পাঁচতলার ফ্ল্যাট। সুমিতের বাসর আজ। খাটে জড়সড় হয়ে বসে আছে রুমানা। সুমিত একের পর এক ছবি ফুলশয্যায় বিছিয়ে রেখেছে। সব মেয়েদের ছবি। ১০-১২ জন মেয়ের ছবি।
‘বুঝতে পারছ কিছু?’ সুমিত রুমানাকে জিজ্ঞেস করে।
‘পারছি। এরা তোমার বন্ধু।’
‘শুধুই বন্ধু?’
‘না। তা হবে কেন! ফুলশয্যায় যাদের ছবি বিছিয়ে রেখেছ, তারা শুধু বন্ধু হতে যাবে কেন?’
রুমানা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, ‘আগে জানলে আমিও আমার ছেলেবন্ধুদের ছবি নিয়ে আসতাম। বিছিয়ে দিতাম ফুলশয্যায়।’
‘বলো কী! ছেলেবন্ধু! শুধুই বন্ধু?’
‘না। তা হবে কেন? শুধু বন্ধু হলে কি আর ফুলশয্যায় ওদের কথা মনে পড়বে?’
সুমিত বলে, ‘ছবি আনতে হবে কেন? ল্যাপটপ আছে। ওপেন করো। ওরা নিশ্চয়ই তোমার ফেসবুকে আছে।’
‘হ্যাঁ, আছে। কে হায় হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে.... ।’
অনেক রাত হয়েছে। চাঁদটা মনে হচ্ছে জানালার কাছাকাছি চলে এসেছে। হাত বাড়ালেই মনে হবে কত দূর।
সুমিত বলে, ‘রুমানা, ঘুমিয়ে পড়েন।’
‘গভীর রাতে আপনি সম্বোধন?’
‘চাঁদটার মতো দূরের মনে হচ্ছে আপনাকে।’
‘আমারও আপনাকে তা-ই মনে হচ্ছে।’
সুমিত বালিশে মাথা রেখে বলে, ‘তারপরও আপনাকে ছুঁতে ইচ্ছা করছে।’
রুমানা হাত বাড়িয়ে দেয়। ‘আমারও।’
চুড়িগুলো রুনঝুন করে। শাড়ির শব্দ হাহাকার করে ওঠে।
‘শুধুই ছুঁতে ইচ্ছা করছে?’ সুমিত জানতে চায়।
‘নিশ্চয়ই না।’
সুমিত জড়িয়ে ধরে রুমানাকে। রুমানার কানে কানে আবৃত্তি করে, ‘আই লাভ ইউ প্রীতি।’
রুমানা জানতে চায়, ‘মেয়েটির নাম বুঝি প্রীতি?’
সুমিত তাকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে বলে, ‘হ্যাঁ, ঠিক তা–ই।’
রুমানা আরও জোরে চেপে ধরে সুমিতকে, ‘শাহান, আমি কখনোই তোমাকে ভুলতে পারব না।’
লেখাটি ২০১৫ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের ‘তারুণ্য’ ম্যাগাজিনের পঞ্চম সংখ্যা থেকে নেওয়া।