রিনু

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পয়লা ফাল্গুন। এ উপলক্ষে ভালোবাসার স্মৃতিগল্প পাঠিয়েছেন বন্ধুসভার বন্ধু ও পাঠকেরা। নির্বাচিত চারটি গল্প আজ প্রকাশ করা হলো।

অলংকরণ: এস এম রাকিবুর রহমান

প্রচণ্ড গরমের রাত। বাইরে এসে দেখি, রিনু নীল রঙের শাড়ি পরে বারান্দার গ্রিল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। শান্ত নদীর মতো নিস্তব্ধ রাত। গাছের একটা পাতা পর্যন্ত নড়ছে না। মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে নারকেলগাছগুলো। ঘন ছায়া এসে পড়ছে উঠানের ওপর। একটু পরই বারান্দা থেকে চাঁদ দেখা যাবে।

রিনু আজ বেড়াতে এসেছে। বিয়ে হয়েছে তিন বছর হলো। ওর সঙ্গে আমার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কোনো এক অজানা কারণে হয়নি। আজও সেই ক্ষত বুকের ভেতর রয়ে গেছে। বড় চাচা রাজি ছিল না। রিনু হয়তো ভালোই আছে আমাকে ছাড়া। কেউ কেউ খুব সহজেই সবকিছু মানিয়ে নেয়। অথচ এখনো রিনুর কথা ভাবলে আমার খাওয়া-ঘুম হারাম হয়ে যায়। বুকের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হয়।

রিনু কী চমৎকার সংসার করে বেড়াচ্ছে! খুব ইচ্ছা করে একদিন ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াই। জিজ্ঞাসা করি, কেমন কাটছে দিনকাল? সাহসের অভাবে সম্ভব হয় না। অতি পরিচিত একজন মেয়ের সামনে দাঁড়ানোর মতো সাহস সঞ্চয় করতে পারিনি একজীবনে। ভালোবাসা মানুষকে যেমন সাহসী করে, আবার ভিতুও করে তোলে।

রিনু আগামীকাল চলে যাবে ঢাকায়। কয়েক মাস পরপর বাড়িতে আসে। অথচ মনে হচ্ছে, কত যুগ পর বাড়িতে এল। ও বাড়িতে এলে আমি পালিয়ে বেড়াই। সামনে পড়তে ভালো লাগে না। যাকে একবার আপন করে পাওয়ার বাসনা মনের মধ্যে লালন করেছিলাম, তাকে না পাওয়ার বেদনা কে বুঝবে সংসারে? তবু রিনুর প্রতি আমার অকৃত্রিম ভালোবাসা। যেখানেই থাকে, ভালো থাকুক, সুখে থাকুক।