নকশি কথা

একটি মেয়ে চেয়েছিল নকশিকাঁথা পেতে
যার মধ্যে রংবেরঙের সুতোয় আঁকা ফুল থাকবে
পাতা থাকবে, প্রাণ থাকবে, আপন আপন টান থাকবে!
যেটি হবে হলুদ, সাদা, সবুজ পেড়ে অনেক রঙিন!
নকশিকাঁথার স্বপ্ন নিয়ে
নিজের বাড়ি ছাড়ল দুপা,
নতুন নতুন চারপাশটা।
এত মানুষ দেখেনি আগে, শোনেনি এত কথা
কী দিয়েছ, কী নিয়েছ, কী পেয়েছ বৌয়ের সঙ্গে
এমন কথাও মানুষ বলে?
একটা মেয়ে নিজের ভিটে
ছেড়ে এল কেমন দুঃখে
কেউ জানে না!
একটা মেয়ে দুঃখভরা হৃদয় নিয়ে
ভাইকে খোঁজে, মাকে খোঁজে
বাবার কথা মনে পড়লেই
আড়াল হয়ে একটু কাঁদে,
বোনের অভাব খুব কুড়ে খায়
তবু মেয়ে হাসে সদাই।
পরের বাড়ি কথার খোটা
ভাতের গুতা, সালুন বাটির অভাব যা–তা!
তবু মেয়ে স্বামীর মুখে অবাক চেয়ে একটু সুখে।
নকশিকাঁথা–নকশিকাঁথা
যপছে গোপন যাতনাটা!
নকশিকাঁথা সুতা–সুইয়ে, নকশিকাঁথা উঠান ভুঁইয়ে
ভাতের হাঁড়ি গরুর চাড়ি, শ্মশান লাগে নকশিকাঁথা।
মা কী জিনিস, ভাই কী হয়
বুঝল মেয়ে নতুন পথে!
নকশিকাঁথা–নকশি কথা
জড়িয়ে মেয়ে দিব্যি আছে!
তবু কেন সুতোজুড়ে রক্ত মাখা,
গোপন ঘরে আঁধার যেন
আঁকছে ছকে একলা একা
নকশিকাঁথা–নকশিকাঁথা!