লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের সহায়তায় বন্ধুসভার ছবির হোসেন

লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের সহায়তায় বন্ধুসভার ছবির হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

হাজারখানেক যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সহায়তাকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন ঝালকাঠি বন্ধুসভার উপদেষ্টা ছবির হোসেন। ছবির হোসেনের বাসা ঝালকাঠি শহরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে। ভোর আনুমানিক চারটার দিকে পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সের হর্নের শব্দে ঘুম ভাঙে ছবিরের। সোয়া চারটার দিকে ছোট ভাই জুবায়েরকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন তিনি।

লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের সহায়তায় বন্ধুসভার ছবির হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

ছবির হাসপাতালে গিয়ে দেখেন দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় মলম মাখানোর লোক নেই। ছবির হোসেন বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে আগত অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসায় সহায়তা করি। হাসপাতালে নার্স ও ডাক্তারের সংখ্যা কম হওয়ায় দগ্ধ ব্যক্তিদের মলম লাগিয়ে দিই।’

সেই রাতেই ছবির হোসেন অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের হাতে ৫০০ টাকা করে প্রায় ১৫ হাজার টাকার অর্থসহায়তা দেন।

লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের সহায়তায় বন্ধুসভার ছবির হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

ছবির হোসেন বলেন, ‘লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে প্রথমেই হাসপাতালে যাই। যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের আর কী রক্ষা করব। আহত ব্যক্তিদের যতটুকু সম্ভব সেবা দিতে পারি, সেই চিন্তা করেই হাসপাতালে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি, কারও হাত দগ্ধ, কারও পা দগ্ধ, কারও মুখমণ্ডল পুড়ে গেছে। মলম দিয়ে যাঁদের বরিশালে পাঠানো দরকার, তাঁদের অ্যাম্বুলেন্সে করে বরিশালে পাঠিয়ে দিই।’

লঞ্চে অগ্নিদগ্ধদের সহায়তায় বন্ধুসভার ছবির হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

বন্ধুসভার সদস্যরাসহ বিভিন্ন সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা লঞ্চঘাটে, চরে আটকে থাকা স্বজনদের নিয়ে যাত্রীদের খুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করেন। দিয়াকুল গ্রামের বাড়িগুলোতে আশ্রয় নিতে গ্রামে থাকা বন্ধুসভার সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

ছবির হোসেন বলেন, ‘অভিযান–১০ লঞ্চে এসে দেখি, হৃদয়বিদারক দৃশ্য। লঞ্চের কেবিন, ডেক ও সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখি কারও অর্ধপোড়া লাশ, পুড়ে গলে থাকা লাশ, কারও শুধু পোড়া কঙ্কাল।’