আমার চোখে বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

মানবসেবায় নিবেদিত একটি পরিবারে জন্ম নেয় এক শিশু। পরিবারের আদরের ‘খোকা’, পরবর্তীকালে গ্রামবাসীদের ‘মিয়াভাই’, সহপাঠী ও সহকর্মীদের কাছে ‘মুজিব ভাই’, ‘বাঙালির বঙ্গবন্ধু’, বাংলাদেশের ‘জাতির পিতা’ এবং বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের ‘মুক্তির দিশারী’। যাঁর জীবনের মূলেই ছিল বাংলা ও বাঙালির প্রতি প্রাণভরা ভালোবাসা।

মুজিব তাঁর শৈশব থেকেই একটি কবিতার দুটি লাইন গুনগুন করতেন সব সময়—

‘আমার বাংলার মাটি

তোমায় আমি রাখব পরিপাটি।’

ছোটবেলা থেকেই তিনি মাটি ও মানুষকে অনেক বেশি ভালোবাসতেন। তাঁর জীবনের প্রকৃত দর্শনই ছিল—মানুষের প্রতি ভালোবাসা, অন্যায়ের প্রতিবাদ, আর্তের সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়া, বিপদে সবার সামনে থেকে দাঁড়ানো ইত্যাদি। এজন্যই খুব অল্প বয়সেই তিনি ‘মিয়াভাই’ খেতাবে ভূষিত করেন নিজেকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, একটি সংগ্রামের প্রতীক। পরাধীন জাতিকে তিনি স্বাধীনতার সুখ লাভ করিয়েছেন। তিনি পৃথিবীতে এঁকেছেন নতুন সীমারেখার মানচিত্র, আকাশে উড়িয়েছিলেন লাল-সবুজের নতুন পতাকা। এমন এক কালজয়ী মহান নেতাকে পেয়ে বাঙালি জাতি গর্বিত ছিল সব সময়।

এই শেখ মুজিব পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠেন জাতীয় পর্যায়ের বিশাল এক নেতা। ছাত্রজীবন থেকেই শেখ মুজিব রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বারবার দেখিয়েছেন নিজের কঠোর সাধনা ও ত্যাগতিতিক্ষা। তিনি কঠিন এক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন বিজয়ের দিকে। তাঁর জীবন ছিল যেকোনো নাট্যকারের রচিত উত্তেজনাপূর্ণ নাটকের চেয়েও বৈচিত্র্যপূর্ণ।

সারা পৃথিবীর সর্বমহলের কাছে অন্যতম গ্রহণযোগ্য গণমাধ্যম বিবিসি ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিন তাদের নিজস্ব জরিপ পদ্ধতি ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বলে ঘোষণা করে।

বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে নিজের জীবনের চেয়ে অধিক ভালোবাসতেন, বিশ্বাস করতেন। যখন তাঁর কাছের মানুষেরা তাঁকে বলেছেন, ‘তুমি সাবধানে থেকো। কখন কে তোমার ক্ষতি করে বসে!’ তখন মুজিব হেসে বলতেন, ‘আমার এ বুকে কোনো বাঙালি গুলি করবে? আপনি এটা বিশ্বাস করেন?’ কি অগাধ বিশ্বাস ছিল তাঁর বাঙালিদের ওপর। অথচ শেষমেশ তাদের হাতেই তাকে মরতে হলো। সেদিন কি ব্যক্তি মুজিবের মৃত্যু হয়েছিল? নাকি তার বিশ্বাসের?

প্রচার সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা