নিস্তব্ধ বিকেল

কুয়াশামাখা পড়ন্ত বিকেলফাইল ছবি

তিন ঘণ্টা যাবৎ ছাদে বসে আছি। পর্যবেক্ষণ করছি গ্রামের সৌন্দর্য। নীরবতায় আচ্ছন্ন গ্রাম। মাঝেমধ্যে পাখিদের কলকাকলি শোনা যাচ্ছে। এরই মাঝে বাবার ডাক। ছাদ থেকে নিচে গেলাম ব্যাপার কী জানতে। বাবার ডাকার উদ্দেশ্য বিস্তীর্ণ মাঠে হাঁটতে যাবেন। বেশ! আমিও যোগ দিলাম।

গ্রামের বাড়ির ঠিক পেছনে বিস্তীর্ণ মাঠ। সেখানেই হাঁটতে যাব আজ। কিছুক্ষণের মধ্যেই বেরিয়ে পড়লাম। সময়টা বিকেল পাঁচটা। সন্ধ্যা নামার পূর্বক্ষণ। মাঠের মাঝখান দিয়ে হাঁটছি আমরা। চারপাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন। বিস্তৃত জনমানবশূন্য মাঠ। সন্ধ্যার সময় গ্রামবাসীরা বাইরে বের হন না। আকাশ লাল আভায় ছেয়ে আছে। পাখিরা ফিরছে নিজ ঠিকানায়। শীতকাল হওয়ায় জমিতে এখন ধান নেই। একঝলকে সম্পূর্ণ মাঠের এক প্রান্তর থেকে অন্য প্রান্তর দেখা যায়। একটি নিস্তেজ ট্রাক্টর পড়ে আছে মাঠের ঠিক মাঝখানে। আশপাশ থেকে ভেসে আসছে বিভিন্ন কীটপতঙ্গের ডাক।

গ্রামবাসীরা ধান চাষের পাশাপাশি এই খেতে সবজি, ফল, শর্ষে, ডালসহ প্রভৃতি চাষ করেন। আবার কেউ কেউ পুকুর কেটে নানা ধরনের মাছ চাষ করেন। মুরগি, হাঁস ও কবুতর পালনের প্রচলনও রয়েছে। পথিমধ্যে চোখ পড়ল একটি সবজি বাগানে। বেশ সুসজ্জিত বাগানটি। এক পাশে চাষ হচ্ছে ডাল আর অন্য পাশে ধনেপাতা। বাগান ঘেঁষে রয়েছে দুটো শিমগাছ।

পাখিদের মতো আমাদেরও সময় হলো বাড়ি ফেরার। সূর্য অস্ত যাচ্ছে, আর আমরা ফিরছি বাড়ি। সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করার অনুভূতিটাই অন্য রকম। খোলা আকাশের নিচে সূর্য ডুবে যাওয়ার দৃশ্য দেখার অনুভূতি আসলে বর্ণনা করা নিতান্তই কঠিন। কাল যথারীতিতে আবার রওনা দিতে হবে ঢাকার উদ্দেশে। হয়তো এই বছরের সেরা বিকেল ছিল এটি। কেবল একটা কথাই বারবার ভাবিয়ে তুলছে, এই নীরবতা থেকে কোলাহলের মাঝে প্রবেশ করে নতুন বছরটা শুরু করতে হবে নানা ব্যস্ততা দিয়ে। মুখোমুখি হতে হবে নানা চ্যালেঞ্জের। শুরু করতে হবে জীবনের ব্যস্ততার আরেকটি নতুন অধ্যায়।

মতিঝিল, ঢাকা