কীভাবে কাটছে শিক্ষার্থীদের করোনাকাল?

কীভাবে কাটছে শিক্ষার্থীদের করোনাকাল?ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক থমথমে এই পরিস্থিতিতে কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘কীভাবে কাটছে এই করোনাকাল?’ প্রথমে মাথায় পাহাড়সম চাপ অনুভব করি এবং নিজেই নিজেকে শুধাই, ‘একাডেমিক পড়াশোনায় তো অনেকখানি পিছিয়ে পড়ছি। আদৌ কী নির্ধারিত সময়ে গ্র্যাজুয়েট হয়ে চাকরিবাকরি করার সুযোগ পাব?’

করোনাকালে শিক্ষার্থীরাই মনে হয় সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে ভুগছে। প্রতিটি দিন একধরনের অনিশ্চয়তায় কাটছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি বিধায় এই অনিশ্চয়তা বুঝি একটুখানি বেশি!

গত বছরে স্বাভাবিক নিয়মেই পরীক্ষা পাসের মাধ্যমে তৃতীয় বর্ষে পা রেখেছিলাম। এরপর একই বর্ষে এক বছরের বেশি সময় কেটে গেছে! করোনার প্রকোপে পরে না একটা ক্লাস করতে পেরেছি, না কোনো ক্লাস টেস্ট দিতে পেরেছি। মাঝে অবশ্য অনলাইনে শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছিলেন গুটিকয়েক! সেটাও অস্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গত ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চ মাসে আমাদের তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তেমনটা হলে আমরা এখন চতুর্থ বর্ষের পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতাম। গ্র্যাজুয়েশনের একদম কাছাকাছি পৌঁছে যেতাম। অথচ চলমান সংকট আমাদেরকে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

তবে কী জীবন থেকে একটা বছর নাই হয়ে গেল?

আমরা যারা ‘সেকেন্ড টাইমার’ ছিলাম, তাদের দুশ্চিন্তা আরও বেশি! শুরুতে ভর্তি হতে এক বছর নাই। এখন আরও এক বছর। না জানি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে আর কত বছর শেষ হয়ে যায়। যার ফলে পরে গিয়ে হয়তো চাকরি জগতের প্রতিযোগিতায় নামার জন্য খুব একটা সময় হাতে থাকবে না আমাদের।

মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

এই অনিশ্চয়তা আমাদেরকে প্রতিদিন নতুন করে নতুনভাবে দুশ্চিন্তায় ফেলছে। উদ্যমতা হারিয়ে ফেলছি সবাই। তবে কী আমাদের ভিন্ন পথে পা বাড়ানো উচিত? হয়তো ইতিমধ্যেই আমাদেরই অনেকে ভিন্ন জগতে চলেও গিয়েছে।

জীবন নিয়ে হতাশার চরম পর্যায়ে পড়ার আগে কি ক্লাসে ফিরতে পারব আমরা?

লেখক: অনার্স তৃতীয় বর্ষ, পরিসংখ্যান বিভাগ, এমসি কলেজ, সিলেট