দুই চোখে বিষাদ চুয়ে পড়ে

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

এই তো আশ্বিনে,
সকালের সোনাঝরা রোদ চুয়ে পড়ছে
মেহগনি, কড়ই আর অশ্বত্থের ডালে।
বটের আবডালে পাখিদের মিষ্টি কলরবে
মুখর মালতিদের বাড়ির পাশে।
শিউলি ফুলের স্নিগ্ধতা শিশির ধুয়েছে সবে।
বাঁশের চিরল পাতায় মহুয়া বাতাসে
উড়ে গেছে সব মেঘ পালকি চড়ে।

আমি ঘুরে চলেছি এ পথ থেকে ওই পথে
জীবনের নাও দৌড়ে শূন্য মনে!
ব্যথাগুলো এক কলাপাতায় মুড়িয়ে ফেলে।
দেখেছি সেথায় শালিকের মেলা বসে বিরহে পুড়ে,
বক আর কাকগুলো জমাট হয়েছে শেষে।
শিহরণ জেগে ওঠে ক্ষণিকের দিগন্তে ঘুরে
কেউ নেই ভালো শূন্যতা কেবলই মনে।

আমার সীমানা গিয়েছে সেই কবেই পুড়ে
দূরের পথের বাঁকে একলা চলেছি সাগরের
পাশ ধরে
শামুকের খোলসে ঝিনুক দুঃখ লুকায়!
বালির ঘর বেঁধে যে স্বপ্ন দেখেছি শয়নে–স্বপনে
সে যে নীরবে ভেসে গেছে জোয়ারের টানে।
শখের খড়কুটো কুড়াইনি আর বাবুই পাখির সনে
নীড় বাঁধিনি তো স্বপ্ন ভাঙার পরে।

সাধের ইচ্ছেগুলো রোজ ঝুলি বেঁধে কাঁধে
সময়ের রশ্মি ছাড়াই ঘুরে চলেছি অচেনা পথে,
স্বপ্নহীন দুই চোখে বিষাদের অশ্রু চুয়ে চুয়ে পড়ে!
কোথাও পাই না তা নিবারণে ধুয়ে নিতে।
হে পৃথিবী শুনে রেখো এক নৃশংস শোকে
আমার ডাক এসে যায় যদি কোনো অবেলার স্রোতে
ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে যদি কখনো যাই হেরে
কেউ খুঁজো না তো মমতার ডাকে!