বৈশাখী

অলংকরণ: তুলি

সেই বৈশাখের দুপুর কি মনে আছে?
নক্ষত্রের মতো তপ্ত ছিল রোদ,
আমরা হেঁটেছিলাম শুকনো ধুলোর পথ ধরে,
তোমার আঙুল জড়িয়ে ছিল আমার হাতের রেখাগুলো।
গোলাপি শাড়ির আঁচল দুলছিল হাওয়ায়,
দেখেছিলাম—
তোমার কপালে ছোট্ট বিন্দু ঘাম,
যে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়তে চাইছিল আমার বুকে।
তুমি হেসেছিলে,
সে হাসিতে মিশে গিয়েছিল
কাঁচা আমের টক-মিষ্টি গন্ধ,
তপ্ত বাতাসও তখন একটুখানি নরম হয়েছিল,
একচিলতে মেঘের মতো।
আমরা বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম একসঙ্গে,
তোমার ভিজে চুল থেকে জল গড়িয়ে পড়েছিল,
সে জলে ছিল ভালোবাসার অমৃত,

আমি চেয়েছিলাম—
তোমার গন্ধমাখা সেই বৃষ্টি ধরে রাখতে,
যেন আর কখনো শুকিয়ে না যায়।
তুমি ফিসফিস করে বলেছিলে—
‘তুমি ছাড়া বৈশাখ মরুভূমি,
তুমি ছাড়া এই হাওয়া কেবল ধুলোর ঝড়,
আমি থাকব, যত ঝড়ই আসুক,
তুমি শুধু আমায় ধরে রেখো!’
আমি রেখেছিলাম, যতটা পারা যায়...
কিন্তু সময়? সে বড় নির্মম!
এক বৈশাখে তুমি হারিয়ে গেলে—
ঝড়ের ডাকে তোমার কণ্ঠ মিশে গেল,
তুমি গেলে দূরে, আর বৈশাখ?
সে ফিরে আসে প্রতিবছর,
তবে তার হাওয়ায় আজ আর নেই
তোমার শাড়ির ঘ্রাণ, তোমার মিষ্টি হাসি,
শুধু থাকে বিক্ষত হৃদয়ে নিঃশব্দ ঝড়!