সেদিন সন্ধ্যায় অনুর সাথে কথা বলা হলো না অপুর। অপুর কথা বলতে ইচ্ছে করেনি এমন নয়। তবে অনু যেভাবে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিল, তেমনটা সে না করলেও পারতে। একসময় অনুর শহরে অপু রাত জেগে জেগে আসত। রাতের চাঁদ অপুকে এগিয়ে দিত অনুর শহরে।
নীল আকাশের তারারা সঙ্গ দিত অপুকে। অপু যখন পৌঁছাত তখন শহরের ব্যস্ত পথ থাকত একদম ফাঁকা, নতুন দিনের জন্য প্রস্তুতি নিত সবাই। দিনের প্রথম আলোয় বোধ হয় অপুর পা-ই প্রথম পড়ত কালো রাস্তার বুকে। রাত জেগে দীর্ঘ পথ মাড়িয়ে অনুর মুখখানি দেখার আশায় অপুর মনে একটা আলাদা রকমের অনুভূতি দোল খেয়ে যেত তখন।
সোসাইটির মূল ফটক খোলার অপেক্ষায় অধীর আগ্রহে থাকত অপু। অনু বের হয়ে এলে ব্যাগ থেকে একে একে বের করে দিত, যা থাকত অপুর ঝুড়িতে। এরপর আরও অনেক সময় পেরিয়েছে। বেড়েছে অনু-অপুর দূরত্ব । শহুরে শালিক এখন অনুর বারান্দায় বসে। অপু জানে সে কথা; তবুও তার বলার আছে অনেক কথা। ভাবনারা বড্ড বেসামাল! বোঝে না তেমন কোনো বারণ, মানে না বাধা। অপুর অনেক কথা এখনো হয়নি বলা…।
অনুকে অপু শেষবার দেখেছে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর। সাদা ধবধবে অ্যাম্বুলেন্স লাল বাতির হুডি ঘুরিয়ে চোখের পলকে বাম থেকে ডান দিকে চলে গেছে। অনু পারেনি এই ব্যস্ত অমানবিক চৌকাঠে নিজের জগৎ গড়তে। তবুও অপুর জিজ্ঞাসা, ‘কিসের এত তাড়া ছিল তার?’ অপু এখন আরেক সন্ধ্যার আশায়। বলতে চায় তার না বলা কথা।
তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা