‘সুরভীর সঙ্গে এক রাত’

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

প্রোগ্রাম ক্যানসেল
প্রতিদিন সূর্য ওঠে। সূর্য ডোবে। কিন্তু প্রতিটা দিনই আলাদা। আজকের সূর্যটা যে অন্য রকম, সেটা সকাল থেকেই টের পাচ্ছি। প্রায় দেড় বছর পর ঢাকার বাইরে যাব। রাতে শুয়েও কল্পনা হয়েছে। সকালে অফিসে গেলাম। কেবলই মনে হচ্ছে, কখন নেমে আসবে সন্ধ্যা। প্রায় পৌনে দুপুরে সঙ্গীদের মধ্যে প্রথম যাঁর সঙ্গে দেখা, তিনি লেখক পিয়াস মজিদ। একজন বড় লেখক হিসেবে যতটা অহংকার থাকার কথা, বেচারার এর কিছুই নেই। যখন–তখন খোলামনে মিশে যান। মিষ্টি হেসে বললেন, আশফাক ভাই চলে এসেছি। তাঁকে দেখে উত্তেজনা আরও একটু বেড়ে গেল। এদিকে বিকেল হতে না হতেই রশিদ ভাইয়ের ফোন। আশফাক ভাই, সব ঠিক আছে তো। সন্ধ্যায় বন্ধুসভার রুমে চলে আসবেন। এখান থেকে রওনা হব। বললাম, করোনাকাল। জানেনই তো সময় ভালো না। যদি সন্ধ্যা পর্যন্ত বেঁচে থাকি তাহলে যেতে পারব। তিনি খুবই গোছালো মানুষ। সবকিছু নিশ্চিত করতে চান। বেঁচে আছি কি না, জানার জন্য সন্ধ্যার আগে আবারও ফোন। বললাম, আপনারা রেডি থাকেন, ঠিক সময়ে এসে যাব।

সন্ধ্যায় বন্ধুসভার রুমে গিয়ে হতাশই হলাম। যাঁদের আশা করেছিলাম, তাঁদের মধ্যে জাফর সাদিক, মৌসুমী মৌ, ফাল্গুনী মজুমদার, চৈতী চক্রবর্তী—এঁরা নেই। তাহলে কি যাওয়া হচ্ছে না। কারণ, এই সময় এতগুলো মানুষ না থাকার অর্থ প্রোগ্রাম ক্যানসেল। আল রশিদ ভাই হলেন হুমায়ূন আহমেদের মিছির আলি। মিস্টার সমাধান। বললেন, মুমিত আল রশিদ, পিয়াস মজিদ, আশফাক ও শাকিব বন্ধুসভার রুম থেকে যাবে। অন্যরা যাবে যার যার মতো। মিছির আলি অনেক চেষ্টা করছেন একটা উবারের জন্য। প্রয়োজনের সময় যেমন মানিব্যাগ, চশমা, চিরুনি পাওয়া যায় না। আজ তেমনি উবার পাওয়া যাচ্ছে না। সদরঘাটের রাস্তাটা এমনিতে জ্যাম থাকে। হাতে সময় নিয়ে বের হতে হয়। উবার আর পাওয়া গেল না। আসলে কার ভাগ্যে কী আছে সেটা লেখা থাকে। আজ কারও ভাগ্যে উবার নেই।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

অদ্ভুত সিএনজি যাত্রা
শেষমেশ শাকিবের পরামর্শে ভরসা করতে হলো সিএনজির ওপর। তবুও রশিদ ভাই উবারের আশা ছাড়লেন না। ঘোষণা করলেন, পেট্রোবাংলা পর্যন্ত হেঁটে যাব। এর মধ্যে যদি উবার পাই তাহলে উবারেই যাব। কিন্তু সময় খারাপ হলে যা হয়। সেই উবার আর পাওয়া গেল না। চারজনে একটা সিএনজিতে উঠলাম। সিএনজিওয়ালাকে বললাম, ভাই সাহেব এমনভাবে যাবেন যেন দ্রুত সদরঘাটে যাওয়া যায়। কথার উত্তর দিলেন না। শুধু হালকা মাথা নেড়ে কী যেন বোঝাতে চাইলেন। কিন্তু তখন সেটা বুঝতে না পারলেও পরে বুঝেছিলাম। শুরুতেই তিনি বাংলামোটর, শাহাবাগ, জিরোপয়েন্ট দিয়ে যেতে পারতেন। সেটা না করে কারওয়ান বাজার থেকে মগবাজার মোড়, মগবাজার মোড় থেকে  শান্তিনগর মোড়। সেখান থেকে রাজারবাগ মোড় হয়ে ফকিরাপুল মোড়। ফকিরাপুল থেকে নটর ডেম, বাংলাদেশ ব্যাংক হয়ে গেলেন ইত্তেফাকের দিকে। ধারণা ছিল, তিনি দ্রুত যাওয়ার জন্য পল্টন, ফুলবাড়ি, বংশাল হয়ে যাবেন। কিন্তু সদরঘাট যেতে এভাবে যে এদিকে আসতে হয় জীবনে এই প্রথম। ইত্তেফাকের পূর্ব পাশ দিয়ে এক গলিতে ঢুকে পড়লেন। একেঁবেকেঁ ধীরে ধীরে চলতে লাগলেন। একটু ভয় হচ্ছে। গলি রাস্তা। একবার জ্যাম লাগলে আর ছাড়বে না। তার ওপর ঢাকা শহরে কারণে–অকারণে যেখানে–সেখানে রাস্তা কাটা হয়। অনেকে মনে করেন রাস্তা কাটলেই টাকা। এমন ভাবনার মধ্যেই সত্যি সত্যি একটা কাটা রাস্তায় এসে তিনি থামলেন। এখন আর সামনেও যায় না, পেছনেও যায় না। প্রায় তিন যুগের ঢাকার জীবনে কতবার সদরঘাট গিয়েছি জানি না। তবে এটা নিশ্চিত যে এভাবে কোনো দিনও যাইনি। এরই মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি। এখন কোথায় আছি কেউ ঠিক করে বলতে পারছি না। জিজ্ঞেস করে জানা গেল রাজধানী মার্কেটের সামনে। এ অবস্থার মধ্যেও লেখক পিয়াস মজিদ, শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ জগতের প্রায় সব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। কেউ শুনছে কি না, সেদিকে খেয়াল নেই। মনে হলো একমাত্র সিএনজিওয়ালাই মন দিয়ে শুনছে। একবার মনে হলো এই সিএনজিতে আর সদরঘাটে যাওয়া হবে না। হেঁটে গেলেই ভালো হয়। ঢাকা শহরে কিছু অটো এবং অটোরিকশা আছে, যারা বড় রাস্তায় যেতে পারে না। ভাই সাহেবের তেমন কোনো সমস্যা আছে কি না জানি না। তবে মনে হয়নি সদরঘাট যেতে তিনি আর বড় রাস্তা ধরেছিলেন। এরই মধ্যে একবার বললেন যে চরে নামিয়ে দেবেন। তারপর একটু হাঁটলেই জায়গায় যাওয়া যাবে। সদরঘাটে কোনো চর আছে, তা–ও জীবনে প্রথম শুনলাম। যাই হোক প্রায় দুই ঘণ্টায় শেষ পর্যন্ত যে পৌঁছাতে পেরেছিলাম, তাতেই সবাই খুশি। নামার সময় সালাম জানালাম। বললাম, ভাইজান ভালো থাকবেন। আর কোনো সমস্যায় পড়লে রশিদ ভাইকে জানাবেন।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

সুরভীর সঙ্গে এক রাত
আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল সুরভী। সবাই হেসে উঠল তাকে দেখে। সে–ও নিশ্চিত ছিল যে আমরা আসছি। কারণ, আমাদের আগে চৈতী ও ফাল্গুনী এসেছে। তাদের কাছেই সবার কথা জেনেছে। আমরা যখন এলাম, তখনো মৌসুমী ও জাফর আসেনি। জানতে চাইল তারা কেন দেরি করছে। বললাম, মৌয়ের শুটিং আছে। শেষ করে আসবে। আর জাফর সাদিক আসবে সাতটার খবর পড়ে। বলল, রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, ওরা কি ঠিক সময় আসতে পারবে? আজকের দিনটায় কাজ না রাখলে কী হতো। ইচ্ছে থাকলেও সব সময় দেরি করা যায় না। সবার কথা ভাবতে হয়। তাই অনেক সময় দেখা না হলেও চলে যেতে হয়। এমন কথাবার্তার মধ্যেই মৌসুমী এসে গেল। মৌসুমীকে দেখেই ওর গলা জড়িয়ে আদর করল। বলল, জাফরটা যে কি এখনো এল না। ওর সঙ্গে বোধ হয় আজ আর দেখা হবে না। সত্যি সত্যি জাফরের সঙ্গে আর দেখা হলো না। সুরভীর খুব মন খারাপ হলো। সেই সঙ্গে আমাদেরও।

অনেক দিন পর সবার একসঙ্গে হওয়ার কথা ছিল। সেটা আর হলো না। বলল, হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হও। তোমাদের খাবার দিচ্ছি। ডাইনিং টেবিলে খাবার দেওয়া হলো। মেন্যুতে ছিল ইলিশেরই তিন পদ। ইলিশ ভাজা, ইলিশ ভুনা ও ইলিশের ডিম। আমরা জানি যে এটা ইলিশের সিজন। আমাদের জানা কথাটাই সুরভী বলল যে ইলিশের সিজন বলে ইলিশ একটু বেশি দিলাম। সঙ্গে সবজি, ডাল, সালাদ আছে। যার যেটা ভালো লাগে নিজের বাড়ি মনে করে খাও। লজ্জা কোরো না। তারপরও দেখি রশিদ ভাই, পিয়াস ভাই ও ফাল্গুনী লজ্জা পাচ্ছে। তোমাদের ভাইয়া থাকলে হয়তো ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারতাম। বললাম, আর কত খাব। এটাই তো অনেক।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

খাওয়া শেষ হলো। সুরভী বলল, তোমরা মনে হয় কেউ বাসা থেকে আসোনি। যার যার দিনের কাজ সেরে এসেছে। তাই এখন আর দেরি না করে শুয়ে পড়ো। সুরভীর কথাই ঠিক। প্রায় কেউ বাসা থেকে আসেনি। সবাই কিছুটা ক্লান্ত। খাওয়ার পর সেই ক্লান্তি আরও বেড়ে গেল। ঘুমানোর জন্য এসিওয়ালা রুমটা ছেলেদের দখলেই ছিল। কিন্তু সুরভী মুচকি হাসল। বলল, জানো না এখন সবকিছুতে মেয়েরা এগিয়ে। মেয়েরা থাকবে এসিওয়ালা রুমে। ছেলেরা, তোমাদের জন্য আরও দুটি রুম আছে। এসি না থাকলেও বাতাস আছে। চিন্তা কোরো না। ভালো ঘুম হবে। ভোর চারটায় সুরভীর কাছ থেকে বিদায় নিতে হলো। আজ ওর অনেকবার মন খারাপ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হলো এখন। শুধু একবার বলল, আবার এসো। তারপর পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকল সবার চলে যাওয়ার দিকে। মনে মনে হয়তো সেই বাক্যটি বলল, ‘কা তব কান্ত’ পৃথিবীতে কে কাহার। সবাইকে এভাবে চলে যেতে হয়।

প্রিয় পাঠক, এই সুরভী কোনো নারী নয়। ‍সুরভী একটি লঞ্চের নাম। ঢাকা টু বরিশাল চলাচল করে। সেদিন সন্ধ্যায় সুরভীতে ভোর চারটায় বরিশালে পৌঁছেছিলাম।

সে রাতে জাফর সাদিকের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। সে যখন সদরঘাটে পৌঁছায়, তখন সুরভি ছেড়ে দেয়। তাকে পাওয়া গেল বরিশাল টার্মিনালে। সুরভীকে ধরতে না পেরে সে ধরেছিল কীর্তনখোলাকে।

কীর্তনখোলাও একটি লঞ্চের নাম। এটাতে পৌঁছেছিল বরিশাল। এবার সবাই এক হলো। সবার চোখ ঢুলু ঢুলু। এক ধরনের ক্লান্তি চোখে। প্রায় সবারই রাতে ভালো ঘুম হয়নি। তখনো ভোর হতে বাকি। তবে পূর্বাকাশে ভোরের পূর্বাভাস। মসজিদ থেকে ভেসে আসছে মোয়াজ্জিনের আজান। এখান থেকে সবাই যাব এথিনায়।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

এথিনা
গ্রিক পুরাণে জ্ঞান, সাহস ও অনুপ্রেরণার দেবী এথিনা। কিন্তু আমাদের এথিনা তেমন কিছু না। এটা এখানকার একটা হোটেলের নাম। বরিশালে এখনো সূর্যের আলো ফুটতে যতটুকু সময় বাকি, সেটুকু সময় এখানে বিশ্রাম নিতে হবে। এথিনা সবার কাছে নতুন হলেও আমার কাছে পুরোনো। শুধু পুরোনোই নয়। এক যুগের বেশি পুরোনো। প্রকৃতির কী খেলা! নিয়তি কীভাবে এত বছর পর একই মানুষকে একই কাজে একই জায়গায় নিয়ে আসে। সেবারও এসেছিলাম বরিশাল বিভাগের বন্ধু উৎসবে। এবারও তাই। সে যাত্রায় সঙ্গী ছিলেন লেখক ইমদাদুল হক মিলন, মোহিত কামাল ও শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু। দলের নেতৃত্বে ছিলেন কবি ও লেখক দন্ত্যস রওশন। এবারের সঙ্গী পিয়াস মজিদ, মৌসুমী মৌ, চৈতি চক্রবর্তী, জাফর সাদিক, ফাল্গুনী মজুমদার ও শাকিব হাসান। দলের নেতৃত্বে আছেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুমিত আল রশিদ।

কিন্তু সেই কল্পনার এথিনাকে এবার আর পেলাম না। কেমন যেন মনে হলো। এথিনার সামনের-ভেতরের পরিবেশে সব যেন অন্য রকম। কেমন এক নিষ্প্রাণ নিষ্প্রাণ ভাব। শুধু এসবই না মানুষগুলোও কেমন করে যেন বদলে গেছে। প্রায় অনেকক্ষণ হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কারও কোনো সাড়া নেই। বেশ চেষ্টা তদবিরের পর একজনকে পাওয়া গেল। বেচারার চোখেমুখে রাজ্যের বিরক্তি। মনে হলো কোভিড–১৯–এ বারবার কোয়ারেন্টিন করেছেন। মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকতে থাকতে চান। একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাঁ হাত দিয়ে একটা খাতা বের করলেন। তার ওপর ডান হাত দিয়ে কি একটু ঘষাঘষি করলেন। তারপর বললেন, ওদিকে যান, ওদিকে যান। আমরাও ওদিকে–ওদিকে গেলাম। আরেকটু ঘুমের আশায় দ্রুতই শুয়ে পড়লাম। রুমে শাকিব ও সাদিক নামে দুজন বিশিষ্টজন আছেন। আশফাক ও পিয়াস নামে দুজন নিরীহ ব্যক্তি। জাফর ঘোষণা করলেন, তিনি তখনই গোসল করবেন। এর কোনো কারণ আছে কি না জানি না। কিন্তু তিনি যখন করবেন, সেটা তো করতেই পারেন। উনি গোসল করেন। শাকিব রুমে এটা–সেটা করেন। আমি আর পিয়াস ভাই ঘুমানোর চেষ্টা করি। প্রায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। ঠিক মতো বিশ্রাম না হলে খারাপ লাগবে। অপেক্ষা করছি সাদিক কখন বের হবেন। কখন দুজন শুয়ে পড়বেন। ওমা! জাফর ঠিকই বেক হলেন। কিন্তু তাঁরা দুনিয়ার গল্প জুড়ে দিলেন। ঘুমের কোনো খবর নেই। একবার মনে হলো জাফরকে বলি যে ভাইজান কথা না বলে শুয়ে পড়েন। পরক্ষণেই মনে হলো উনি বড় সাংবাদিক! একটি বেসরকারি চ্যানেলে জ্বালাময়ী খবর পড়েন। শেষে না খবরে বলে দেন—কথা বলা মানুষের মৌলিক অধিকার। মৌলিক অধিকারের জন্য একাত্তরে জীবন দিয়েছি। আজ আশফাক ভাই সেই অধিকার হরণ করতে চান। তাঁর বিরুদ্ধে গণ–আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া আমাদের মুক্তি নেই। আসুন, সবাই রাজপথে নামি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।

এসব চিন্তা করে চুপ করে থাকলাম। কোনো কথা বললাম না। মনেরে বুঝ দিলাম—ওরা যে কথা বলবে, আমি যে ঘুমাতে পারব না। এই সবই তো কপালে লেখা আছে। লেখা ছাড়া তো কোনো কিছুই হয় না। যাই হোক, ঘুম হলেও সকাল সকাল উঠতে হবে। না হলেও উঠতে হবে। কারণ, আমরা এসেছি বরিশাল বিভাগীয় বন্ধু উৎসবে। এ অঞ্চলের ১১টি বন্ধুসভার বন্ধুরা উৎসবে আসবে। ভোর না হতেই কোনো কোনো বন্ধুসভা চলে আসবে। তবে আমাদের এসব নিয়ে চিন্তা না করলেও হবে। রশিদ ভাই খুবই তৎপর। চারদিকে খেয়াল রাখেন। সবই সামলে নেবেন। আর তার সঙ্গে মৌসুমী তো আছেই।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

ফারজানার সাথে এক দুপুর
ঘুম হলো কি না জানি না। হঠাৎ শাকিবের চিৎকার। ভাই ওঠেন ওঠেন। গোসল করেন। ফারজানারা অপেক্ষা করছে। তাড়াতাড়ি যেতে হবে। রেডি হয়ে বের হলাম। রশিদ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলো না। তিনি কখন গেছেন, তিনি ছাড়া কেউ জানে বলে মনে হয় না। দাঁড়িয়ে আছি নারী বন্ধুদের জন্য। পাশেই রয়েল হোটেল। সেখানে নাতশা প্রস্তুত। মেয়েদের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। একজন বলল মেকআপ করছে। এখন আর সাড়া পাবেন না। নাশতা করছি। এরই মধ্যে মৌসুমী এল। ও নাশতা করল না। মৌসুমীসহ আমরা ফারজানাদের বাড়ি এলাম। ওমা! দেখি গেটে সবাই ফুল-ফিতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ যেন বরপক্ষের জন্য কনেপক্ষের অপেক্ষা। ভাবলাম ভালোই হলো সুরভীর থেকে ফারাজানাদের বাড়ি সময়টা ভালোই কাটবে। নিশ্চয় দুপুরে একটা জমকালো লাঞ্চসহ অনেক কিছু হবে।

বিয়েবাড়ি বলে কথা। শুনেছি বিয়েতে এক লাখ কথা খরচ হয়। সেই কথা শুরু করলেন রশিদ ভাই। এ দেশে তাঁকে চেনে না, নাম শোনে নাই, এমন মানুষ থাকার কথা না। আর শুরুটাও করলেন বর-কনের প্রসঙ্গ দিয়ে। সবাই মজা পেয়ে হাসতে থাকল। কথায় বলে, কথার আছে—শতেক বাণী, যদি কথা বলতে জানি। কথা যেন আর শেষ হয় না। একের পর এক আশফাক, মৌ, ফাল্গুনী, জাফর, চৈতী, পিয়াস, শাকিব কথা বলললেন। একেকজনের কথা শুনে মনে হচ্ছে, সর্বনাশ! বাংলা ভাষায় এমন ভালো কথা এত দিন কোথায় ছিল! সত্যিই কথাগুলো শুধু ভালোই না অসম্ভব ভালো। সবাই পিনপাতন নীরবতায় মুগ্ধ হয়ে শুনেছিল। আজ প্রথম মনে হলো ভাষার জন্য জীবন দেওয়া বৃথা যায়নি।

এক শিক্ষকের গল্প শুনেছিলাম, তিনি তাঁর এক ছাত্রকে ১০০ নম্বরে ১১০ দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ছেলেটি ভালো আরও কলাগাছ। সেই শিক্ষককে একটা কলাগাছ দিলে ১০ নম্বর দিতেন। ছেলেটা পরীক্ষা না দিয়ে ১১টি কলাগাছ দিয়েছিল। ফারজানাদের বাড়ির মানুষ এত ভালো যে তাদেরও ১০০ নম্বরে ১১০ দিতে হবে। এখন ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারের যুগে তারা এমন নীরবতায় কথা শুনেছে সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।

এ তো গেল বরপক্ষের কথা। কনেপক্ষ কেন থেমে থাকবে। তারাও গান, কবিতা, নাটক দিয়ে মুগ্ধ করল সবাইকে। বাল্যাবিবাহের একটি নাটকে দারুণ অভিনয় করল সুমাইয়া আক্তার, নাজমুন নাহার, লামিয়া আক্তার, নাঈমুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, ফারহান আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও জীবন হাসান।
বিয়েবাড়িতে গান হবে না, তা তো হতে পারে না। ‘মনো মোর মেঘের সঙ্গী’ রবীন্দ্রসংগীতের সঙ্গে মুগ্ধকর নৃত্য করল মিজান হোসেন।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

শান্তাকে যারা কথা দিয়েছিল, তারা কেউ কথা রাখেনি। তাই হয়তো গভীর বেদনায় মনের অজান্তেই গেয়ে উঠল, ‘কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না।’

কষ্ট-বেদনার কত যে রং, তা বোঝা যায় মানুষের গানে। রাকিবুল রিফাত শোনাল ‘বন্দে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে’। এ গানের আগে জনাতাম না যে পিরিতিও শিখতে হয়। এ গানেরই পরের অন্তরাগুলোয় আছে ‘ইটের ভাটায় দিয়া কয়লা আগুন জ্বালাইছে, বিচ্ছেদের আগুনে পুড়ে কলিজা আঙ্গার!’ ওবে বাবা! কী কঠিন কথা।

বিথী শর্মা বণিক গাইল ‘এই মন তোমাকে দিলাম’। তাকে অনেক ধন্যাবাদ যে মন দেওয়ার পরও এ অনুষ্ঠানে আসতে পেরেছে। বিয়েবাড়ির আয়োজন বলে কথা। ‘জন্মেছি এখানে আমি’ গানের সঙ্গে নৃত্য করল মাহমুদুল হাসান। আবৃত্তি পলাশ তালুকদার, লোকসংগীত লোকমান হেকিম, দেশাত্মবোধক গানের সঙ্গে নেচে দেখাল মো. রিয়াজ। নাচ, গান, কথা—সব মিলিয়ে এক বৈচিত্র্যপূর্ণ আনন্দধারা। এসব চলতে চলতে দিনের প্রায় সবটুকু চলে গেল। আরও পরিবেশনা ছিল।

সময়ের অভাবে দেখা হলো না মোস্তফা জামান সুজনের আঞ্চলিক ভাষায় পুঁথিপাঠ, শিবলী নোমান সিজারের-মান্না, ওমর সানি ও বাপ্পারাজের অভিনয় অনুকরণ, মাহসিনের ম্যাজিক। আরও যাদের অনুষ্ঠান দেখা হয়নি, নিশ্চয়ই অন্য কোনো অনুষ্ঠানে তাদেরটা দেখা হবে।

প্রিয় বন্ধুরা, ফারজানা আর কেউ না, এটা একটা কমিউনিটি সেন্টার। কোনো বাবা হয়তো তাঁর আদরের কন্যার নামে নাম রেখেছেন ফারজানা কমিউনিটি সেন্টার। এখানে গত ৫ সেপ্টেম্বর বরিশাল বিভাগের ১১টি বন্ধুসভার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় দুই শ বন্ধুর অংশগ্রহণে বরিশাল বিভাগীয় বন্ধু উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুমিত আল রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক মৌসুমী মৌয়ের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে কয়েকজন অংশগ্রহণ করেছিলাম। এই হলো ফারজানার সঙ্গে এক দুপুরের ইতিহাস।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

তিরিশ গোডাউন
অনেক পরিকল্পনা ছিল। কবি জীবনানন্দের বাড়িতে যাব। তিনি যেখানে হাঁটতেন, গল্প করতেন—সেসব দেখব। আরও কিছু জায়গায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দ্রুতই সন্ধ্যা নেমে এল। তেমন কোথাও যাওয়া হলো না। শেষে গেলাম তিরিশ গোডাউন। কোনো জায়গার এমন অদ্ভুত নাম এই প্রথম শুনলাম। জীবনে প্রথম সেখানে গেলাম। এটাই বরিশাল শহরের বিনোদনের জায়গা। এখানে নাকি বিশুদ্ধ গরুর দুধের চা পাওয়া যায়। যদিও বিশুদ্ধ গরুর ‍দুধের চা খুঁজে পেলাম না। ঢাকায় যেমন হাতিরঝিলে হাতি নেই। মতিঝিলে মতি নেই। তেমনই তিরিশ গোডাউনে ৩০ গোডাউন নেই। তারপরও গোডাউনের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মোবাইল বের করলাম। মোবাইলের স্ক্রিন কালো অন্ধকার। একটুও চার্য নেই। সারা দিন একটুও মন খারাপ হয়নি। এই ভর সন্ধ্যায় দারুণ মন খরাপ হলো। সন্ধ্যাটা যেন মাটি হয়ে গেল। চেষ্টা করলাম কোনো দোকান থেকে একটু চার্য দিতে। প্রায় প্রতিটি দোকানে জিজ্ঞেস করলাম চার্য দেওয় যাবে কি না। কেউ আশার বাণী শোনাল না। যখন প্রায় নিশ্চিত হলাম যে এখানের স্মৃতি আমার কাছে বিস্মৃতি হয়ে থাকবে। তখনো একটা দোকানে জিজ্ঞেস করতে বাকি। খুব নিরাশ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম ভাই একটু চার্য দেওয়া যাবে। বলল, দেখি কি মোবাইল। চার্যার বের করল। মিলে গেল। শেষ পর্যন্ত চার্জ দিতে পারলাম। এ দোকানটা সবার থেকে আলাদা। ছোট মাটির পাত্রে চা দেওয়া হয়। পাত্রগুলো আগুনে পোড়ানোর মতো গরম করে ফ্লাক্সের মতো বাক্স থেকে চা ঢালা হয়। ঢালার পর চা ফুটতে থাকে। তারপর কি যেন একটা গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। দারুণ স্বাদ। এক কাপ খাওয়ার পর আরেক কাপ নেব এমন সময় দেখা বন্ধু উজ্জ্বল ও প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

কীর্তনখোলা
নিজের মধ্যে কিছুটা জীবন ফিরে এল। খুবই একা লাগছিল। উজ্জ্বল, প্রিয়াঙ্কাসহ আবার চা খেলাম। গল্প করলাম। মোবাইলে চার্জ হতে থাকল। এদিকে রশিদ ভাইয়েরা কোথায় গেছে জানি না। উজ্জ্বলকে বললাম ঢাকা থেকে যারা এসেছিল, তাদের হারিয়ে ফেলেছি। ভাইয়া হারিয়ে ফেলেননি। তারা এই কীর্তনখোলা নদীতে নৌবিহার করছেন। এই নদীর নাম কীর্তনখোলা! একেবারে আত্মহারা হয়ে গেলাম। প্রথম থেকেই তিরিশ গোডাউন নামটা খটমট লাগছিল। কোনোভাবে মেনে নিতে পারছিলাম না। তারপর বরিশাল বন্ধুসভার সভাপতি পিয়াস বলল, ভাইয়া গোডাউন ৩০ না, ২৭টা। এ কথা শুনে রাগ আরও বেড়ে গেল। কিন্তু এই তিরিশ গোডাউন এলাকার উপকূলজুড়ে কীর্তনখোলার মতো একটি রোমান্টিক নদীর বয়ে যাওয়ার জন্য তিরিশ গোডাউনকেও ভালোবেসে ফেললাম। ছোটবেলায় এই নদীর নাম বইয়ে পড়েছি। তখন থেকেই এই নদীকে ভালো লাগা, ভালোবাসা। তিরিশ গোডাউনের তীর এলাকা বহুদূর পর্যন্ত ইট-বালু দিয়ে গাঁথা। ওপরে আবছায়া নীলাকাশ। নদী থেকে বয়ে আশা মৃদু ঠান্ডা বাতাস। সন্ধ্যাটা অন্য রকম মনে হচ্ছে। ওরা বলল ভাইয়া তীর দিয়ে হাঁটি, ভালো লাগবে। এমনিই ভালো লাগছে। আর হাঁটলে তো আরও ভালো লাগবে। উজ্জ্বল, প্রিয়াঙ্কাসহ তীরের দুই দিকে অনেকক্ষণ হাঁটলাম। যদি তাদের দেখা পাই। সেই দেখা আর হলো না।

বরিশালে বন্ধুসভার কর্মশালা
ছবি: প্রথম আলো

ঘরে ফেরা
দিনের কোলাহল, রাতের নীর্জনতা, আনন্দ আয়োজন এক সময় সবই শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত সবাইকে ঘরে ফিরতে হয়। কীর্তনখোলার তীরজুড়ে তখন নেমে এসেছে রাতের অন্ধকার। তিনজন ফিরে এলাম এথিনায়। সেখানেও সবাই নেই। কেউ কেউ চলে গেছে লঞ্চঘাটে। এথিনার লবিতে দেখা মৌসুমীর সঙ্গে। ভাইয়া মিষ্টি কিনবেন। চলো কিনি। রুম থেকে ব্যাগ নিয়ে মিষ্টি কিনতে গেলাম। সঙ্গে যুক্ত হলো ফাল্গুনী। সে–ও কিনবে। তিনজনে মিষ্টি নিয়ে লঞ্চে গেলাম। ফারজানা থেকে বেরিয়ে এই প্রথম সবাই এক হলাম। পিয়াস মজিদকে তো প্রায় দুপুরে লাঞ্চের পরই হারালাম। লেখক মানুষ। দুনিয়ায় তাদের নারী-পুরুষ ভক্তের অভাব নেই। কোথায় যে চলে গেল জানি না। তারপর দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যায় দেখো হলো। তা–ও তিরিশ গোডাউনে। স্টার চায়ের দোকানে। এখানে ৩০ টাকায় এককাপ মটকা চা পাওয়া যায়। এই দুর্লভ চা তাকে খেতে বললম। বিশেষ কিছু ছাড়া এই মাটির পৃথিবীর খুব বেশি কিছু লেখকদের টানে না। সেখানে ৩০ টাকা দামের তুচ্ছ মটকা চা তার কাছে কিছুই না। তিনি খেলেন না। যার যার কেবিনে ব্যাগ রাখা হলো। তারপর ড্রয়ইং রুমে একটু আরামে বসা। সকালে শাকিবের ডাকে ঘুম থেকে ওঠার পর আর এমন আরাম করে বসা হয়নি। বরিশালে বসেই মনে পড়ল বরিশালের বিখ্যাত কবি জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত কবিতার পঙক্তি—‘আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।’ সারা দিনের ক্লান্তির পর মনে হচ্ছে আমাদের দু-দণ্ড শান্তি দিচ্ছে বরিশাল ঘাটের কীর্তনখোলা–২ লঞ্চের এই বৈঠক খানা। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছি। গল্প করছি অনুষ্ঠান নিয়েও কথা হলো। এরই মধ্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সেই সুন্দর ছেলেটি ফিরে এসেছে। যার নাম সোহেল সাকিব। নিশ্চয়ই সে কোনো নারীর প্রেমে ফিরে আসেনি। এসেছে রশিদ ভাইদের প্রেমে। ফিরে আসার কথা বলছি এ জন্য যে সুরভীতে যাওয়ার সময়ও সে ভীষণভাবে সঙ্গ দিয়েছিল। আজ একটু দ্রুত রাতের খাবার শেষ করে শুয়ে পড়লাম। বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ এক খাটেই ছিলাম। ঘুম হয়েছিল কি না জানি না। তবে সকালে উঠে তাকে আর দেখিনি। না দেখাতে মনে হলো ঘুম হয়েছিল। তা না হলে তো দেখতে পেতাম। এ এক অদ্ভুত রহস্যময় সভাপতি। সারা দিন-রাত ঠিক থাকে। সকাল হলে পাওয়া যায় না। বরিশাল এথিনায়ও সকালে তাঁকে পাইনি। আজ এই কীর্তনখোলায়ও পেলাম না। মানুষ তো আশায় বেঁচে থাকে। এই আশায় আছি, নিশ্চয়ই কোনো দিন হয়েতো সকালেও পাওয়া যাবে।

বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, নলছিটি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, গৌরনদী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলাপড়াসহ বরিশাল বিভাগের ১১টি বন্ধুসভার সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মো. হাবিবুল্লাহ, মেহেদি হাসান পিয়াস, সুজন রায় মনতোষ, মো. আবির হোসেন, সাথী আক্তার, জাহিদা আক্তার, শফিকুল ইসলাম জয়, শ্রীকৃষ্ণ চক্রবর্তী, জাহানারা খান এবং সাধারণ সম্পাদক জি এম ইকবাল মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম, গোপাল রায় অভি, মো. সাব্বিার হোসেন রানা, ইমরান খান, মেহেদি হাসান রিফাত, শাফিউল মিল্লাত, এম আর মহসীন, মহসীন হোসেন, সাদিয়া আফরিন ও রফিকুল ইসলাম রনিসহ প্রায় দুই শ বন্ধুর উপস্থিতিতে শেষ হলো একটি প্রাণবন্ত বন্ধু উৎসব।

আনোয়ার হোসেন, মো. হাবিবুল্লাহ, মেহেদি হাসান পিয়াস, মো. উজ্জ্বল রহমান, প্রিয়াংকাসহ এমন কিছু মানুষের কথা একটু বিশেষভাবে বলতে হয়, যারা নিরবধি পাশে থেকেছে। নানা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এই মানুষগুলোসহ বন্ধুদের নিরন্তর শুভকামনা, শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

লেখক: সাংবাদিক ও সংগঠক। উপদেষ্টা, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা।