প্রাক্তন
তুমি ছিলে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে,
তোমারে দেখেছিনু হলুদ শাড়ির আবরণে;
গোলাপের সৌরভে ঢেকে ছিল
অতীতের মলিন পাতার মর্মর শব্দ,
সে পাতার করুণ সুরেই যত অনাগ্রহ।
চোখের কাজল ভেজা পাপড়িগুলো
তখনো আমায় ভোলেনি,
শুকিয়ে যাওয়া চোখের জলে
শুকনো দাগ কাটা তোমার চাহনি।
তুমি ছিলে আকাশ পানে,
স্বল্প দৃষ্টে চেয়ে;
বুঝিয়ে দিলে করুণ পলকে,
এত দিন পরে হঠাৎই কেন এদিকে!
আমি ছিলাম ধুলায় মলিন।
খিটখিটে রুক্ষ দুপুরের,
সূর্যের সাথে কাটানো লোকটার যেমন যাচ্ছে দিন!
তোমার কমল করের স্পর্শে মহুয়ার গন্ধ পেয়েছিলাম,
তোমার মোটা ফ্রেমের পরে ভেজা চোখের জলের গন্ধে মেতেছিলাম;
যার মোহ আজ সরিয়ে রেখেছে,
যার দৃষ্টি আজ পলকবিহীন নীলাকাশ পানে।
আকাশপ্রীতি ফেলে তুমি
দৃষ্টি ফেরালে পথিকপানে,
ক্লান্ত চাহনিতে জানালে কাছে আসতে;
ভাবলাম, এ–ও তো কম নয়।
মেঘ কেটে যদি রৌদ্র উঠে,
শরতের উষ্ণতা মিশে যদি খানিকটা বসন্ত আসে
তবে ক্ষতিই বা কি হয়?
সেই চিবুক গলা,
চোখ উঁচিয়ে ঠোঁট কাঁপিয়ে আগেরই মতো বলা;
কাঁপা স্বরে জানতে চাইলে কেমন আছি,
কেমন চলছে সব ইত্যাদি।
পলকবিহীন চোখে আমার দিকে রইলে চেয়ে,
সে দৃষ্টিতে শত অভিযোগেরা নামছিল বৃষ্টি হয়ে!
মাথা নিচু করে, কাটা স্বরে বললে,
ও বেলায় তুমি কি আমায় সত্যিই ভালোবেসেছিলে?
সেই যে বৃষ্টিভেজা,
পেছন থেকে ওই যে জাপটে ধরা;
আচ্ছা তোমার কি মনে পড়ে?
স্মৃতিরা কি তোমায় আপন করে ঘিরে ধরে?
নিস্তব্ধ দুপুরে তোমার গায়ের উষ্ণতা,
নিরিবিলি আশ্রয়ে সেই কাঁধের একটুখানি ছোঁয়া;
হালকা হয়ে কেঁপে ওঠা,
তব কোমলতায় মুগ্ধ হওয়া!
তোমায় আপন করে কাছে টেনে নিয়ে বললাম,
মহুয়ার গন্ধ তো আমি আজও ভুলিনি,
কোমল ঠোঁটের মায়া আজও কাটেনি!