কবি নজরুল স্মরণে তিনটি কবিতা

কাজী নজরুল ইসলামপ্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল

তুমি উন্নত মম শির
জহিরুল হক

হে উন্নত মম শির!
তোমার আলোক-নহরে শব্দেরা জাগে
দ্রোহের ঝংকারে ভাঙে গোলামির জিঞ্জির।
বুকের পিঞ্জর খুলে উড়ে যায় মুক্ত পাখি,
অনুভব থেকে অনুভবে আছ চির মহিমায়।
হে বিদ্রোহী কবি,
মহাকালের উদিত রবি!
হৃদয়ভূমিতে ছিল বহমান দুঃখের তটিনী,
তবু এঁকেছ কবিতা আর গানে
প্রেমময় অসাম্প্রদায়িক ছবি।
প্রিয় তুমি গানের বুলবুল,
তুমি শিকল ভাঙার গান তুমিই নজরুল!
তোমাকেই ভেঙে নিজেকে যে গড়ি
তুমি হতে শিখি তোমাকেই যুগে যুগে পড়ি
শত কবির কাব্যের ধ্বনি, চেতনার শব্দফুল।
তুমি বিদগ্ধ প্রেমিক,
প্রণয়সঞ্চিতা, পীযূষ দহনে অগ্নিবীণা!
তোমাকে অতিক্রমের দুঃসাহস নেই জানা,
ঐশ্বরিক অনুভবে তোমার সৃজনজ্ঞানে
তুমি অমর কালজয়ী, ব্যাপ্তির বহু দূরে লৌকিক
কারাবন্দী হয়েও নির্ভীক মুক্তির চেতনা
তোমার অমর কথামালা প্রাণসঞ্চারী মৌলিক।

কাজী নজরুল ইসলাম
রাজীব হাসান

বাবরি চুলের সেই ছেলেটি
লিখত দারুণ বেশ,
শিশু-কিশোর সবার প্রাণে
আনন্দের আবেশ।
ছোটবেলার সেই দুখু মিয়া
বিদ্রোহী এক কবি,
কবিতায় তাঁর সত্য-ন্যায়ের
উঠেছে ফুটে ছবি।
লিখে গেছেন কালজয়ী সব
কবিতা আর গান,
‘বিদ্রোহী’ তাঁর অমর সৃষ্টি
গল্প ‘ব্যথার দান’।
‘চল্ চল্ চল্’ তার রণসংগীত
‘অগ্নিবীণা’ কাব্য,
নজরুল তিনি সবার সেরা
সবাই করে শ্রাব্য।

কবি নজরুল
শারমিন মনিকা

তুমি প্রলয়শিখা, তুমি সাম্যবাদীর গান
তুমি প্রিয়ার চোখে
জমা সহস্র অভিমান।
তুমি বিদ্রোহী, তুমি মরুর বুকে
যেন উত্তাল এক ঢেউ,
অরুণ প্রাণের তরুণ স্পন্দনে
তুমি অগ্নিবীণায় বেজে ওঠা
হার না মানা কেউ।
তুমি বাঁধনহারার বাঁধন,
তুমি সন্ধ্যাতারার ফুল—
তুমি চঞ্চল হৃদয়ে শান্তির
বাণী হয়ে আসা রণতরিতে
ফিরে দেখা কবি নজরুল।