একটি শালিক পাখি
গাছের ডালে বসে আছে,
একটু পর একটা লাফ দিল
আরেকটি ডালে বসল
সেখান থেকে আরেকটি ডালে।
এবার আরও একটি শালিক এল।
এখন ডালে দুইটি শালিক।
একটু পর আরও দুটি শালিক এল।
এখন ডালে চারটি শালিক।
ডাল থেকে দুটো শালিক উড়ে গেল।
ডালে থাকল দুটো শালিক।
উড়ে এসে শালিক দাঁড়াল ঘাসের ওপর।
ঘাসের ফঁকে ফাঁকে খাবার খুঁজতে লাগল।
ডাল থেকে আগের দুটো শালিকও উড়ে এল।
তারাও দাঁড়াল ঘাসের ওপর।
চারটা শালিক মিলে খাবার খুঁজতে লাগল।
ডালে এখন আর কোনো শালিক নেই।
দুপুরবেলা।
হালকা বাতাস বয়ে চলেছে।
গাছের পাতা কাঁপছে।
আকাশে একটু মেঘ, একটু রোদ।
রোদ এলে গাছের ছায়া পড়ছে। পূর্ব দিকে।
এবার একটি কাঠবিড়ালি এল।
লাফিয়ে লাফিয়ে।
ছোট একটা গাছে উঠে গেল।
একটু পর নেমে গেল।
একটু দূরে আরেকটি কাঠবিড়ালি ছিল।
গাছ থেকে কাঠবিড়ালিটি নেমে তার কাছে এল।
এবার দুটো কাঠবিড়ালি।
তারা ঘাসের ভেতর বাদাম খুঁজছে।
এখানে অনেক বাদাম।
মাঠে যারা আসে, তারা বাদাম খায়।
দু–একটা পড়ে যায়।
ঘাসের বুকে।
পড়ে যাওয়া বাদাম কেউ তোলে না।
কাঠবিড়ালি সেই বাদাম তুলে নেয়।
একটি, দুটি করে অনেক বাদাম।
জমতে থাকে কাঠবিড়ালির বাসায়।
হঠাৎ দুজন ছেলেমেয়ে এল।
কাঠবিড়ালি দুটি ভয় পেল।
পালিয়ে গেল।
আর দেখা গেল না।
গাছের ডালে একটি কাক।
বসে বসে ডাকছে। কা কা!
গাছের ডালে একটি চড়ুই।
বসে বসে ডাকছে। চি চি!
একটি চিল উড়ে এল।
একটি, দুটি, তিনটি করে অনেক চিল এল।
তারা আকাশে উড়ছে।
গাছের ডালে বসছে না।
বাগানে কিছু ফুল ফুটেছে।
লাল ফুল। হলুদ ফুল। নীল ফুল।
সবুজ পাতা। সাদা ফুল। খুব ভালো লাগছে দেখতে।
ফুলে কিছু একটা এসে বসল।
খুব ভালো দেখতে।
তাদের দুটো ডানা আছে।
ডানায় রং করা।
বাহারি রং।
তারা পাখি নয়।
তারা ফুলের মধু খেল।
মধু খেয়ে আরেক ফুলে উড়ে গেল।
কী ভালো ওরা দেখতে!
মাঠের পাশে কিছু জল জমে আছে।
পাখিরা উড়ে এল জলের ধারে।
অনেক পাখি।
তারা জল মাখছে। জলে বসে ডানা নাড়ছে।
ডানার ঝাপটা লাগছে জলে। কী যে ভালো লাগছে দেখতে!
যে জলের ফোয়ারা! পাখির ডানায় ছোট ছোট ফোয়ারা!
জল মেখে ভিজে গেল তারা। উড়ে রোদে এসে দাঁড়াল। এখন মেঘ সরে গেছে।
আকাশে অনেক রোদ।
রোদে পাখিদের ভেজা পালক শুকিয়ে গেল।
কাঠবিড়ালিটা আবার এল।
লাফিয়ে লাফিয়ে।
একটি বড় গাছ বেয়ে উঠে গেল।
তরতর করে।
গাছের গায়ে একটা কোটর আছে।
এটা কাঠবিড়ালির ঘর।
সে এই ঘরে ঘুমায়, খাবার রাখে।
একঝাঁক পাখি জল মেখে উড়ে গেল।
আরেকঝাঁক পাখি উড়ে এল।
এবার তারাও জল মাখছে।
কী যে খুশি জল মাখতে পেরে!
কিচিরমিচির ডাকছে, জল ছুড়ছে, ডানা দুলিয়ে দুলিয়ে।
খুব জোড়ে ছুটে পালাল কাঠবিড়ালি।
দূরে। এবার থামল। একটা বাদাম পেয়েছে। সামনের দু–পায়ে বাদামটি ধরল। পেছনের দু–পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াল। এবার মুখে ঢুকিয়ে দিল।
মুখ নাড়ছে। মুখ নাড়ছে। মুখ নাড়ছে। বাদামটা খাওয়া হয়ে গেল। এবার আরও একটি বাদাম দেখেছে। পাশের কাঠবিড়ালি। সে এই বাদামটি খেল। বাদাম খেতে খুব মজা।
গাছ থেকে শুকনো পাতা ঝরে পড়ছে। শীতকাল। মাঘ মাস। বাতাসে শীতল পরশ। দুপুরবেলাতেও শীত লাগছে। হালকা শীত। ছেলেমেয়েরা সোয়েটার পরে রয়েছে।
কোথা থেকে আরও তিনটি কাঠবিড়ালি এল।
লাফিয়ে লাফিয়ে। এবার পাঁচটি কাঠবিড়ালি হলো।
কাঠবিড়ালি জল খেল। বাদাম খেয়ে জল খেল। লোমশ লেজ নাড়াতে নাড়াতে জল খেল।
একটি কাঠঠোকরা পাখি উড়ে এল। চিকন ঠোঁট। বেশ বড়। গাছের গায়ে ঠোঁট দিয়ে ঠোকর দিতে থাকল। ঠক ঠক! ঠক ঠক!
গাছটিতে দুটি কাঠবিড়ালি উঠল। কাঠঠোকরা গাছের গায়ে কোটর করে দেবে। কাঠবিড়ালির ঘর হবে। পাখির ঘর হবে। কী ভালোই না হবে!
সাতটি শালিক উড়ে এল। বসল গাছটির ডালে। ওরা এখন দশজন। কী দারুণ লাগছে দেখতে!
গাছজুড়ে কিচিরমিচির ডাক। চি চি ডাক। ঠক ঠক করছে কাঠঠোকরা। বড় ভালো লাগছে শুনতে। ঝরা পাতার ওপর পা পড়ছে। পাতাগুলো শুকনো। মচমচ মচমচ করছে। পাতা ভেঙে মচমচ মচমচ করছে।
চারদিকে গাছ আর গাছ। মাটিতে ঘাস আর ঘাস। আকাশে এই মেঘ, এই রোদ। শীতকাল তো! কিছু ঘাসের ডগা হলুদ হয়ে গেছে। কিছু ডগা সবুজ আছে। তবু ভালো লাগছে দেখতে।
একটু একটু করে রোদ কমছে। পূর্ব দিকে গাছের ছায়া পড়ছে। বড় ছায়া। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো। ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরে গেল। পাখিরা গাছের ডালে এসে জড়ো হলো। আলো কমে গেল।
একটু পরে রাত নামল। পাখিরা কিচিরমিচির করছে না। পাখিরা ঘুমিয়ে পড়েছে। গাছের ডালে।
কাঠবিড়ালি ঘুমিয়ে পড়েছে। গাছের কোটরে।
চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলো পড়ছে মাটিতে।
ঝিঁঝি পোকা ডাকছে। প্যাঁচা ডাকছে। শিয়াল ডাকছে। কুকুর ডাকছে। ঘেউ ঘেউ।
রাত শেষ হলো। মোরগ ডাকছে। কক কক! কক কক!
আলো ফুটেছে। কাক ডাকছে। কা কা! কা কা!
সকাল হলো। পাখির কিচিরমিচির শুরু হলো। নতুন একটি দিন শুরু হলো। নতুন একটি দিন।