নীল চোখের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয় না, এমন মানুষ খুব কমই আছে। এ ধরনের চোখের মানুষ পৃথিবীতে খুবই কম। তবে এমন একটি আদিবাসী সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের অধিকাংশ মানুষের চোখ নীল। অনেকে এটিকে জেনেটিক্যাল মিরাকল বলে থাকেন। জন্মগতভাবেই এই চোখের অধিকারী হয় তারা।
ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি প্রদেশের ছোট্ট দ্বীপ বুটনে বসবাস করা মানুষেরা বুটন আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এদের অধিকাংশের চোখ নীল রঙের। তবে এই জাদুকরি চোখের পেছনে রয়েছে বংশগতি, শারীরিক জটিলতা এবং প্রতিকূল পরিবেশে বসবাস করার প্রভাব। নীল চোখ কেবল বংশগত বা উত্তরাধিকারের প্রতীক নয়, বরং একটি বিরল রোগের কারণেও এটি হয়ে থাকে যার প্রভাব চেহারার বাইরেও বিস্তৃত।
উজ্জ্বল চোখের অধিকারী এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা এমন একটি অঞ্চলের বাসিন্দা, যেখানে কালো রঙের চোখ থাকাটাই ‘কমন’। সেখানে ব্যতিক্রম বুটন আদিবাসী মানুষেরা। তাদের নীল চোখের কারণ হিসেবে রয়েছে ওয়ার্ডেনবার্গ সিনড্রোম নামে বিরল এক জেনেটিক রোগ।
ওয়ার্ডেনবার্গ সিন্ড্রোম উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া একটি বিরল রোগ। এটির কারণে চোখের রং নীল হয়। কখনো কখনো এক চোখ নীল ও এক চোখ বাদামি হয়ে থাকে। পাশাপাশি আরও অনেক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া, ত্বক ও চুলের রং পরিবর্তন এবং মাঝেমধ্যে শরীরে সাদা দাগ দেখা দিতে পারে।
বুটন আদিবাসীদের নীল চোখ, ভ্রূণের বিকাশের সময় ঘটে যাওয়া একটি রূপান্তরের ফলাফল, যা রঞ্জক পদার্থের জন্য দায়ী ত্বকের কোষ মেলানোসাইটকে প্রভাবিত করে। চোখ উজ্জ্বল হলেও ওয়ার্ডেনবার্গ সিনড্রোমের প্রভাব রং পরিবর্তনের বাইরেও পড়ে। এমনকি কানের ভেতর অস্বাভাবিকতার কারণে আক্রান্ত মানুষেরা আংশিক, কেউ কেউ পুরোপুরি শ্রবণশক্তি হারায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া