মানুষ মানুষে বাঁচে, হাসে–কাঁদে

অলংকরণ: আরাফাত করিম

মানুষের হাসি ধ্বনিত হয় নির্মল হাওয়া থেকে শুরু করে বিস্তীর্ণ আকাশে। আবার মানুষের আহাজারি কম্পিত হয় মলিন মাটি থেকে শুরু করে গভীর সমুদ্রতল পর্যন্ত। দুঃখ-দুর্দশা কোথা থেকে আসে? আবার কোথায় গিয়ে ঘোচায়? কে হাসায়? কে কাঁদায়? মানুষ প্রশ্নদাতা, একইভাবে মানুষই উত্তর দিই। যেখানে হাজারো সমাধান, সেখান থেকেই বুঝি সমস্যার সৃষ্টি।

প্রশ্ন করি তবে নিজেকে, কখনো কি দেখেছি ভূত কিংবা রাক্ষস-খোক্ষস এসে মানুষকে গুম করে ফেলেছে? রক্ত চুষে খেয়ে ফেলেছে কি? তবে মানুষকে করতে দেখেছি। মানুষ! কতই না ভয়ংকর! জ্যান্ত মানুষ মেরে ফেলে। একটা মানুষের জীবন নষ্ট করে ফেলে। আসলেই তা হয়। কী অদ্ভুত মানুষ! সৃষ্টির সেরা জীব। জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, ধৈর্য, সৃজনী শক্তি, আরও নানা গুণে মানুষ শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে পৃথিবীতে। কিন্তু মানুষই নিম্নশ্রেণির প্রাণীতে পরিণত হয়। নেশায় মত্ত থেকে বেহুঁশ হয়ে সামান্য টাকার জন্য রাতের অন্ধকারে কারও বুকে ছুরিকাঘাত করতে হাত কাঁপে না। শরীর ভোগে উন্মাদ হয়ে শিশুর কোমল মাংস ছিঁড়ে খাওয়ায়ও ডরায় না। রক্ত নিয়ে খেলতে পিছপা হয় না।

মানুষই কেন অবিবেচকের মতো কাজ করে? ধোঁকা, প্রতারণা, ঠকবাজি কার সঙ্গে করে? নিজ জাতের সঙ্গেই হিংসা, বিদ্বেষ, ক্রোধ। মেনে নিতে দ্বিধা।

হায় রে বোকার দল। এই জাত টিকে আছে তবে কিসের ওপর ভিত্তি করে? আছে, মানুষ যেমন কাঁদায়, তেমনি হাসায়। বেঁচে থাকার গানে সুর তোলে। জীবনকে গতিময় করতে ছন্দে সাজায়। স্বপ্ন বুনতে শেখায়। কিছু মানুষের মহানুভবতা, মানবিকতা, সহমর্মিতা এই জগৎকে আলোকিত করেছে। অসহায় মানুষের সহায় হয়, আশার বাতি জ্বালায়। ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আগলে রাখে। সত্য মানব অন্যের মুখে এক টুকরা হাসির জন্য হাজারো ফুল ফোটায়। একে অন্যকে বাঁচাতে সহস্র ঝড় উপেক্ষা করে শান্তির বাণী নিয়ে আসে। মানুষ মানুষে যেমন কাঁদে আবার মানুষে বাঁচে, মানুষে হাসে।

বন্ধু, ভৈরব বন্ধুসভা