২০০৪ সালে বার্সেলোনার মূল দলের হয়ে অভিষেক ঘটে লিওনেল মেসির। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক হয় এর পরের বছর ২০০৫ সালে। এর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ব তাঁর জাদুকরী ফুলবলীয় নৈপুণ্যে কেবল মুগ্ধই হয়ে আসছে। জিতেছেন রেকর্ড ৭টি ব্যালন ডি’অর, ৭ বার ফিফা বর্ষসেরাসহ ব্যক্তিগত সব পুরস্কার। গত বছর জিতে নিয়েছেন একজন ফুটবলারের সর্বোচ্চ স্বপ্ন বিশ্বকাপ। মোটকথা, একজন ফুটবলারের তাঁর ক্যারিয়ারে যত কিছু অর্জন করা সম্ভব, তার সবই জয় করেছেন আর্জেন্টাইন জাদুকর। কিন্তু তাঁর এই দুই দশকের ক্যারিয়ারে সেরা বছর কোনটি?
২০২২ সালকে অন্যতম সেরা বছর বলা যায়। এ বছর তিনি বিশ্বকাপ জয় করেছেন। দেশকে ফুটবলের সর্বোচ্চ এই শিরোপা জেতাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের সুবাদে আরও একটি ব্যালন ডি’অর জয়ের কাছাকাছি মেসি।
তবে তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা বছর ২০১২ সাল। ওই বছর ক্লাব কিংবা জাতীয় দলের হয়ে বড় কোনো শিরোপা না জিততে পারলেও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে দেন ২৫ বছর বয়সী মেসি। এক বছরে ৬৯ ম্যাচ খেলে করেন রেকর্ড ৯১ গোল! এর মধ্যে লা লিগার ৩৮ ম্যাচে ৫৯ গোল, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১২ ম্যাচে ১৩ গোল, কোপা দেল রে এবং স্প্যানিশ সুপার কাপসহ অন্যান্য ঘরোয়া লিগে ১৩ গোল এবং আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের জার্সিতে ৯ ম্যাচে ১২টি গোল করেন।
এই রেকর্ড গড়ে মেসি পেছনে ফেলেন গার্ড মুলারকে। জার্মান ও বায়ার্ন মিউনিখের এই কিংবদন্তি ১৯৭২ সালে এক বছরে ৮৫ গোল করেছিলেন। ২০১২ সালে মেসির করা রেকর্ডটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয়। তবে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের এমন অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের পরও ওই বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কিংবা লা লিগা কোনোটাই জিততে পারেনি বার্সেলোনা। কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপের ট্রফিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
মেসি তাঁর ৯১ গোলের মধ্যে ৭৮টি গোল করেছেন পেনাল্টি বক্সের ভেতর থেকে। এর মধ্যে ১৪টি পেনাল্টি। লা লিগায় মোট ১০টি পেনাল্টি নিয়ে সব কটিই জালে পাঠাতে সক্ষম হন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তিন পোনাল্টির মধ্যে দুটিতে গোল করেন। যেটি মিস করেন, সেটি ছিল সেমিফাইনালে চেলসির বিপক্ষে। ওইটায় গোল করতে পারলে হয়তো দলকে ফাইনালে তুলতে পারতেন এবং কে জানে শিরোপা জেতাও সম্ভব হতো। এ ছাড়া পুরো বছরে ২২টি ম্যাচে জোড়া গোল করেন, ৯টি হ্যাটট্রিক, ২টি ম্যাচে ৪টি করে গোল এবং প্রথম ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোনো ম্যাচে ৫টি গোল করেন (বায়ার্ন লেভারকুসেনের বিপক্ষে)। সময় হিসাব করলে ৬৬ মিনিট পরপর একটি করে গোল করেন।