কোনো এক গোধূলি লগ্নে খোলা মাঠের সবুজ প্রান্তরে আমাদের প্রথম দেখা। ভীষণ চঞ্চলতা, ওষ্ঠে শুচিস্মিতার হাসি আর মিশুক স্বভাব যেন মুহূর্তের জন্য চোখ সরাতে দিচ্ছিল না। ওষ্ঠের হাসিতে মনে হচ্ছিল, স্বচ্ছ সরোবরে পঙ্কজ প্রস্ফুটিত হয়ে সমীরণের প্রবাহে দোল খাচ্ছে। আমি তখন আনমনে ভাবছিলাম—একি আসলেই মানুষ নাকি স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোনো রূপকথার রাজকন্যা!
আমি মানুষ হিসেবে নিতান্তই সাধারণ। মনের ভেতর আবেগ-অনুভূতি বরাবরই কম কাজ করে। কাউকে ঠিক এভাবে নান্দনিকতায় ব্যাখ্যা করার মতো বোধশক্তি ছিল কাল্পনিক চিত্র। কিন্তু সেই দিনের পর থেকে শিহরণ আর মনোজাগতিক যে পরিবর্তন হয়েছে, তা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। ওই মুহূর্ত আমার জীবনে এনে দিয়েছে অভূত পরিবর্তন। সাধারণ হৃদয়ে সঞ্চার করে ভালোবাসার কুটির।
সেদিন নাম জানতে চেয়েও আর সাহস করে বলা হয়নি। তাই নিজ থেকেই একটা নাম দিয়েছি ‘সুহাসিনী’। ঠিক এই নাম কেন মাথায় এসেছিল, এখনো ভেবে পাই না। হয়তো তার ওষ্ঠে লেগে থাকা সেই শুচিস্মিতার হাসি, চঞ্চলতা আর মিশুক স্বভাবের জন্য। অসম্ভব সুন্দর গোধূলি দেখতে পাই সুহাসিনীর আগমনে। কিন্তু পরক্ষণেই সন্ধ্যা নামার পর দুজন দুই দিকে যার যার গন্তব্যে প্রস্থান করেছিলাম। আর কখনো জানা হয়নি তাকে। অপরিচিতা হয়েই সুহাসিনী আজও আমার হৃদয়ে জায়গা দখল করে আছে।
সভাপতি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা