয়েছে।’
‘আমাদের দেশের সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এটা পর্যাপ্ত নয়। এমন প্রশিক্ষণ আরও বাড়াতে হবে। ইকোসিস্টেম ডেভেলপ করতে গেলে অবশ্যই আমার রিসোর্সকে লক্ষ রেখে করতে হবে,’ যোগ করেন এই প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ।