ডিসেম্বরের সেকাল-একাল

শীতের সকালফাইল ছবি: প্রথম আলো

শীত না এলেও হেমন্তের কুয়াশাভেজা সকাল কিংবা মায়াবী বিকেল। ধানখেত তখন পুরোটাই ফাঁকা। বাড়ির পাশে দাঁড়িয়াবান্ধা খেলা জমত সকাল-সন্ধ্যা। ডিসেম্বর মানেই বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। পড়াশোনার চাপ নেই। প্রাথমিকে থাকার সময় তো জমা দিতে হতো সদ্য সমাপ্ত পাঠ্যবই। পড়ার টেবিল খুঁজে গল্প কিংবা উপন্যাসের বই বের করে পড়ার সুযোগ হতো তখন। পাঠ্যবইয়ের নিচে লুকিয়ে পড়তে হতো না। প্রহর গুনতাম কবে আসবে নতুন বছর, নতুন বই। অবশ্য এর আগে দুশ্চিন্তা হতো পরীক্ষার ফল নিয়ে। প্রথম হতে না পেরে মন খারাপ তো থাকত বরাবর। নতুন বই পেয়ে তাতে মলাট লাগানো, এর আগে দিস্তা খাতায় বসে বসে মার্জিন করতাম।

সময় বদলেছে। সংখ্যার হিসাবে বয়সও বেড়েছে, সঙ্গে শৈশব স্মৃতিকাতরতা। তীব্র শীতে জড়ো করা শুকনা পাতায় আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহানো সকাল আসে না ইট–পাথরের এই নগরীতে। ডিসেম্বর মানে পরীক্ষা শেষে ছুটি মিলে না। জুলাই-জুন সেশন, কিন্তু বর্ধিত হয়ে চলছে এ সময়েও। ক্লাসের পরীক্ষা শেষ হয়নি; তবু ছুটি মিলবে ক্যালেন্ডারের শেষ পাতা বলে। এই ছুটির পুরোটা কি কাটাতে পারব বাড়ি ফিরে, গ্রামে? জানি না। সময় চলছে তো চলেই যায়।

সপ্তাহের শেষ বিকেলে ডুবন্ত সূর্য দেখতে দেখতে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা আন্তনগর ট্রেন ধরে চাইলেই পারি না বাড়ির পানে ছুটতে। আমার বাড়ি থেকে রেলস্টেশন অনেক দূর। খুব সকালের মিষ্টি রোদের আলোয় কিংবা এই হেমন্তের হঠাৎ বর্ষায় ভিজে আমাকে ছুটতে হয় নগরীর লোকাল বাসে করে কিংবা ব্যস্ত মেট্রোতে দাঁড়িয়ে।

স্নাতক শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়