আজকাল প্রায়ই উদ্ভট সব স্বপ্ন দেখে শুভ্রা। বাইরের ঝোড়ো বৃষ্টিতে সারা ঘর যে ভিজে যাচ্ছে, সেদিকে তার কোনো খবর নেই। রশিদা খালা চা দিয়ে গেল। ‘আপা আপনার ভাবসাব বুঝি না! এই পানি ওহন আমারে মোছা লাগবে। একখান ডাক দিলেও তো পারতেন।’
কে কী বলল, সেদিকে মনোযোগ দেওয়ার যেন সময় নেই শুভ্রার। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে গেল। রিকশাওয়ালারা ভিজতে ভিজতে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। রাস্তার এসব দৃশ্য দেখছে সে। আশ্বিনের বৃষ্টি কারও জন্য আশীর্বাদ, আবার কারও জন্য সর্বনাশ। শরতের এমনই এক বৃষ্টির দিনে কাশবনের মধ্যে প্রথমবার শুভ্রনীলকে দেখেছিল শুভ্রা।
অচেনা ব্যক্তির একটা নামও দিয়েছিল সে। কাশবনে ছবি তোলা শেষে হঠাৎ বৃষ্টি নামে। আশপাশে কোনো রিকশাও নেই। কোনোরকমে এক ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে তারা চার-পাঁচ বন্ধু। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি বন্ধ হতেই সামনে দেখতে পেল সাদা পাঞ্জাবি পরা এক সুদশর্ন যুবক। একটা ছেলে যে এত মায়াময় হতে পারে, তা সেদিনই আবিষ্কার করেছিল শুভ্রা!
সেবারের শরৎ এক অজানা রহস্য নিয়ে আসে শুভ্রার জীবনে। যে রহস্যের উদ্ঘাটন করতে পারেনি আজও। তবু সে অপেক্ষা করে শরতের। এই শরতেই শুভ্রনীল তাকে প্রতিজ্ঞা করেছিল, সে ফিরে আসবে। শুভ্রা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে শরৎ এলেই। কাশবনেও একা একা ঘুরে আসে। শুভ্রার জীবনে শুভ্রনীল যেন শরতের কাশফুলের মতো।
কার্যনির্বাহী সদস্য, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভা