টেক শো
ডিজাইন ক্যারিয়ারে সফল হতে চান
বন্ধুসভার বন্ধুদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাতে প্রথম আলো বন্ধুসভা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ধারাবাহিক টেক শো। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মোবাইলের সৌজন্যে প্রতি সপ্তাহের বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা পর্যন্ত এই টেক শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ২৪তম পর্ব।
এখনকার তরুণেরা ডিজাইনে খুবই ভালো ভালো কাজ করছে। কেউ যদি এই খাতে ক্যারিয়ার শুরু করতে চান, আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই ইন্ডাস্ট্রির বিভিন্ন অংশ আছে—কেউ চাইলে প্রিন্টিং ডিজাইন বিশেষজ্ঞ হতে পারেন, কেউ ডিজিটাল বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করতে পারেন, কেউ ইউআই-ইউএক্স ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে পারেন; এমন অনেক ধরনের ক্ষেত্র আছে। শুরু করার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনি আসলে কোন ক্ষেত্রটায় বিশেষজ্ঞ হতে চান।
কার্টাপ লিমিটেডের হেড অব ডিজাইন আই কে মামুন বলেন, ‘আমি সবকিছু জানব, কিন্তু আমাকে নির্দিষ্ট একটা বিভাগে বিশেষজ্ঞ হতে হবে। এ বিষয়টা একজন ডিজাইনারের জন্য জরুরি। তারপর সেই অনুযায়ী নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে।’
প্রথম আলো বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল টেক শোর ২৪তম পর্বে আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন কার্টাপ লিমিটেডের হেড অব ডিজাইন আই কে মামুন। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ডিজাইনিং ইয়োর পাথ: হাউ টু স্টার্ট ইন দ্য ইয়ুথ সেক্টর’। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মুঠোফোনের সৌজন্যে ১৫ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটায় এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ সম্রাট।
আই কে মামুন বলেন, ‘কেউ ডিজাইনিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে আমার পরামর্শ থাকবে কোনো এজেন্সি থেকে শুরু করা। কারণ, ক্রিয়েটিভ ডিজাইন হলো সম্পূর্ণ দলগত কাজ। এখানে কপিরাইটার থেকে শুরু করে, আর্ট ডিরেক্টর, ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট—সবাই মিলে ব্রেনস্টর্মিং করে, আইডিয়া জেনারেট করে, সেটার ওপর ভিত্তি করে লেআউট তৈরি করে; এরপরই একটা ভালো কাজ তৈরি হয়। ফলে কাজের কোয়ালিটি বেড়ে যায়।’
‘এজেন্সিতে কাজের চাপ অনেক বেশি। ভিন্ন ভিন্ন ক্লায়েন্টের সঙ্গে কাজ করতে হয়। ফলে নিজের সৃজনশীল চিন্তাও বেড়ে যায়,’ যোগ করেন এই ডিজাইনার।
নতুনদের জন্য পরামর্শ
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ডিজাইনারদের পোর্টফোলিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন এই পোর্টফোলিও কীভাবে তৈরি করবেন? আপনি কোনো একটা ভালো প্রতিষ্ঠানের; ধরুন ‘এক্স’ প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং নিজের মতো করে করুন। যেখানে আপনার নিজস্বতার একটা ছাপ থাকবে। যেটার মাধ্যমে আপনি আপনার কাজের স্টাইলটা বোঝাতে পারবেন। এটা হচ্ছে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ। এ কাজটা যখন আপনার পোর্টফোলিতে থাকবে, তখন নিয়োগদাতারা বুঝতে পারবে আপনি কেমন কাজ পারেন।
আরেকটা বিষয়, আপনি কী চিন্তা করে ডিজাইনটা করছেন, ডিজাইনের প্রতিটি অংশ গুরুত্বপূর্ণ। যখন একটা কালার সিলেক্ট করবেন, ফন্ট সিলেক্ট করবেন, আপনি আসলে কী চিন্তা করে উপাদানটা সিলেক্ট করলেন; এটা কি কেবল দেখতে ভালো লাগছে নাকি কোনো লজিক আছে—নিয়োগদাতারা এ বিষয়গুলো দেখবে।
আই কে মামুন বলেন, ‘আগে নিজের পরিচয়টা বুঝতে হবে। আপনি আসলে কোন ধরনের ডিজাইনার। যেমন আমি নিজেকে একজন কমার্শিয়াল ডিজাইনার ভাবি। কারণ, আমার ডিজাইন যদি বিক্রি করতে না পারি, সেটার কোনো মূল্য নেই। আমি আর্টিস্ট নই। আর্টিস্টদের স্বাধীনতা আছে। তিনি চাইলে তাঁর আর্টকে যেকোনো রঙে সাজাতে পারবেন। অন্যদিকে আমার কাজ হচ্ছে ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ধরেন, আমি একটা খুব সুন্দর এস্থেটিক ডিজাইন করলাম; কিন্তু সেটা আমার ব্যবসায় কোনো কাজে লাগছে না, তখন ওই ডিজাইনের আসলে কোনো মূল্য নেই। কারণ, একজন ডিজাইনার হিসেবে আমার কাজ হচ্ছে ব্যবসা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় সহযোগিতা করা। যে ডিজাইনটা ব্যবসার উদ্দেশ্য সার্ভ করবে, সেটা হচ্ছে কমার্শিয়ালি সফল ডিজাইন।’