উপলব্ধি
এই যে রাতের শেষাংশের পূর্বে যারা জেগে থাকে
জীবনের রশির টানটুকু ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে;
বিচ্ছিন্ন কুকুরগুলো ডাকছে;
দৈবাৎ কুকুর বিড়ালের মুখোমুখি সংঘর্ষ;
ছিনতাইকারীর হাতে ধরা পড়ে নতশির অপারের; বাঁচার আকুতি।
ছুরির আঘাতে রক্তক্ষরণ।
দু–একটা টঙে আলো জ্বলে
পার্কের ঘাসে ঘাসে শিশির আসে প্রভাতি কিরণ পেতে। অদৃশ্য লোভ-লালসা।
অভাবের সংসার, রিকশার চাকা ঘুরে এদিক–সেদিক; ছগির চাচার।
এই রাত কাকে জমিদার বানায়
আর কাকে বানায় দেউলিয়া বোঝা দায়!
কোনো ঘরে রমণী স্বর্গবাসী
কোনো পরিত্যক্ত জায়গায় রমণী নরকবাসী;
দুনিয়ার হালচাল ছত্রভঙ্গ করেছে মাকড়সা।
বস্তা টেনে স্টেশনে ওম্ নেয় এক দল সৈন্য
কেউ জেগেছে আল্লাহর শপথে
কেউ মসজিদ-মন্দির-গির্জায়
এই রাত কাউকে সুপথে টানে আর কাউকে টেনে টেনে নিচে নামায়।
পচা মাংসের সন্ধানে নেমেছে শত শত কীট
ডাস্টবিন থেকে মাটি সবখানে
জীবনের নামে সন্তুষ্ট হতে পারেনি কেউ
তাই সাজিয়েছে সংগ্রাম, পানি কিংবা মুদ্রা নামে;
জীবনের অস্তিত্ব নেই।
দলে দলে পাচার হচ্ছে সীমান্তরক্ষীর অগোচরে
মানুষ, অর্থ, সম্পদ, জীবন
সীমান্তরক্ষী সব দেখে সংগোপনে।
সীমিত জীবন পরিধি খানিকটা চ্যাপটা বৃত্তাকার।
কেন্দ্রবিন্দুর কাঠি নড়ে গেলে উপচে পড়ে জোয়ার; সময় ডাকে ভাটা।
লাটাই ছাড়া ঘুড়ি উড়ে; বায়ুবেগ পেলে ঠিকানা মাটি। লক্ষ্মীর ঘট শূন্য হলে হবে শূন্য জীবন।
এই রাতের নাম কি হবে সেদিন?
অমাবস্যার রাত!
এক রাতের অপেক্ষা
শুধু একটা রাত
এই রাত শেষ হলে ডিজেলের ইঞ্জিন চলবে
পায়ে পায়ে মানুষ চলবে
রাতের কথা ভুলে যাবে
পাখির পাখার ঝাপটায় আকাশ ছুঁবে
সোডিয়ামের আলো শেষ হলে
রাতের টং বন্ধ হবে; শেষ সিগারেটের অজুহাতে
এই রাত শেষ করে ঘরে ফিরব।