‘মেনে নেওয়া’ ব্যাপারটার সঙ্গে কমবেশি সবাই পরিচিত। পারিবারিক সম্পর্ক, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, আর্থিক অসামঞ্জস্যতা, চাকরিতে হতাশাসহ নানা বিষয় আমাদের জীবনে রয়েছে। কখনো কখনো আমরা কষ্টে থাকি, দুঃখিত হই, রাগান্বিত হই, হতাশ হই, বিরক্ত হই, মন খারাপ হয়। কেউই এই অনুভূতির বাইরে নয়। এমন মুহূর্তে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার দুটি উপায় রয়েছে। এক. এসব অনুভূতির কারণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা, দুই. মেনে নেওয়া। অধিকাংশ মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলে সেটা পরবর্তী সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।
মেনে নেওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, মেনে নেওয়াটা সর্বোত্তম উপায়। ভালো থাকার জন্য এই অভ্যাস জরুরি। ধরুন, আপনার এক বন্ধু বা প্রতিবেশীর সঙ্গে কোনো একটা বিষয় নিয়ে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়েছে। এর ফলে কথা বলা বন্ধ না করে বরং দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝগড়া মেটানোর ব্যবস্থা নিন। কথা বলা বন্ধ করলে একটা মানসিক অস্বস্তি থেকে যাবে সব সময়। আর যদি সবকিছু মেনে নিজে পদক্ষেপ নিয়ে ঝগড়া মিটিয়ে ফেলতে পারেন, দেখবেন একধরনের মানসিক শান্তি কাজ করবে।
রাগ, ক্রোধ—এগুলো মানুষের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কোনো কারণে কারও ওপর প্রবলভাবে এই অনুভূতি এলে সেটি নিজের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখালে মানসিক অস্বস্তি বাড়বে। এই রাগ, ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাই কিন্তু মেনে নেওয়া।
যেভাবে মেনে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন
ছোটবেলায় যখন আপনার মন খারাপ হতো কিংবা রাগান্বিত হতেন, তখন বড়রা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতেন? তাঁরা কি আপনার অনুভূতিকে সম্মান জানাতেন নাকি ধমক দিতেন? আপনার কি মনে হয় যে ছোটবেলার অভিজ্ঞতা বর্তমান জীবনে প্রভাব ফেলছে? এই অভিজ্ঞতার দিকে তাকালে কিছু পার্থক্য খুঁজে পাবেন। নিজের পরিবর্তন লক্ষ্য করার জন্য এটা হতে পারে ভালো উপায়।
মেনে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আরেকটা উপায় হতে পারে ধ্যান করা। এটি সচেতনতা ও মেনে নেওয়া—উভয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। ধ্যান চর্চা করার পুরোনো ও জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হলো মেডিটেশন। মেডিটেশন করলে নন-জাজমেন্টাল মানসিকতা গড়ে ওঠে। মন শান্ত থাকে।
নিজেই নিজের সমালোচনা করার চর্চা করতে হবে। এই চর্চা আমাদের মধ্যে খুবই কম। পাশাপাশি অন্যের সমালোচনা করা বন্ধ করতে হবে। দেখবেন, মেনে নেওয়ার অভ্যাসটা গড়ে উঠবে।
যাহোক, মেনে নেওয়ার অভ্যাসটা আরেকটি দক্ষতার মতো। এর জন্য চর্চার প্রয়োজন। যে ব্যক্তি যত বেশি চর্চা করবেন, তাঁর মধ্যে তত বেশি অভ্যাসটি গড়ে উঠবে।
সূত্র: সাইকোলজি টুডে