চোখ: সাইদুল হাসান

প্রতীকী ছবি
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

তুই ওভাবে তাকাসনে আমার দিকে।

তুই ওভাবে তাকালে আমি স্থির থাকতে পারি না। ভীষণ রকম ভূমিকম্প হয় হৃদয়-আকাশে। সিসমোগ্রাফ যন্ত্র ভেঙে চৌচির হয়ে যায়।

দেয়ালে টানানো সেই দাদার আমলের ঝুলঘড়িটার অত্তবড় পেন্ডুলাম চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়, শুধু তোর দৃষ্টি-তাপে।

তোর চোখ যেন আফিম। সেবন করে মাতাল হয়ে যাই। ঘোরের মধ্যে থাকি। কী করব কিছুই বুঝতে পারি না।

তোর চোখের পাপড়িগুলো তিরের ফলার মতো। আমার বুকের বাম পকেটে একমুঠ রোদের মতো গেঁথে থাকে।

তোর ভ্রু যুগল যেন সোনালি চিলের ডানা। যোজন যোজন মাইল দূর পর্যন্ত উড়তে পারে।

কখনো তোর ভ্রু যুগল যেন বাংলার মেঠোপথ। সে পথে হাজার বছর হেঁটেছি। গন্তব্য পাইনি কোনো।

তুই চোখে কাজল পরেছিস কেন? তুই কাজল না পরলেও অনেক সুন্দর তোর চোখ। তোর চোখের গাঢ় কাজল, মায়া বাড়ায়। সে মায়া ছায়ার মতো লেগে থাকে সব সময়। যেমনটি নিজের থেকে ছায়াকে পৃথক করা যায় না।

তোর চোখের সাদায় আমি সবুজ পাতা আঁকি। তোর চোখের টলমল জলে আমি নৌকা ভাসাই পাল তুলে। কোন দিকে যাব, যাই ভুলে। চোখের তারায় আমি নোঙর গাড়তে চেয়েছি। পারিনি কোনো কালে। ডুবে গেছি শুধু অতলে।

তোর রেটিনার অতলে আমি তলিয়ে যাই। উঠতে পারি না কখনো। তল খুঁজতে চাওয়াটা যেন শুধু বিফল।