স্বরের স্তর

প্রতীকী ছবি
সংগৃহীত

আবৃত্তি করতে হলে স্বরের স্তর সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। কারণ, স্বর নিয়েই আবৃত্তিশিল্পীর খেলা। চিত্রশিল্পীর ছবি আঁকতে তুলির প্রয়োজন হয়। তুলির সঙ্গে রং জড়িয়ে সাদা ক্যানভাসকে করে তোলেন বিমূর্ত। তেমনি আবৃত্তিশিল্পী স্বরের দোলাচালে দর্শক ও শ্রোতার কল্পচিত্রে ফুটিয়ে তোলেন দৃশ্যকল্প। যে আবৃত্তিশিল্পী যত নিপুণভাবে কাজটি করতে পারেন, তিনি তত বেশি সার্থক। স্বরের কমলতা, গাম্ভীর্য, দৃঢ়তা, মাধুর্যতার প্রয়োগে পরিমিতিবোধ যার যত সূক্ষ্ম, তার আবৃত্তিও তত বেশি সমাদৃত। এ কারণেই স্বর সম্পর্কে জ্ঞান রাখা দরকার।

স্বরের স্তর

স্বরের স্তরকে সাধারণভাবে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন

ক. উদারা

খ. মুদারা

গ. তারা

ক. উদারা

উদর তথা পেট থেকে যে সাউন্ড বের হয়ে আসে, তাকে উদারা বলে। এই সাউন্ড খাত থেকে উচ্চারিত হয় বলে শুনতে ভারী শোনায়। উদারা থেকে কথা বলতে গেলে অল্প সময়ে পেটের সব বাতাস বের হয়ে যায়। যে কারণে বড় ডায়ালগ দিতে সমস্যা হয়। তবে যথেষ্ট অনুশীলনের মাধ্যমে এ সমস্যা কমিয়ে আনা সম্ভব। উদারায় অনুশীলনের সময় পেটে হাত রাখলে অনুভব করবেন পেট থেকে দ্রুত বাতাস বের হয়ে যাচ্ছে আর পেটের চামড়া ভেতরের দিকে লেপ্টে যাচ্ছে।

খ. মুদারা

সাধারণত বুকের মাঝ থেকে যে সাউন্ড বের হয়ে আসে, তাকে মুদারা বলে। স্বাভাবিকভাবে মানুষ অধিকাংশ সময় মুদারা থেকে কথা বলে। মুদারা থেকে কথা বলতে আমাদের কষ্ট হয় না। অনায়াসে আমরা দীর্ঘ সময় মুদারা থেকে কথাবার্তা বলে থাকি। এটি স্বরের স্বাভাবিক মাধ্যম। এ মাধ্যমেই কবিতা ও গানের অধিকাংশ চয়ন হয়ে থাকে।

গ. তারা

তারস্বরে তথা মাথা থেকে বাউন্স করে যে সাউন্ড বের হয়, তাকে তারা বলে। মানুষ যখন অধিক উচ্চ স্বরে কথা বলে বা চিৎকার করে, তখন এই স্বর ব্যবহার করে থাকে। এই সাউন্ড শুনতে খুব তীক্ষ্ণ বা চিকন শোনায়। অনেক দূরে অবস্থিত কাউকে ডাকতে গিয়ে আমরা এই স্বর ব্যবহার করে থাকি। এই স্বরে কথা বলার সময় মাথার তালুতে হাত রাখলে হাতের তালুর নিচে তাড়িত হবে।

স্বরের জ্ঞানগর্ভ আলোচনা নাইবা করলাম। স্বরের সপ্তক, অষ্টক নিয়ে আলোচনা করলে অনেকের কাছে দুরূহ মনে হয়। তাই অতি সাধারণভাবে স্বরের সাধারণ তিনটি স্তর খুব সহজে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম। ভুল-ত্রুটি হলে মার্জনীয়।