ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে গড়ুন ক্যারিয়ার

বন্ধুসভার বন্ধুদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে এবং প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানাতে প্রথম আলো বন্ধুসভা প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ধারাবাহিক টেক শো। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মোবাইলের সৌজন্যে প্রতি সপ্তাহের বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা পর্যন্ত এই টেক শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৯ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় দশম পর্ব।

ছবি: এআই/বন্ধুসভা

বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে এবং দিন দিন এটা বাড়ছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষ হলে বড় বড় এজেন্সিতে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, টেক কোম্পানি, ফার্মাসিউটিক্যাল, হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান, ডিজিটাল পে মাধ্যম যেমন বিকাশ-নগদ-রকেট, অনলাইন বিভিন্ন শিক্ষার প্ল্যাটফর্মসহ অসংখ্য মাধ্যমে কাজের সুযোগ রয়েছে। বিদেশেও এখন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেক চাহিদা।

প্রথম আলো বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল টেক শোর দশম পর্বে আলোচক হিসেবে ছিলেন ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ পলাশ মাহমুদ। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিলস এভরি ইয়ুথ শুড লার্ন’। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মুঠোফোনের সৌজন্যে গতকাল বুধবার ৯ জুলাই রাত সাড়ে আটটায় এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ সম্রাট।

আরও পড়ুন

ডিজিটাল মিডিয়া বা প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে যে প্রচারণা চালানো হয়, সেটাকেই সহজ বাংলায় ডিজিটাল মার্কেটিং বলে উল্লেখ করে পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘ডিজিটাল মার্কেটিং দুই ভাগে শেখা যায়। একটা পেইড, আরেকটা বিনা মূল্যে। আমার পরামর্শ থাকবে বিনা মূল্যে শেখার। আর যদি কেউ একেবারেই না বোঝে, তাহলে পেইড যেকোনো এক-দুইটা কোর্স করে মৌলিক বিষয়গুলো শিখে নিতে পারে।’

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে মৌলিক দক্ষতা শেখার মাধ্যম
গুগলের ‘ডিজিটাল গ্যারেজ’ নামে একটা লার্নিং প্ল্যাটফর্ম আছে। সেখানে ফান্ডামেন্টাল অব ডিজিটাল মিডিয়া বা মার্কেটিং বিষয়গুলো আছে। এই কোর্স যে কেউ করতে পারবে, সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে। গুগলে এটা সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। ই–মেইল দিয়ে লগইন করতে হবে। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিষয়ে মৌলিক ধারণা দেওয়া আছে।
মেটা ব্লু প্রিন্ট’ প্ল্যাটফর্ম আছে। এই মাধ্যমে ছয়টা কোর্স আছে। এর মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েট, ডিজিটাল মার্কেটিং অ্যাডভান্স, মিডিয়া বায়িং ও ম্যানেজম্যান্ট কমিউনিটির মতো কোর্স রয়েছে।
এর বাইরেও ইউটিউবে গুগলের নিজস্ব চ্যানেলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেক কনটেন্ট রয়েছে। বড় বড় ডিজিটাল মার্কেটারের নিজস্ব চ্যানেলে অনেক ধারণা পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘আমিও এভাবেই অনলাইনে শিখেছি। আর অ্যাডভান্স লেভেলে (পেইড) শিখতে চাইলে “কোর্সেরা” ভালো প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।’

অনার-বন্ধুসভার ধারাবাহিক লাইভ টেক শো (দশম পর্ব)।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সুবিধা
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ডেমোগ্রাফি সেট করে দেওয়া যায়, টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক করা যায়। বয়স ও লোকেশন নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। এ বিষয়ে পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘আপনি আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে সহজেই বিজ্ঞাপন বা বার্তা পৌঁছে দিতে পারবেন। এখন সবার হাতে স্মার্টফোন আছে। স্মার্টফোন দিয়ে পৃথিবীর যেকোনো স্থান থেকে এটা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। ধরুন, আপনি গতকাল থেকে একটা বিজ্ঞাপন অনলাইনে চালাচ্ছেন; আপনার মনে হলো, এটা আজ আর চালাবেন না। তখন সেটা মুঠোফোনের মাধ্যমে বন্ধ করে দিতে পারবেন।’

ডিজিটাল মার্কেটিং বাজেট ফ্রেন্ডলি। প্রিন্টে বা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিলে তারা বলবে, মিনিটে এত টাকা দিতে হবে, অথবা এত বর্গফুটের জন্য এত টাকা দিতে হবে। অন্যদিকে, ডিজিটাল মাধ্যমে ১০ ডলারের বিজ্ঞাপন দিলে, সেই অনুযায়ী নির্দিষ্ট মানুষের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছে যাবে। পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘ওই নির্দিষ্ট মানুষ কারা হবে, সেটাও আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন। যেমন টার্গেট অডিয়েন্সরা শিক্ষার্থী হবে, অথবা নারী হবে অথবা শুধু পুরুষ হবে; অথবা অর্ধেক নারী অর্ধেক পুরুষ হবে। এ কারণে এখন ছোট উদ্যোক্তারাও সহজেই তাঁদের প্রচার করতে পারছেন।’

অন্যদিকে, পত্রিকা, বিলবোর্ড বা টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিলে সেটা কত মানুষ দেখল, কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, টার্গেট অডিয়েন্স কারা, কিছুই জানা যায় না। কী পরিমাণ এনগেজমেন্ট হচ্ছে, তা–ও দেখার সুযোগ নেই। আর ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে রিয়েল টাইম অ্যানালাইসিস করা যায়। মোটকথা, ফিডব্যাক দেখা যায়। ফিডব্যাক ভালো না হলে নতুন করে আবার বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়।