দেখে যা অনিমেষ

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

কেমন করে বেঁচে আছি একবার দেখে যা অনিমেষ—
ঘরে চাল নেই, হাঁড়ি চড়ে না উনুনে আজ দুই দিন,
শরীরে কঠিন ব্যামো, যন্ত্রণা সঙ্গী প্রায় নিত্যদিন,
ঋণ করার জায়গাটুকু আর অবশিষ্ট নেই কোথাও;
পুরোনো সেই বসতভিটাও বন্ধক আছে মন্ডলের কাছে,
মৌলিক চাহিদাগুলো মগজে কিলবিল করে প্রতিমুহূর্ত,
ক্ষুধার জ্বালায় ভুলে গেছি সকল জাতপাত—
কখনো মন্দিরের প্রসাদ, কখনোবা মসজিদের তবারক খাই নিবারণে,
দুর্ভিক্ষ আর আমি এখন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, চৌকাঠ পেরোতে যতটা বাকি।

একবার এসে দেখে যা আমার এই পড়ন্ত বেলা;
যেখানে চলছে শুধু যন্ত্রণা, ক্ষুধা আর দারিদ্র্যের সীমাহীন খেলা,
নিরাশায় হতাশা বেড়ে গেছে হিমালয়সম,
ভাগ্যটা যেন দুর্ভাগ্য হয়ে অন্তর পোড়া গন্ধ ছড়ায় প্রতি নিশ্বাসে।
জানিস! ঠোঁট দুটো আর হাসে না বহুদিন বহুক্ষণ!

ভুলে গেছি কিভাবে কাঁদতে হয়;
ক্লান্ত শুুুষ্কদুচোখে নেই কোনো কান্নার নোনাজল।
সমাজ! সে তো বড্ড স্বার্থপর, সুখী মানুষের পিছু ছুটে সারাক্ষণ,
অন্নহীনে অন্ন, বস্ত্রহীনে বস্ত্র দেয়া ভুলে গেছে বহুকাল।
জানি না আর কতটা দুর্বোধ্য চিহ্ন আঁকা আছে ভালে,
পাপ পুণ্যের হিসাবটা বড্ড জটিল,
সুইসাইড! সে তো আটকে গেছে ধর্মের জালে,
জীবনযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে মুখোমুখি হই মানবতার সঙ্গে নিত্যদিন।

বেঁচে থাকার তাগিদে নিমগ্ন;
তাই এখন দিন, ক্ষণ, সময়ের জন্য দিনপঞ্জি প্রয়োজন পড়ে না,
তবুও একবার এসে দেখে যা মহাশ্মশানের যজ্ঞ।
হয়তো তোর কোনো পুণ্য বাঁচতে দিতে পারে আমায়,
হয়তো আমিও তোদের একজন হতে পারি,
হয়তো আরও কিছু সময় বেঁচে থেকে দিতে পারি ওপারে পাড়ি...।