কুসুম কথা কও

অলংকরণ: মাসুক হেলাল

কুসুম! তোমার বিরহ আমারে পুড়িয়ে মারছে। বিচ্ছেদের এত যন্ত্রণা আমি নিতে পারুম না, তোমারে বলি নাই? তুমি আমারে বাগানবাড়িতে ডাইকা নিলা। ভাবছিলাম, চৈত্রের দাবদাহে গাছের শেকড়ে বইসা মাথায় হাত বুলিয়ে দিবা। কিন্তু এত নিরিবিলি ডাইকা আমারে এইডা কি হুনাইলা, কথা কও!

আমি তো তোমার কোনো ক্ষতি করি নাই। তুমি ক্যান আমারে এত বড় দুঃখ দিলা? আমার ভেতরটা পুইড়া মরছে কুসুম। তোমারে পেয়ে গেলে হয়তো আমার হৃদয় একটু শান্ত হইত, শরীরের ব্যথার একটু উপশম হইত। তোমার জন্য কী না করছি কও? সবকিছুই ছাইড়া দিছি। আকাম-কুকাম কম তো করতম না। তুমি যহন ঘর বাঁধবেই না, তাইলে আমারে এত শুদ্ধ করার দরকার কী ছিল?

আমি তোমারে অভিশাপ দিমু না। লাল শাড়ি পইরা অন্যের ঘরে যাইতেছ যাও, গাড়িতে উঠার আগে একটাবার চাইয়া দেইখো, অনেক শখ করে লাল শাড়ি কিনছিলাম। তুমি পরবা, আমি চাইয়া দেখমু। আমার দুইডা চোখ থাকলেও কপাল তো নাই। কপাল থাকলে তুমি সারা জীবন আমারই থাকতা।

কুসুম, আমার একটা আবদার তুমি রাখবা? একটু রাইখো, চলেই তো যাবা! আর কখনো তোমার সামনে দাঁড়ায়ে আবদার করুম না। কথা দিলাম। প্রেমিকেরা কথা দিলে কথা রাখতে জানে! তোমারে খালি একটা নজর দেখমু। দূর থেইকেই দেখমু। কাছে যামু না, কাছে গেলেই মায়া বাড়ব। আর মায়া বাড়িয়েই কী লাভ? একটু দেইখাই আমি এই শহর ছাইড়া সোজা চইলা যামু। চোখে জল আসব? আসুক না। অন্যদিকে ফিরে মুইছা ফেলামু। আমার চোখের জলও তোমারে দেখতে দিমু না। জানো, কবি–সাহিত্যিকরা কয়, জলের একটা প্রভাব আছে। জল দেখলেই নাকি জল আসে। আসুক, তাতে আমার কী! আমি জল লুকাইয়া রাখমু। তুমি একটু পাখির মতো হাইসো। আমি ওই হাসিডারে জীবন ভাইবা চইলা যামু। আর কখনো ফিরে আইমু না, এই যে কথা দিলাম!