বলেছিলে আসবে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

বলেছিলে আসবে
বলেছিলে আসবে
মুজাহিদুল ইসলাম শিশির
তুমি বলেছিলে আসবে,
কই এলে না তো!

পথে কত মানুষ যায়,
আমি শুধু খুঁজে ফিরি ভিড়ের মধ্যে তোমায়।
হয়তো তুমি ভুলেই গেছ,
হয়তো তোমার মন থেকে মিশে গেছি আমি,
যেমন ইরেজারের ঘষায় মুছে যায় অতি যত্নে আঁকা পোর্ট্রেটের শেষ আঁচড়টাও!
মনে আছে? বলেছিলে চিঠি লিখবে!

রহিম চাচাকে কতবার যে জিজ্ঞেস করলাম, ‘চাচা! আমার কোনো চিঠি আসেনি?’
চাচা পানের পিক ফেলে লাল দাঁত বের করে বলেন, ‘চিঠি কি খাইবার জিনিস হইলো বাজান, যে খাইয়া লইমু? আসলে তো তোমারে ডাইকাই দিমু।’

তখন সব আশা ভেঙে তছনছ হয়ে পরমুহূর্তেই মনটা কেমন এক বিষণ্নতায় ছেয়ে যায়!
যেন কালবৈশাখীর প্রবল তাণ্ডবের পর এক থমথমে নীরব পরিবেশ!
তুমি যাওয়ার পর পুকুরপাড়ের কৃষ্ণচূড়ার লালরঙা ফুলগুলাকে ধূসর মনে হয়।
বর্ষা এলেই পুকুরের দক্ষিণের কদমগাছটা ফুলে ভরে ওঠে ঠিকই, কিন্তু আগের মতো কদমের শুভ্রতা এখন আর মুগ্ধ করে না,
এখন মনে হয়, একেকটা কদম ফুল একেকটা মস্তিষ্ক আর তাতে গাঁথা আছে হাজারটা টুথপিক!

পুকুরপাড়ের বেঞ্চিতে বসে থাকা কাপলদের হাসি
এখন মনে হয় রক্তখেকো ভ্যাম্পায়ারের আর্তচিৎকার।
প্রতিবার শীতের জীর্ণ, শীর্ণ দিনগুলো কেটে প্রকৃতিতে বসন্ত এলেও
তুমি আসনি কখনো,
হয়তো আসবেও না কোনো দিন
তবু অপেক্ষা,
সময়ের ঘূর্ণিপাকে এসে যদি হাজির হও!
আমাকে পাবে তুমি এই পুকুরপাড়ে, এই শানবাঁধানো সিঁড়িতে।