আদিবদের বাসায় আজ খুশির জোয়ার বইছে। আম্মু নানা রকম শীতের পিঠাপুলি তৈরি করে রেখেছেন। নতুন আলু দিয়ে গরুর গোশত রান্না হচ্ছে। গোশতের ঘ্রাণ ছুটে যাচ্ছে জানালার ফাঁক দিয়ে আশপাশের বাড়িতে। খুব খুশি খুশি লাগছে আদিবের। লাগবেই না কেন! গ্রাম থেকে ছোটমামা এসেছেন বেড়াতে। সেবারের তুলনায় এবার মামা অনেকটা তাড়াতাড়ি এসেছেন।
মামাকে খুব ভালোবাসে আদিব। মামা অনেক মজাদার এবং শিক্ষণীয় গল্প জানেন। এসব গল্প শুনতে খুবই ভালো লাগে ওর। বিশেষ করে জোছনা রাত হলে তো আর কথাই নেই গল্প জমতে।
নাশতার টেবিলে থরে থরে মজাদার সব খাবার আর গরুর গোশতের তরকারি সাজানো। ঝোলের মধ্যে গোশত আর নতুন আলো ডুবোচুরি খেলছে। খাবারগুলো দেখে আদিবের বেশ লোভ হলো।
পাশের জানালা খোলা ছিল। পিঠা খেতে খেতে জানালার ফাঁক দিয়ে মামা কয়েকটা ঘর লক্ষ করলেন। বাহ্যিক চেহারা দেখে মনে হলো, ওগুলো তেমন সচ্ছল পরিবারের নয়।
‘আচ্ছা আদিব, ওই ঘরগুলো কাদের?’
‘ওরা আমাদের প্রতিবেশী, মামা।’
‘তোমরা কী তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নাও?’
‘সময়ের অভাবে তেমন একটা নেওয়া হয় না।’
‘বলো কি! ওরা তো তোমাদের প্রতিবেশী। না, না, এটা মোটেও ঠিক নয়, আদিব। যাও, এক্ষুনি কিছু পিঠা আর গোশতের তরকারি দিয়ে আসো তাদের। আর আমি আপাকে বলে দেব, এই শীতে কিছু গরম কাপড় তাদের জন্য ব্যবস্থা করে দিতে।’
আদিব তক্ষুনি কিছু পিঠা আর গোশতের তরকারি দিতে গেল প্রতিবেশীদের ঘরে। সে যখন ফিরে এল, মামার মুখে হাসির ঝিলিক। মামা বললেন, ‘শোনো আদিব, তোমরা পেটপুরে খাবে আর তোমাদের প্রতিবেশী অভুক্ত থাকবে, তা তো হতে পারে না। তোমরা তোমাদের তরকারিতে ঝোল একটু বেশি করে দাও, যাতে প্রতিবেশীদের একটু দিতে পার।’
আদিব বলল, ‘ঠিক আছে, মামা। আমরা এখন থেকে প্রতিবেশীদের প্রতি যথাসাধ্য লক্ষ রাখার চেষ্টা করব।’
ধানমন্ডি, ঢাকা