ঘুরে এলাম দিনাজপুর

ঐতিহাসিক নিদর্শনসংবলিত নয়াবাদ মসজিদ প্রাঙ্গণে লেখকছবি: সংগৃহীত

গল্পের শুরুটা এক সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের আড্ডায়। ঐতিহাসিক কোনো স্থান ভ্রমণের ইচ্ছাটা তাদের সঙ্গে শেয়ার করি। সবাই রাজি হয়ে গেল। ঘুরতে তো যাওয়াই যায়। তবে এবার কাছাকাছি কোথাও। যেই ভাবা সেই কাজ!

পরদিন সকালে আমরা রাজশাহী রেলস্টেশন গিয়ে দিনাজপুরগামী ট্রেনে উঠে পড়ি। সেখানে পৌঁছে দিনাজপুর বন্ধুসভার বন্ধু তানভীরের আতিথেয়তা গ্রহণের পর তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বের হই। দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘোরার পর আমাদের গন্তব্য ঐতিহাসিক কান্তজিউ মন্দির। সেখানে বেশ কয়েকজন বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে দেখা হয়। তাঁদের বাংলাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও শোনা হলো।

আমরা যখন কান্তজিউ মন্দির ঘুরে দেখছিলাম, তখন এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি কিছুটা দূরেই একটি সুন্দর মসজিদ রয়েছে। এরপর আমরা আর দেরি না করে রওনা দিই মসজিদটির উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছে নয়াবাদ মসজিদ দেখে আমাদের সবার চোখ জুড়িয়ে যায়।

মোগল স্থাপত্যের ঐতিহাসিক নিদর্শনসংবলিত এ মসজিদটি খুব একটা বড় নয়। তবে এর ঐতিহ্য, নির্মাণের কলাকৌশলগুলো বড় মাপের। এত সুন্দর নিপুণ কারুকার্য টেরাকোটার ফলকে তৈরি করা এমন মসজিদ বাংলাদেশে বিরল। স্থানীয় ও মসজিদের খাদেমদের কাছ থেকে স্থাপত্যটি সম্পর্কে আরও অনেক কিছুই জানতে পারি।

তাঁদের তথ্যমতে, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সময় আনুমানিক ১৭৯৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রায় ২৫০ বছর আগে মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। আঠারো শতকের মধ্যভাগে যখন বিখ্যাত কান্তজিউ মন্দির নির্মিত হয়, তখন পশ্চিমা দেশ থেকে আসা মুসলিম স্থাপত্যকর্মীরা পার্শ্ববর্তী নয়াবাদ গ্রামে অবস্থান করতেন। তাঁরা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। নয়াবাদ মসজিদ দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের নয়াবাদ গ্রামে অবস্থিত। জেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ঢেপা নদীর পশ্চিম তীরে এর অবস্থান। কান্তজিউ মন্দির থেকে এর দূরত্ব এক কিলোমিটার।

সারা দিন ঘোরাঘুরির পর রাতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে পরদিন সকালে আবার রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দিই।

সহসাংগঠনিক সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা