বাংলা বারো মাসের মধ্যে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ—এই দুই মাস মিলে হেমন্ত। হেমন্ত আসে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে। গ্রীষ্মের দুর্বোধ্য গরমের পরে তীব্র বৃষ্টি নিয়ে বর্ষা আসে। এরপর আকাশের কালো মেঘের ধূসরতা কাটিয়ে দিতে ধবধবে সাদা আর নীলাকাশে স্বচ্ছ হয়ে আসে শরৎ। এর কিছুদিন পরে বাংলার বুকে মাঠভরা পাকা ধানের সোনালি রং মেখে আর হালকা কুয়াশার ধূসরতায় শীতের হিমেল হাওয়ায় ভেসে হেমন্ত আসে।
হেমন্তের ভোরে সূর্যের কিরণ পড়লে শিশিরভেজা ঘাসের বুকে জমে থাকা বিন্দু যেন হীরার মতো চকচকে দেখায়। বেলা গড়ালে হালকা কুয়াশার ধূসরতা ভেদ করে আবার গরমের প্রখরতায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মাঠঘাট। তবে গরমের তীব্রতা কিছুটা কম থাকে। বিকেলের দিকে সূর্য হেলে পড়ে পশ্চিম দিগন্তে। রাতের আকাশ জোনাকি পোকার আলোতে আলোকিত হয়ে ওঠে চারদিক।
হেমন্ত ঋতুতে ফোটে গন্ধরাজ, মল্লিকা, শিউলি, কামিনী, হিমুঝুরি, দেবকাঞ্চন, রাজ–অশোক, ছাতিম, বকফুলসহ নানা ধরনের ফুল। ফুলের গন্ধে বাড়ির চারপাশ ম–ম করে। প্রজাপতি ও ফড়িং ওড়াউড়ি করে মনের আনন্দে। আবার হেমন্তকে বলা হয় পাতাঝরার দিন। এ সময়ে গাছের পুরোনো পাতা ঝরে পড়ে। এভাবেই প্রতিটা ঋতুতে পরিবর্তিত হয় আমাদের জীবন ও প্রকৃতি, ভিন্ন ভিন্ন রূপে। আবশ্যকতা দেখা দেয় আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ, সাজসজ্জা ও ত্বকের যত্ন পরিবর্তনের।
বন্ধু, কক্সবাজার বন্ধুসভা