বর্ষায় বর্ষে সুখ

এখন বর্ষাকাল, প্রতীকীছবি: হাসান রাজা

সাদা-কালো মেঘে ছেয়ে নেওয়া আকাশটার সকাল থেকেই মন ভারী! গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনোবা ঝরঝরে ঝরে অশ্রু। গুমোট ভেঙে কিছুটা হালকা হওয়ায় পশ্চিমাকাশে সূর্যের উঁকিতে যেন মুচকি হাসি।

দীর্ঘ সময়ে বৃষ্টিতে ভেজা গাছের সবুজ পাতাগুলো গা ঝেরে যেন স্বস্তির শ্বাস নিচ্ছে। মৃদু শীতল হাওয়ায় দুলছে।

সারা রাত বিশ্রাম। সকাল সকাল আবার কান্না শুরু, সাত দিন ধরে এ রকমটাই হচ্ছে! মেঘলা আকাশের সঙ্গে কান্নার প্রতিযোগিতায় নেমেছে দিনমজুর বাদলের পরিবার। আকাশ কাঁদে দিনে আর উপোসে থাকা পরিবারের সদস্যদের কষ্টে বাদল কাঁদে দিনে–রাতে।

অন্যের বাড়িতে সারা দিন কাজ করে যে পারিশ্রমিক পায়, তা দিয়েই ওদের সংসার চলে। বর্ষা এলে বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারে না প্রতিদিন। ফলে অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কেনা, ছেলেমেয়েদের দুবেলা খাবার জোগাড় ভীষণ কষ্টের হয়ে পড়ে। উপোসেই থাকতে হয় কোনো কোনো দিন।

পড়াশোনার খোঁজখবর নিতে এসে ছোট মেয়েটার স্কুলের প্রধান শিক্ষক কথায় কথায় জানতে পারলেন বাদলের পরিবারের দুর্দশার কথা। শিক্ষক বলল, ‘বাদল ভাই, এই রকম দুর্যোগকালে হাত গুটিয়ে বসে না থেকে আপনি কিছু একটা করে টাকা উপার্জন করতে পারেন। এতে আপনার সংসারের খরচ মেটানো অনেকটাই সহজ হবে। যেমন অল্প পুঁজিতে আপনি ঘরে বসে মাছ ধরা জাল বুনে বাজারে বিক্রি করে টাকা উপার্জন করতে পারেন। বর্ষাকালে মাছ ধরা জালের প্রচুর চাহিদা থাকে।’

শিক্ষকের কথা শুনে বাদলের বুকে যেন প্রাণ ফিরে এল। আসলেই তো! এভাবে তো সে আগে কখনো ভাবেনি। পরিবারের সবার চোখেমুখে খুশির ঝিলিক, সম্ভাবনার আলো।

হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট