ইচ্ছেপূরণে রেকর্ডস বুকে জন সিনা

গুরুতর অসুস্থ শিশুদের ইচ্ছা পূরণ করেন জন সিনা
ছবি: সংগৃহীত

ক্যানসারে আক্রান্ত ১১ বছরের জোনাথন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তার বাবাকে একটি আবদার জানায়। মৃত্যুপথযাত্রী সন্তানের মুখে এই আবদার শোনার পর বাবার চিন্তা আরও বেড়ে যায়, কীভাবে এই আবদার পূরণ করবেন। তারপর হঠাৎ একদিন জোনাথনের সেই ইচ্ছা পূরণ করতে হাসপাতালে চলে আসেন স্বপ্নের মানুষটি। ব্যক্তিটি আর কেউ নন, ডব্লিউডব্লিউই সুপারস্টার ও হলিউড অভিনেতা জন সিনা। কেবল জোনাথন একা নয়, এ রকম শত শত বাচ্চার মুখে হাসি ফোটানোর কাজ করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠছে এই তারকার।

রিং থেকে হৃদয়ে
পুরো নাম জন ফেলিক্স অ্যান্থনি সিনা। তবে পৃথিবীর কোটি কোটি ভক্তের কাছে তিনি জন সিনা নামেই পরিচিত। মার্কিন পেশাদার কুস্তিগীর, র‍্যাপার, অভিনেতা। এত সব পরিচিতির বাইরে তিনি কোমল হৃদয়ের এক মানুষ। মানবসেবামূলক কাজে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি সব সময়ই চোখে পড়ে। জন সিনা ‘মেক আ উইশ’ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ৬৫০-এর বেশি শিশুর ইচ্ছা পূরণ করেছেন। তাঁর ‘নেভার গিভ আপ’ প্রচারণায় চালিত চিকিৎসা কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্যানসারে আক্রান্ত ৩৮ শিশু বেঁচে ফিরেছে। তিনি পুরো পৃথিবীর ক্রীড়াবিদদের মধ্যে উন্নয়নমূলক কাজে সর্বাধিক অর্থদাতাদের মধ্যে দ্বিতীয় এবং রেসলারদের মধ্যে প্রথম। শিশুদের ইচ্ছেপূরণ সম্পর্কে জন সিনা জানান, গুরুতর অসুস্থ শিশুদের ইচ্ছা পূরণ করা তিনি বন্ধ করবেন না এবং যারা তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ চায়, তাদের সঙ্গে অবশ্যই দেখা করবেন।

গুরুতর অসুস্থ শিশুদের ইচ্ছা পূরণ করেন জন সিনা
ছবি: সংগৃহীত

নেপথ্যে মেক আ উইশ ফাউন্ডেশন
মেক আ উইশ ধারণাটি ১৯৮০ সালে শুরু হয় ক্রিস্টোফার জেমস গ্রিসিয়াস নামের সাত বছরের এক বালকের হাত ধরে, যে কিনা লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত ছিল। তার পুলিশ অফিসার হওয়ার ইচ্ছা যখন সবাই জানতে পারল, তখন সেই ইচ্ছা পূরণ করতে গিয়েই জন্ম হলো ‘মেক আ উইশ’ ফাউন্ডেশনের। ফাউন্ডেশনটি ২ থেকে ১৮ বছর বয়সী গুরুতর অসুস্থ শিশুদের স্বপ্ন পূরণ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া ডিজনি ওয়ার্ল্ডে ভ্রমণ, পারিবারিক পুনর্মিলন, কনসার্ট ও গ্রীষ্মকালীন ছুটির মতো মজাদার অভিজ্ঞতাও প্রদান করে। তবে সবচেয়ে বেশি অনুরোধ আসে তাদের পছন্দের সেলিব্রিটির সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ার, যাদের বেশির ভাগই ক্রীড়াবিদ ও অভিনেতা।

জন সিনা ৫০০ শিশুর ইচ্ছা পূরণ করার পর বলেছিলেন, ‘আমি ডব্লিউডব্লিউইতে ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সুপারস্টারদের মুখোমুখি হয়েছি। সেখানে আমি যতটা সাহস বা বলিষ্ঠতা প্রকাশ করতে পারিনি, তার চেয়ে বেশি সাহসিকতা বা দৃঢ়তা প্রকাশ করতে দেখেছি আমার দেখা প্রত্যেক উইশ কিডের মধ্যে। শুভেচ্ছা আদান–প্রদান যে কতটা অনুপ্রেরণাদায়ক প্রভাব ফেলতে পারে, তা দেখার জন্য আমি আরও ৫০০ জনের ইচ্ছা পূরণ করতে উন্মুখ হয়ে আছি।’

তথ্যসূত্র: গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, Rider Digest

প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ