জামালপুরের আলোকচিত্রী সাজ্জাদের পথচলা

আর্টওয়াশ ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান
ছবি: সংগৃহীত

‘শুরুটা হয়েছিল মোবাইল ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার মধ্য দিয়ে। তখন আমি উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। ২০১৮ সালের কথা। তখন মোবাইল দিয়ে শখের বশে ছবি তুলতে শুরু করি। ২০১৯ সালে নিয়মিত ছবি তুলতে শুরু করি। এরই মধ্যে আমার তোলা একটি ছবি দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচিত হয়। মূলত এখান থেকেই ছবি তোলার জন্য আমার আগ্রহ দিনে দিনে বাড়তে থাকে।’ বলছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। আমাদের জামালপুর বন্ধুসভার বন্ধু। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শখের আলোকচিত্রী হলেও পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি তোলাকেই এখন তিনি তাঁর পেশা হিসেবে নিয়েছেন।

সাজ্জাদ হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

সাজ্জাদ বলেন, ‘আলো ঝলমলে দিন কিংবা বর্ষণমুখর দিনে ক্যামেরা হাতে বেরিয়ে পরতাম। প্রকৃতির সুন্দর মুহূর্তগুলো ক্যামেরার লেন্সে বন্দী করে ফেলতাম। আমার ছবি তোলার শুরুটা এই প্রকৃতির ছবি দিয়েই। নিজের কোনো ক্যামেরা ছিল না, বন্ধু কিংবা বড় ভাইদের ক্যামেরা ধার করে সে সময় ছবি তুলতাম। ছবি তোলার আগ্রহ আমাকে বারবার বুঝিয়েছে যে আমি পারব। যুক্ত হয়েছিলাম একটি ওয়েডিং ফটোগ্রাফি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে বেশ কিছুদিন কাজ করার পর “পোর্ট্রেট” নামে নিজের একটি ওয়েডিং ফটোগ্রাফির প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাই। পড়াশোনার খরচ অনেকটাই আমি এখান থেকে দিতে পারি এখন। তবে করোনা মহামারির এই নতুন স্বাভাবিক সময়ে পথ কিছুটা থমকে দাঁড়ালেও ভবিষ্যতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখি।’

সাজ্জাদের আগ্রহ স্ট্রিট ফটোগ্রাফি, কনসেপচুয়াল ফটোগ্রাফি, নেচার ফটোগ্রাফি ও ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফি। সাজ্জাদ বিশ্বাস করেন, আলোকচিত্র একটি ভাষা এবং সেই ভাষায় তিনি তাঁর কল্পনার বিষয়গুলো ছবির মাধ্যমে তুলে ধরতে পারবেন। সেই লক্ষ্যেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন।
সাজ্জাদের ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও কম নয়। ২০২০ সালে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের প্রতিযোগিতায় অর্জন করেছিলেন দ্বিতীয় স্থান। একই সালে ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল ফটো অ্যাওয়ার্ডে পেয়েছেন অনারেবল মেনশন। সাজ্জাদের তোলা ছবি জায়গা করে নিয়েছে চিজ ম্যাগাজিনে। ২০২১ সালে এনএসটিইউ ফটোগ্রাফি সোসাইটিতে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন।

২০২১ সালে এনএসটিইউ ফটোগ্রাফি সোসাইটিতে সাজ্জাদ দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন
ছবি: সংগৃহীত

এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু অর্জন রয়েছে সাজ্জাদের। আর্টওয়াশ ওয়াটারএইড বাংলাদেশের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, কমিনিউকেশন অ্যাডভাইজার ও ফিল্মমেকার নুহাশ হুমায়ূনসহ আরও অনেক গুণী নির্মাতা। ভবিষ্যতে একজন প্রতিষ্ঠিত আলোকচিত্রী হিসেবে নিজেকে দেখতে চান সাজ্জাদ।