ভালোবাসায় বন্ধুসভা

ভালোবাসায় বন্ধুসভাছবি: আনিস মাহমুদ

দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি টিউশনি করানোর উদ্দেশ্যে। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। পকেট থেকে বের করে দেখলাম সাকিব (সাবেক সভাপতি, ঝিনাইদহ বন্ধুসভা) ভাই কল করেছেন। কল রিসিভ করলাম—
সাকিব ভাই- অতনু, বন্ধুসভার নাম তো শুনেছ?
আমি- অবশ্যই ভাই।
সাকিব ভাই- একটা দারুণ সুযোগ আসছে। কালকে দেখা কোরো।
আমি- ঠিক আছে, ভাই।
পরদিন গেলাম দেখা করতে। সেখানে গিয়ে দেখি আরও অনেকে এসেছে। কিছুক্ষণ পর জানতে পারলাম, ঝিনাইদহ বন্ধুসভার কার্যক্রম কয়েক বছর বন্ধ হয়ে আছে। সাকিব ভাইয়ের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ বন্ধুসভা আবার প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে।

সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে স্থান পেলাম। আমার ছোট বোনকেও সুযোগ করে দিলাম। তারপর নতুন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কাজ শিখতে শুরু করলাম। একটা কর্মসূচি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কীভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হয়, বন্ধুসভাতে না এলে হয়তো শিখতে পারতাম না। নতুন কমিটি করা হলো। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেলাম। বন্ধুদের ভালোবাসা নিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করলাম।
সবার সুন্দর কাজের মাধ্যমে বছর শেষে ঝিনাইদহ বন্ধুসভা সেরা পাঁচ বন্ধুসভার সম্মাননা অর্জন করল। সে দিন যে কতটা আনন্দ হয়েছিল, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
দ্বিতীয় বছর নতুন কমিটি হলো। আবারও নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব অর্পণ করল ঝিনাইদহ বন্ধুসভা।

বন্ধুসভা একটা আবেগের জায়গা, যেখান থেকে অনেক বন্ধুকে পেয়েছি, যারা কেউই আমার পূর্বপরিচিত নয়, কেউই আমার বয়সী নয়, কিন্তু সবাই বন্ধু।
এই যে এত কিছু লিখছি, সবই বন্ধুসভার জন্য শিখতে পেরেছি।
কিছুদিন আগে নীলফামারী বন্ধুসভার এক বন্ধুকে বললাম, বন্ধুসভা করে কোনো লাভ হোক বা না হোক, যেকোনো জেলায় গেলে আমাদের সহায়তা করার জন্য বন্ধুসভাকে অবশ্যই পাব—এটাই অনেক বড় পাওয়া।
বন্ধুসভা করার পর থেকে স্কুলের বন্ধুরা দেখা হলেই বলে, অতনু কিন্তু সেই ছোট্ট অতনু নেই। সে একজন সাধারণ সম্পাদক। অনেক কাজ করে সমাজের জন্য। তখনকার অনুভূতি অসাধারণ।
বলতে ভুলেই গেছি, ছোটবেলায় রস-আলো, ছুটির দিনে সংগ্রহ করতাম। রস-আলোর চিঠিটা সব থেকে বেশি ভালো লাগে।
সবশেষে বলতে চাই, সারা জীবন বন্ধুসভার জন্য কাজ করে যেতে চাই। প্রথম আলো বিশ্বের সব পত্রিকার শীর্ষে থাকবে, এই প্রার্থনা করি।
জয়তু বন্ধুসভা।

সাধারণ সম্পাদক, ঝিনাইদহ বন্ধুসভা, ঝিনাইদহ।