আমার কর্মজীবী মা

মা ও বোনের সঙ্গে লেখকছবি: লেখকের সৌজন্যে

মা আমাদের জীবনের মূল শিকড়, যাঁর মাধ্যমে গড়ে ওঠে অস্তিত্বের নিখুঁত বুনন। দশ মাস গর্ভে ধারণ করার ক্লান্তিহীন যাত্রা থেকে শুরু করে জীবনগাথার প্রতিটি পৃষ্ঠায় যাঁর নিঃশব্দ উপস্থিতি। আমার মা সরকারি চাকরির পাশাপাশি আমাদের দুই বোনকে সযত্ন বড় করে তুলেছেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ আত্মত্যাগের এক মূর্ত প্রতিচ্ছবি। মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছি স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার শিক্ষা। তাঁকে দেখেছি কীভাবে সব দায়িত্ব পালন করেও ধীরস্থিরভাবে সবকিছু সামলান।

আমার মা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত। সেখানে তিনি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করেন। দেশ ও সমাজসেবায় নিয়োজিত আমার মা সংসার ও কর্মজীবনের দ্বৈত ভার বহন করেও কখনো আমাদের প্রতি সামান্যতম অবহেলা করেননি।

আমরা সাধারণত কর্মজীবী মা মানেই ভাবি, সময় না দেওয়া আর অবহেলার অভিযোগ। কিন্তু আমার মা সেই চিরাচরিত ধারণার ব্যতিক্রম। আমাদের প্রয়োজন সব সময়ই তাঁর কাছে অগ্রগণ্য। কখনো নিজের কষ্ট বা ক্লান্তির ছায়া আমাদের ওপর পড়তে দেননি। দিনের শেষে যখন শান্তির আশায় মায়ের কাছে ছুটি, তখনো তিনি ভাবেন কেবল আমাদের কথা, নিজের ক্লান্তি বা বিশ্রামের কথা নয়। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে শুরু হয় অবিরাম সংগ্রাম। সংসার, অফিস, পরিবারের প্রতিটি দায়িত্ব একা হাতে সামলান। তবু কোথাও যেন নেই নিজের জন্য একটুখানি বিশ্রামের অবকাশ।

মা দিবসে আমার মায়ের মতো সব কর্মজীবী মা এবং পৃথিবীর প্রতিটি মায়ের প্রতি রইল অশেষ শ্রদ্ধা আর অপার্থিব ভালোবাসা।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভা, সিলেট।