সংসার স্বপ্ন

প্রতীকী ছবি
প্রথম আলো

অনিরুদ্ধ হবে বর, আমি তার আদুরে বধূ। ডাক্তারিবিদ্যার বইগুলো ছুড়ে ফেলে নর্দমায় বুকে তুলে নেব পরিপাটি সংসার। বছর না ঘুরতেই কোলজুড়ে সন্তান। ওকে ডাকবে বাবা, আমি মা।

রান্নার বেলা হাত যাবে পুড়ে, মরিচ কাটতে কাটব আঙুল। পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখে জল। হাঁপিয়ে উঠে চেঁচাব, ‘সংসারে খেটেখুটে হাড় ছাই, আমাকে তুমি সুখ দিলে না’। মায়ের মতোই ঝগড়াটে হব আমি, করব তেমনি পাগলামি; মা যেমন আমার ঘরে ঘুমোতে যায় বাবাকে রেখে একলা বিছানায়।

ইশ্‌, অনিরুদ্ধটা যে কি মানুষ! চোখে চশমা এঁটে শুধু পড়া পড়া। উচ্চ আদালতে নামিডাকি আইনবিদ হবে সে; পড়া ছাড়া কিছুই বোঝে না। অথচ আমি...।

ভোর আটটায় তাকে আদালতে ছুটতে হবে। জুতোর ব্রাশটা খুঁজে না পেয়ে শাড়ির আঁচলে মুছে দেব জুতো। বুকের পাশে দাঁড়িয়ে বাঁধব কোটের সাথে ম্যাচ করা টাই; চিকন আঙুলে পরিপাটি করে দেব চুল। টিফিন বাটিতে দুপুরের খাবার।

সন্ধ্যার আকাশে তারারা ভেসে উঠবে যখন, অনিরুদ্ধ ফিরবে ঘরে। ক্লান্ত শরীরে শুবে বিছানায়। গভীর রাতে চাঁদ দেখা দিলে ছাদের কার্নিশে বসব দুজন। গল্পে গল্পে মুছে দেব ওর কপালের ক্লান্তির ছাপ।

অনিরুদ্ধটা যে কি মানুষ! এসবের কিছুই করতে দেবে না। আমি ডাক্তার হই, এই তার চাওয়া, বিদেশি ডিগ্রিধারী ডাক্তার। অথচ পড়াশোনাই ভালো লাগে না আমার।

হারুয়া, কিশোরগঞ্জ