নবীন-প্রবীণ ও তরুণদের মিলনস্থল প্রথম আলো বন্ধুসভা। বন্ধুসভা প্রথম আলো পত্রিকার পাঠক সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থা, অসাম্প্রদায়িকতায় সংকল্পবদ্ধ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস ও দেশপ্রেমে নিবেদিতপ্রাণ এই চার মূলনীতিতে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও দশের কল্যাণে ব্রতী হওয়াই বন্ধুসভার বন্ধুদের স্বপ্ন ও শপথ। মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে বন্ধুসভার বন্ধুরা বদ্ধপরিকর। রক্তের প্রয়োজনে বন্ধুরা হাসিমুখে ছুটে যান। শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি বন্ধুদের রয়েছে নিবিড় ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বন্ধুরা দীপ্তি ছড়িয়ে চলেছেন। বর্তমানে দেশ ও বিদেশে প্রথম আলো বন্ধুসভার ১৩০টি শাখা রয়েছে। প্রতিটি বন্ধুসভা জনকল্যাণকর সামাজিক কর্মকাণ্ড ও নানা নান্দনিক উদ্যোগ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক বছরকে (১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর) সাফল্যমণ্ডিত করে তোলে।
এরই ধারাবাহিকতায় যশোর বন্ধুসভা প্রথম আলো ট্রাস্টের পৃষ্ঠপোষকতায় শীতার্থ মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যাকবলিত মানুষকে সহযোগিতা করাসহ কেন্দ্রীয় পর্ষদের নির্দেশনায় বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রথম আলোর নিয়মিত কার্যক্রম ‘গণিত উৎসব’, ‘ভাষা প্রতিযোগ’, ‘তারুণ্যের জয়োৎসব’ ও ‘প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা’র মতো জাতীয় আয়োজনে যশোর বন্ধুসভা সেরা ব্যবস্থাপনা স্মারকের গৌরব অর্জন করেছে।
প্রতিবছর যশোর বন্ধুসভা নিজেদের অর্থায়নে বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে—জাতীয় দিবস, বসন্তবরণ, চৈত্রসংক্রান্তি, ঈদে রঙিন জামা বিতরণ, পাখিদের আশ্রয়ে গাছে গাছে ঠিলে বেঁধে দেওয়া, পাঠচক্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দেয়ালিকা, ভাঁজপত্র প্রকাশ, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ইত্যাদি। যশোর বন্ধুসভার এক বন্ধু একজন অসহায় মায়ের বন্ধকী জমির দলিল ছাড়িয়ে দিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
আমার প্রথম আলো বন্ধুসভার সঙ্গে পথচলার চার বছর পূর্ণ হয়েছে এ বছর। চার বছর নেহাত কম সময় নয়। তাই প্রাপ্তির ঝুড়িও অপূর্ণ নয়। প্রাপ্তি হয়েছে অনেক কিছু। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যে এত আনন্দ, এত তৃপ্তি—বন্ধুসভার সঙ্গে না থাকলে হয়তো বুঝতে পারতাম না। একটি বড় আয়োজন কিভাবে গুছিয়ে নিতে হয়, কিভাবে ১০ জনকে নিয়ে একসঙ্গে চলতে হয়, তা–ও শিখেছি বন্ধুসভা থেকে। শ্রদ্ধাভাজন ও স্নেহস্থানীয় অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। নিজেকে উপস্থাপন করতে শিখেছি, শিখেছি নিজের গুণগুলো প্রকাশ করতে। বন্ধুসভায় যুক্ত না হলে এটি সম্ভব ছিল না।
‘প্রথম আলোর ছাপা কাগজে প্রতিদিন ৫০ লাখ পাঠক’ শুনতেই মনের ভেতর একটি অসীম ভালো লাগা কাজ করে। আসলে আমরা যারা বন্ধুসভার সদস্য, বন্ধুসভা করি, তাঁদের কাছে ‘প্রথম আলো’ একটি ভালোবাসার নাম। আমরা খুব গর্ব করেই বলি, আমরাও প্রথম আলো পরিবারের সদস্য। প্রথম আলো আমাদেরই প্রতিষ্ঠান।
ছাপা কাগজে প্রতিদিন ৫০ লাখ পাঠকের আমিও একজন। প্রতিদিন আর দশটা রুটিনমাফিক কাজের মতো দৈনিক পত্রিকা হিসেবে ‘প্রথম আলো’ পড়া আমার রুটিনের মধ্যে পড়ে। প্র-স্বপ্ন নিয়ে, পড়ালেখা পাতা, অর্থনীতির খবর, বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পড়তে ভালো লাগে। তবে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হই পাঠকের কাছ থেকে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে লেখা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে দেখলে।
লেখা পাঠিয়ে প্রথম আলোর কাছ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পুরস্কার জিতেছি। প্রথম আলো যুগের পর যুগ এভাবেই আলো ছড়িয়ে যাক, কোটি পাঠকের মন জিতে নিক, এই প্রত্যাশা আমার। সেই সঙ্গে বরাবরের মতো বলতে চাই—ভালোবাসি বন্ধুসভা, ভালোবাসি প্রথম আলো।