ফিল্টার

ফিল্টারঅলংকরণ: তুলি


‘স্মোক করেন?’ ইন্সপেক্টর আহসানের প্রশ্ন শুনে চমকে ওঠে আসিফ। দেখতে পায় ইন্সপেক্টর তার দিকে সিগারেটের প্যাকেট বাড়িয়ে দিয়েছে।
‘নো থ্যাংকস। আমি আসলে খুব একটা স্মোক করি না। মাঝেমধ্যে করলেও বেনসন ছাড়া অন্য ব্র্যান্ড স্মোক করি না’, আসিফ উত্তর দেয়৷
এমন মুহূর্তেও কেউ স্মোক করার অফার করতে পারে ভেবে আসিফ বেশ অবাক হয়! তার স্ত্রী মিতু গত রাতে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে বাসায় ছিল না, সকালে ফিরে এসে লাশ দেখতে পায়। এরপর পুলিশে খবর দেয়।
সিগারেটটা ধরিয়ে একরাশ ধোঁয়া আকাশের দিকে উড়িয়ে ইন্সপেক্টর জিজ্ঞেস করেন, ‘অকেশনাল স্মোকার। বন্ধুদের সাথে আড্ডায় নাকি ব্যবসায়িক বিশাল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নার্ভাস অবস্থায়, কখন?’

‘দুইটাই, নার্ভাস থাকলে মাঝেমধ্যে দু-এক টান দেওয়া হয়। কিন্তু পুরোটা শেষ করা সম্ভব হয় না।’ আসিফ উত্তর দেয়।
ইন্সপেক্টর আহসান মাথা নাড়েন। আকাশের দিকে তাকিয়ে কোনো জটিল সমীকরণ মেলাতে থাকেন যেন। কিছুক্ষণ পর জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি তাহলে কাল রাতে বাইরে ছিলেন?’
‘হ্যাঁ, সকালে বাসায় এসেছি।’
‘এসে করেছেন?’
‘কী?’
‘স্মোক?’
‘না, কেন!’

‘এমনিই!’ আহসান সাহেব আর কথা না বাড়িয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে যান।
স্পট থেকে সব আলামত সংগ্রহ করার পর যাওয়ার সময় আবারও আসিফের দিকে এগিয়ে আসেন তিনি।
‘জানালার বাইরেই একটা আধ খাওয়া বেনসন সিগারেটের ফিল্টার পেলাম। মনে হলো যেন গতকাল রাতেই কেউ সেটা ফেলেছে। আমরা অবশ্য বেশ যত্ন করে তুলে নিয়েছি। ডিএনএ টেস্ট করলে কিছু একটা তো জানা যাবেই!’ এরপর কিছুক্ষণ থেমে আবার যোগ করেন, ‘তবে আপনার তো কোনো ভয় নেই আসিফ সাহেব, আপনি তো বাসায়ই ছিলেন না!’
আসিফ কোনো উত্তর দিতে পারে না। সামান্য একটা সিগারেটের ফিল্টার…
আসিফের ভাবনার রাজ্য যেন ক্রমে শূন্য হয়ে যেতে থাকে।